আমপান : রাজনীতির নতুন অধ্যায় : অসীম দাশগুপ্ত ও মমতা ব্যানার্জীর প্রাকৃতিক বিপর্যয় নীতিতে আবার বিপদে পশ্চিমবঙ্গ – কৌটিল্যের অর্থ অনর্থ

 বন্যা নিয়ন্ত্রনের স্থায়ী সমাধান MIT ফেরত ডঃ অসীম দাশগুপ্ত কোন দিন চাননি, কারণ স্থায়ী সমাধান না করে সমস্যা বাঁচিয়ে রাখলে দুটি লাভ :  1. ত্রাণ বেটে ভোট পাওয়া 2. ত্রাণের কাটমানি বা আনকাট মানি হজম  আরও একটি কারন হল, দপ্তরটা  RSP র l এতে সিপিম এর কোন লাভ নেই l
আমরা আসব সরাসরি আইলা প্রকল্পের ইতিহাসে l কারণ আইলা ও আমপান দুটিরই স্থান এক l একই বিপর্যয় l আইলার পর 2008 পঞ্চায়েত ভোটে দক্ষিণ 24 পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে গোহারা হারে  সিপিম l বিরুদ্ধে নিচুতলায় সেই বার তৃণমূলকে সাহায্য করে কংগ্রেস l কারণ সবার লক্ষ ছিল বামপন্থীদের অত্যাচার থেকে রাজ্যকে মুক্ত করা l হারার পর তৎকালীন সেচ মন্ত্রী তথা RSP নেতা সুভাষ নস্কর দিল্লিতে ছোটাছুটি করে কেন্দ্র থেকে  AIBP ফান্ড থেকে 5000 কোটির বেশী টাকা অনুমোদন করান 2009 এ  ( যা আজকের মূল্যায়নে প্রায় প্রায় 20000 কোটি ) l কথা ছিল অজয় রূপনারায়ণ এর মত বাধ দেয়া হবে যাতে পুনরায় এধরণের সাইক্লোন এলে কোন অসুবিধা না হয় l আমেরিকান পরামার্শদাতা সংস্থা জেকব কর্পোরেশনের একটা ভারতীয় সাবসিডিয়ারিকে  ডিসাইন ও প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়, আন্তর্জাতিক মানের একটা স্থায়ী সমাধানের রূপরেখা বানানোর জন্য l কিন্তু এই মধ্যে টাটা রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে সুভাষবাবুর পক্ষে জমি অধিগ্রহণ অসম্ভব হয়ে পরে l তৃণমূলের জেলাপরিষদ প্রতি পদে কাজে বাধা দিতে থাকে l 2011 তে মমতা ব্যানার্জী ক্ষমতায় এলে বলেন, জমি অধিগ্রহণ বন্ধ l   ভোটের আগে উনি বলেছিলেন, জমি নিলে সেই বাড়ির একজনকে চাকরি দেয়া হবে l গ্রামবাসীরা ওনার আধিকারিকরা যখন জমি নিতে গেল, চাকরি চেয়ে বসল l ফলে 20% জায়গাতেও জমি পাওয়া গেল না l 

https://wbiwd.gov.in/index.php/applications/aila

এখানে উল্লেখযোগ্য, বাধ যদি 100% দৈর্ঘ্যে না দেয়া হয়, তবে তার কোন কাজ হয় না l 99.99% হলেও হবে না l ওই বাকি 0.01% জায়গা দিয়ে জল ঢুকে সব লন্ডভন্ড করে চলে যাবে l এখানে 75% জায়গায় জমি পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই ছিল না l সেক্ষেত্রে প্রথম দিনই কাজ বন্ধ করে দেয়া উচিৎ ছিল l অথচ গত দশবছরে 1300 কোটি করদাতার  পয়সা জলে দেয়া কেন? সম্ভবত  সবই ভেঙে গেছে এবারের আমপানের বিপর্যয়ে l লাভ হল কিছু ঠিকাদার ও সরকারি আধিকারিকের l কিন্তু কোন স্থায়ী সম্পদ পেল কি রাজ্যবাসী?  


রাজ্যের জমি নীতির জন্য বিভিন্ন মেট্রো রেল, জাতীয় সড়ক, রেল, সেতু, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, রেল পানীয় জলের প্রকল্প এই ভাবে অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে  আছে গত নয় বছর l করদাতার হাজার হাজার কোটি খরচ হয়েছে l একদল ঠিকাদার, রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী বড় লোক হয়েছে l কিন্তু মানুষ কি পেল? কোন ব্যক্তি যদি  সারাজীবনের সঞ্চয়ের পয়সায় স্বপ্নের  বাড়িতে ভিত, পিলার, বিম, দেয়াল দিয়ে ছাদ করতে ব্যর্থ হয়, তাতে কোন লাভ হবে? কেমন লাগবে সেই ব্যক্তির ওই অর্ধসমাপ্ত বাড়ি দেখে? 
মুখ্যমন্ত্রী আবার তার হিসেব পেশ করেছেন l বিপর্যয় মোকাবিলায় টাকা তো দিতেই হবে l তাকে আমাদের বিনীত প্রশ্ন, আপনার ভুলনীতির জন্য রাজ্যের দরিদ্রতম মানুষকে কেন শাস্তি পেতে হচ্ছে? এই দক্ষিণ 24 পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর তো আপনাকে ক্ষমতায় এনেছিল, সিঙ্গুরের মতোই l তাহলে এদের সবাই আজও  প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি পেল না কেন? এদের তো আপনি আয়ুষ্মান প্রকল্প পেতে দেননি l আপনার স্বাস্থ্যসাথী এরা পেয়েছিল? আজ এদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেবেন তো আপনি? এদের তো কৃষি যোজনার খাতা খুলতে দেননি l এদের নষ্ট ফসল বীমার টাকা আপনি দেবেন তো? কেন আপনি আবার টাকা চাইছেন? আপনি ঠিক সময় ঠিক কাজ করলে তো আজ কেউ বিপদেই পড়তো না l 2000 সালে অসীম দাশগুপ্ত নাকি বন্যার জল ছেড়ে পরে ত্রাণ বিলি করে ক্ষমতায় এসেছিল l আপনিই বলেছেন l মানুষ আপনাকে ক্ষমতায় এনেছে l যেই সিঙ্গুর, দক্ষিণ 24 পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর আপনাকে স্বর্গের সোপান দেখাল, আপনি স্বর্গে উঠে তাঁদের সোপানই কেড়ে নিলেন? এরপর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি গরিব মানুষের ভরসা থাকবে? 

কৌটিল্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.