বিহার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি মানুষখেকো বাঘ! ইতিমধ্যেই বাঘের পেটে গিয়েছে একটি বারো বছরের বালিকা-সহ ৭ জন। প্রশাসন দক্ষ শিকারিদের নামিয়েছে। বাঘটিকে দেখামাত্র গুলি করে মারার নির্দেশ জারি হয়েছে।
বাঘটিকে কবজায় আনতে গঠন করা হয়েছে বনকর্মীদের একটি বিশেষ দল। সেই দলে আছেন নিশানায় দক্ষ শিকারি, পশু বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা গত ৬ দিন ধরে বাঘের সন্ধান করছেন। কিন্তু প্রতি বারই বনকর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে সে।
বাল্মিকী ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর কে নেশামানি জানিয়েছেন, বিহারের প্রধান মুখ্য বনপাল পিকে গুপ্তের নির্দেশ অনুযায়ী, বাঘটিকে দেখামাত্র গুলি করে মারার জন্য দল বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বাঘ মারতে প্রায় পাঁচশো জনের একটি বড় দল দুমরি গ্রামে পৌঁছে গিয়েছে। বাঘের গতিবিধি বুঝতে আকাশে উড়ছে ড্রোন।
এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত এক বন আধিকারিক জানিয়েছেন, বাঘটির বয়স সাড়ে তিন বছর। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে হত্যালীলা চালিয়ে যাচ্ছে বাঘটি। বিহার সরকার মানুষখেকোকে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ জারি করেছে।
গত শুক্রবার, রামনগর থানার দামরো গোবর্ধন গ্রামের আখ খেত থেকে পঁয়ত্রিশ বছরের সঞ্জয় মাহাতোকে টেনে নিয়ে যায় বাঘটি। গলায় আঁচড়ের দাগ এবং ঘাড় ভাঙা অবস্থায় সঞ্জয়কে পাওয়া যায় বেশ কিছুটা দূরে।
এই ঘটনার পরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে। বাঘ মারতে তাঁরা আন্দোলনে নামেন। বন দফতরের বিরোধিতা করে পথ অবরোধ করেন। এমনকি বনকর্তাদের নিগ্রহ করা হয় বলেও অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় বনবিভাগের একটি গাড়িও। বৃহস্পতিবার রাতে বাঘটি একটি বারো বছরের বালিকাকে মেরে ফেলে। জানা গিয়েছে, নিজের বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল বালিকা। ঘুমের মধ্যেই তাকে টেনে নিয়ে যায় বাঘ।
বনকর্তাদের দাবি, গত কুড়ি দিনে একাধিক বার বাঘটি বন দফতরের পাতা ফাঁদ এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
পশ্চিম চম্পারণ জেলার বাল্মীকি জাতীয় উদ্যানে অন্তত চল্লিশটি বাঘ আছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যেই একটি বাঘ লাগাতার মানুষের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে বনকর্তাদের বোকা বানিয়ে বার বার পালাচ্ছে মানুষখেকো বাঘটি, তাতে দুশ্চিন্তায় বহু মানুষ।