ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জায়গা। নেমেছে ধস। ভেঙেছে রাস্তা। জলে জেরবার হয়ে গিয়েছে জনজীবন। ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। দুর্যোগের পর কেটে গিয়েছে কয়েকটি দিন। একটু একটু করে নামতে শুরু করে দিয়েছে জল। তারই মধ্যে ফুটে উঠল বাস্তব চিত্র। যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ একমাত্র কাঠের সেতুর হাল হয়ে গিয়েছে বেহাল।
ঘটনাস্থান পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত ঘোষাকিরা গ্রাম। ওই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। তার উপর দিয়ে ছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৈরি করা কাঠের সেতু। নদীর জলে ডুবেছিল সেতুটি।
জানা গিয়েছে, এরপর গতকাল রাত থেকে নদীর জল কমতে শুরু করে। আর জল কমতেই দেখা দিয়েছে ওই কাঠের সেতু। নদীর জলের তোড়ে কাঠের সেতুতে জড়িয়ে গাছের গুড়ি থেকে পানা। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা এত ভার সহ্য করতে না পেরে ভেঙে পড়তে পারে ওই কাঠের সেতুটি।
ইতিমধ্যে সেতুর বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পুর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত যাতে না হয় তার জন্য সকাল থেকে গ্রামের মানুষ সেতুতে আটকে থাকা পানা ও গাছের গুড়ি সরানোর কাজে হাত লাগিয়েছে। এখনও বন্ধ রয়েছে যোগাযোগ। সেতুটি সম্পুর্ণ ভেঙে পড়লে দীর্ঘদিন যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই এদিন ঝুঁকি নিয়ে সেতুর পানা ও আবর্জনা সরানোয় হাত লাগিয়েছে এলাকাবাসী।
ইতিমধ্যে চন্দ্রকোণার শিলাবতী নদী লাগোয়া ভগবন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামে নদী পাড়ে দেখা দিয়েছে ধস। মনে করা হচ্ছে এই ধসের জেরে নদীতে তলিয়ে যেতে পারে নদী লাগোয়া বাড়িগুলি। জলস্তর কমতে শুরু করতেই নদী বাঁধের ধস ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
এমনকী ঘাটালের ঝুমি নদী তীরবর্তী এলাকায় মনসুকা এলাকাতেও পিচের রাস্তাতে দেখা দিয়েছে ধস। রাস্তা দিয়ে প্রবল বেগে বইছে ঝুমির জল। দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা রাস্তা, কোনটা নদী! রাস্তার নিচে থাকা পানীয় জলের পাইপ লাইনও ভেঙে গিয়েছে।
চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিলাবতী নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ভয়, প্লাবনে সবকিছু তো ভাসিয়েছেই। এবার মাথার ছাদটুকুও না ভেঙে পড়ে। এলাকার মানুষ বলছেন, নদীর জল যখন বাড়ছিল তখন ধসের ফলে রাতের ঘুম উড়েছিল। রাত পাহারা দিতে হয়েছে। কিন্তু জল কমলেও পিছু ছাড়ছে না সেই ভয়।
মাটি আলগা হতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী রাস্তায়। এর মধ্যে আবার যদি ডিভিসি থেকে জল ছাড়ে, শিলাবতী নদীর জলস্তর বাড়ে, তাহলে আর রক্ষা নেই। এই শিলাবতী নদীর বাঁধ ভাঙলে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হবে বলে এলাকাবাসীর ভয়।