যাদবপুরে টাকার বিনিময়ে ভরতি করিয়ে দেওয়ার চক্র, তৃণমূলের ব্যাজ লাগানো গাড়িতে আটক দুই বহিরাগত।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে টাকার বিনিময়ে ভরতি করানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকেই আটক দুই বহিরাগত। আটক দুই যুবকের নাম সুরজ মুখোপাধ্যায় এবং সৌভিক মণ্ডল। দুজনেই হাওড়ার বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেটের বাইরে এই দুই জনকে গাড়িতে বসে ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এক ছাত্রকে ভরতি করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলছিল তারা। সেই সময়েই আশেপাশের কিছু ছাত্র ছাত্রী বিষয়টি শুনে ফেলেন এবং গোটা বিষয়টি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়রদের। তারাই হাতে নাতে পাকড়াও করে ওই দুই বহিরাগতকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগের ছাত্র সংগঠন ফেটসুর কয়েকজন সদস্য, ওই দুই যুবক কী উদ্দেশ্যে ঘোরাফেরা করছিল তা যাচাই করার জন্য তাদের সঙ্গে পরিচয় গোপন করে ভরতি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে যান। জানা গিয়েছে, ওই দুই যুবক তাদের ভরতি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। প্রথমে টাকার কথা কিছু না বললেও, পরে গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এরপরেই পড়ুয়ারা ওই দুই বহিরাগত যুবককে সহ উপাচার্যের কাছে নিয়ে যায়।

প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, টাকা নিয়ে ভরতি করিয়ে দেবে, এমন দাবি করে ওই এলাকায় ঘুরছিল  দুই যুবক। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়েরই পিএইচডির দুই পড়ুয়াকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করেছে ফেটসু। ওই দুই পিএইচডি পড়ুয়া  টিএমসিপির সক্রিয় সদস্য বলে পরিচিত। ওই দুই স্কলার ছাত্রের নাম মিঠুন মজুমদার ও বিশ্বজিৎ দাস। মিঠুন পররাষ্ট্র সম্পর্কে পিএইচডি করছেন এবং  বিশ্বজিৎ দর্শনে পিএইচডি করছেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত। যদিও ওই দুই পিএইচডি পড়ুয়াকে তাদের দলের সদস্য হিসেবে মানতে নারাজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।

এদিকে ওই দুই পিএইচডি পড়ুয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান চালাবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য। পাকড়াও দুই বহিরাগত যে গাড়িতে করে এসেছিল, সেখানে তৃণমূলের একটি ব্যাজ দেখা গিয়েছে। কেন তাদের গাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সহ ওই ব্যাজ ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে বিষয়টি থেকে গা ঝেড়ে ফেলতে চাইছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ওই দুই পিএইচডি পড়ুয়া, তাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে জানিয়েছে টিএমসিপি। একইসঙ্গে গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। তদন্ত করার জন্য যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে।

ওই দুই বহিরাগত যুবককে ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে ওই দুই যুবককে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই গোটা ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তারপরেই পুলিশ এসে ওই দুই বহিরাগত যুবককে নিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.