সিয়াচেনে তুষারধস নামার কারণে সেখানে আটকে পরেছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন জওয়ানরা। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানা গিয়েছিল প্রায় ১৯ হাজার ফুট উচুতে এই তুশারধস নামাতে আটকে পড়েছিলেন অনেক সেনারাই। আর এই কারণে মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় সেনার ৪ জওয়ান সহ ২ জন নাগরিকের।

তুষারধসে মারা যাওয়া সৈন্যদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং রেলওয়ে মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল। সিয়াচেনের নর্দার্ন গ্লেসিয়ারের উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৯ হাজার ফুট উপরে। যে কারনেই এই জায়গাতে তাপমাত্রা বরাবর কম থাকে। এছাড়া শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা নেমে যায় অস্বাভাবিকহারে। আর এই চূড়ান্ত ঠাণ্ডার মধ্যেও নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন ভারতীয় সেনারা। আর এই জায়গাতে সোমবার তুষারধস নামাতে আটকে পড়েছিলেন অনেকে। যদিও যুদ্ধকালীন তৎপরতাতে তাঁদের উদ্ধার করার কাজ শুরু হলেও বাঁচানো যায় নি এই ৬ জনকে।

টুইটারে রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনারা যেভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করে থাকেন তাতে তিনি গর্বিত। এই সকল জওয়ানদের মৃত্যুতে তিনিও গভীর ভাবে শোকাহত। তিনি মৃত জওয়ানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এছাড়াও রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন, সিয়াচেনের ঘটনাতে তিনিও গভীর ভাবে শোকাহত। যেভাবে ভারতীয় সেনারা বীরের মত দেশের সেবা করেন তাতে তিনি গর্বিত। মৃত সৈন্যদের পরিবারের প্রতি তিনিও সমবেদনা জানিয়েছেন।

সেনাদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, সোমবার আটজনের একটি দল ওই জায়গাতে ছিল পাহারা দেওয়ার জন্য। এখানে আচমকা তুষারধস নামে। যার ফলে সকলেই আটকে পড়েছিল। তারপরে খুব তাড়াতাড়ি উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছিল। দ্রুত উদ্ধার করে তাদের সেনা হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ৬ জন মারা যান। জানা গিয়েছে এই সকল সেনারা হাইপোথারমিয়াতে আক্রান্ত হয়েছিল। যে কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও চূড়ান্ত ঠাণ্ডাতে আটকে পরার জন্য সকলেই ফ্রস্ত বাইটে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কারাকোরাম রেঞ্জের সিয়াচেন গ্লেসিয়ারে সেনাদের শুধু শত্রুপক্ষের সঙ্গে নয় লড়তে হয় কঠিন আবহাওয়ার সঙ্গেও। চূড়ান্ত ঠাণ্ডার সঙ্গে তাঁদের লড়তে হয় হিমশীতল আভাওয়ার সঙ্গেও। ২০১৬ সালেও সিয়াচেনে তুষারধসে আটকে পড়েছিলেন ১০ জন সেনা জওয়ান। সকলেই মারা গেলেও উদ্ধার করা গিয়েছিল ল্যান্সনায়েক হনুমানথাপ্পাকে। যদিও তিনি পরবর্তীকালে হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন। এই ঘটনা ফিরিয়ে দিল সেই ঘটনার পুরনো স্মৃতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.