স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করেছে কে? কী হয়েছিল অসম-মিজোরাম সীমান্তে? জারি দোষারোপের পালা

সোমবার ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অসম-মিজোরাম সীমান্ত। এর জেরে অসমের পাঁচ পুলিশ কর্মী প্রাণ হারান। জখম হন ৫০ জনেরও বেশি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার একে অপরকে দোষারোপ করার পালা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, পুরোনো সীমানা বিবাদের জেরেই অসম-মিজোরাম সীমানায় সংঘর্ষ বাঁধে সোমবার বিকেলে। ঘটনাটি ঘটেছে দুই রাজ্যের সীমানা এলাকা লায়লাপুরে। এরপরই অসম সরকার অভিযোগ করেছে যে মিজোরামের তরফে সীমান্তের স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করা হয়েছে। মিজোরামের দিক থেকে গুলি চলে। মিজোরাম পুলিশের তরফে লাইট মেশিনগান চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেই গুলিতেই অসম পুলিশের পাঁচ কর্মীর মৃত্যু হয়।

সোমবার রাতে অসম সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংঘর্ষে স্থানীয় এবং পুলিশ কর্মী মিলিয়ে মোট ৫০ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিন সংঘর্ষের খবর পেতেই দ্রুত রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকে লায়লাপুর সীমানা পরিদর্শনের নির্দেশ দেন হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। এদিকে সরকারের তরফে বলা হয়, ‘সীমান্তের স্থিতাবস্থা বদলে করেছে মিজোরাম। ইনার লাইন সংরক্ষিত জঙ্গল সাফ করে সেখানে নতুন সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করেছে মিজোরাম। সিআরপিএফ-এর ক্যাম্পের পাশে সেই ক্যাম্প।’

অসমের দাবি, এই বিবাদ মেটাতে সেখানে পৌঁছেছিলেন অসমের প্রশাসনিক আধিরাকরা। তখন তাঁদের ঘিরে মিজোরামের মানুষরা বিক্ষোভ দেখান। পাথরও ছোঁড়া হয়। তাতে কাছার জেলার ডেপুটি কমিশনারের গাড়ির কাচ ভাঙে। এরপর দুই রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা পরিস্থিতি শান্ত করতে আলোচনা করছিলেন। সেই সময়ই গুলি চালানো হয় মিজোরাম পুলিশের তরফে। লাইট মেশিনগান চালানো হয় উঁচু দুটি পোস্ট থেকে। উল্লেখ্য, এর আগে মিজোরামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, অসম পুলিশের ২০০ কর্মী মিজো গ্রামে এসেছিলেন। সেখানে স্থানীয়দের গাড়ি, বাড়ি ভাঙতে শুরু করলে অশান্তি ছড়ায়। অসম পুলিশের তরফে নাকি কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং গ্রেনেড ছোঁড়া হয়।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা সংঘর্ষের ঘটনায় মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরমাথাঙ্গার হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। হেমন্ত বিশ্ব শর্মা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ট্যাগ করে একটি টুইট করেন। সেখানে লেখেন, ‘মিজোরামের কোলাসিবের এসপি অসমের চেকপোস্ট থেকে নিরাপত্তারক্ষী সরিয়ে নিতে বলছেন। কারণ তাঁদের সাধারণ বাসিন্দাদের সংঘর্ষ থেকে বিরত করা যাচ্ছে না। আমরা এরকম পরিস্থিতির মধ্যে সরকার চালাব কী করে?’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.