একদিকে লোকাল ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে নবান্ন। কিন্তু অন্যদিকে উপ নির্বাচনের দাবিতে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল। কেন এই দ্বিচারিতা? মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই প্রশ্ন তুলে সরব বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার নতুন কোভিড বিধি গাইডলাইন জারি করেছে। এই নতুন বিধি আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তাতে অনেক কিছুতেই ছাড় দেওয়া হলেও লোকাল ট্রেন চালানোর অনুমতি দেয়নি নবান্ন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী গতকালই বলেছেন, বাংলায় করোনা পরিস্থিতি এখন আয়ত্তের মধ্যে। তার কথায়, “ভবানীপুর কোথাও কোথাও দৈনিক সংক্রমণ একদম জিরো। ভোট করাতে কোনও অসুবিধা নেই।”
এরপরই শুভেন্দু অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। হুগলীর চুঁচুড়ায় বিজেপির একটি সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “লোকাল ট্রেন চালাতে পারছেন না আবার ভোট করাতে চাইছেন। লোকাল ট্রেন চলছে না কেন? তার মানে করোনা এখনো বিদ্যমান। তাহলে এই পরিস্থিতিতে ভোট কি করে হবে?” নন্দীগ্রামের বিধায়ক আরও বলেন, ভোটের জন্য উনি এত ব্যস্ত হচ্ছেন কেন? উত্তরাখণ্ডের যদি বিজেপি নন এমএলএ মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে এমএলএ মুখ্যমন্ত্রী করতে পারে, তাহলে উনি ২১২ জনের মধ্যে কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না?”
সুজন চক্রবর্তী বলেন, আমরা বামপন্থীরা সব সময় নির্দিষ্ট সময় নির্বাচনের পক্ষে। মুখ্যমন্ত্রী যখন কোভিডের জন্য লোকাল ট্রেন চালাতে অনুমতি দিচ্ছে না তখন ভোটের কথা বলছেন কিভাবে? তিনি বলেন, বাংলায় শতাধিক পৌরসভার ভোট বকেয়া পড়ে রয়েছে। সেই ভোট করানোর কোনও কথা উঠছে না কেন? গত বছর থেকে কলকাতা, শিলিগুড়ি কর্পোরেশন সহ রাজ্যের শতাধিক পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে। সব জায়গায় পুরো প্রশাসন প্রশাসক মন্ডল নিয়োগ করে সেগুলির কাজ পরিচালিত হচ্ছে। হাওড়া কর্পোরেশন এর মেয়াদ ফুরিয়ে ছিল ২০১৮ তে, তখন করোনা ছিল না। তাও ভোট করায়নি রাজ্য সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেছেন, “সংবিধান অনুযায়ী ছয় মাসের মধ্যে উপ-নির্বাচন করতে হবে। আমরা সেটাই চাইছি। আমরা তো অন্যায় কিছু চাইছি না। যারা বিরোধিতা করছে, তারা ভয় পাচ্ছে। কারণ ওরা বারবার ইলেকশনে হেরে যায়।”
এই উপনির্বাচনের ফলাফলের তৃণমূলের কাছে ক্ষমতা হারানোর ভয় না হলেও এর গুরুত্ব অন্যদিক থেকে অপরিসীম। এই উপনির্বাচনে মমতাকে ভোটে দাড়িয়ে জিতবে হবে। কারণ নন্দীগ্রামে ভোটে হেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও নন্দীগ্রামের গণনার মামলা এখন বিচারাধীন।
তৃণমূলের অনেকেই দাবি করছেন, বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে মমতার জিতে আসা আটকাতে চাইছে। সেই কারণেই এই সব জটিলতা তৈরি করছে।