কম নম্বরেও চাকরি! কুড়ি শিক্ষকের তথ্য জানতে চাইল হাই কোর্ট, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এসএসসির

স্কুলে নিয়োগ মামলায় রাজ্যের কুড়ি জন শিক্ষকের তথ্য জানতে চাইল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। গত শুক্রবার ওই শিক্ষকদের নাম এবং ঠিকানা-সহ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসএসসি জানিয়েছে, কী ভাবে কর্মশিক্ষা পদে শিক্ষকের চাকরি হয়েছে, দ্রুত তা তথ্য দিয়ে জানাতে হবে ওই শিক্ষকদের। প্রয়োজনে ইমেল করে তথ্য পাঠানোর কথাও জানিয়েছে তারা। আগামী ২১ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। তার মধ্যে ওই শিক্ষকদের তথ্য জোগাড় করে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা। ২০ জনের বিরুদ্ধে কম নম্বর পেয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

২০১৭ সালে উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষা এবং শারীরিকশিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা নেয় এসএসসি। ওই পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া স্বত্ত্বেও তাঁকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি। এই অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন আতিউর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি আদালতের সামনে ২৮ জনের তালিকা তুলে ধরেন। তাঁর অভিযোগ, কম নম্বর থাকা সত্ত্বেও এই ২৮ জনকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে। কিন্তু তাঁকে ডাকেনি এসএসসি। আতিউরের প্রাপ্ত নম্বর ৭৪। মেধাতালিকার শেষ প্রার্থী ৬৬ নম্বর পেয়েও ইন্টারভিউতে অংশ নিয়েছেন বলে তথ্য জানার অধিকার আইন (আরটিআই)-এ তিনি জানতে পেরেছেন বলে দাবি। গত বছর অগস্টে এই মামলায় মামলকারীর অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে এসএসসিকে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তার পরেও কোনও সমাধান সূত্র বার হয়নি বলে অভিযোগ মামলকারীর।

এই নিয়োগ প্রসঙ্গে এসএসসির যুক্তি, আতিউর যাঁদের নাম দিয়েছেন, তাঁরা সবাই কর্মরত ছিলেন। তাই তাঁদের কর্মরত বিভাগে ধরা হয়েছে। যদিও এই যুক্তি মানতে রাজি হননি মামলকারী। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীর থেকে এত কম নম্বর পেয়েও কী ভাবে ইন্টারভিউতে ডাক পেলেন। ওই প্রার্থীরা যে কর্মরত এ বিষয়ে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিয়ে হলফনামা দিতে হবে এসএসসিকে। একই সঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে আদালত নির্দেশ দেয়, এই প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়ে থাকলে তথ্য-সহ তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। তার পরই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই শিক্ষকদের তথ্য জানতে চাইল এসএসসি।

মামলকারীর দাবি, ওই ২৮ জনের মধ্যে ২০ জন ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র পেয়ে গিয়েছেন। তাঁরা এখন বিভিন্ন স্কুলে চাকরি করছেন। এখন ওই ২০ জনের উদ্দেশেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য জানতে চাইল এসএসসি। তাদের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। ওই জেলার ৯ জন শিক্ষকের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর পর নদিয়ার ৬, দুই ২৪ পরগনার ৪ জন এবং বীরভূমের ১ জনের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.