করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে প্রচুর মানুষের জমায়েত চলছিল মল্লিকপুরের (Mallikpur) গনিমা ভাঙ্গাবাড়ি এলাকায় (Ghanima Vangabari area)। পাশাপাশি চলছিল বেআইনি বাড়ি নির্মাণ। মানুষদের সচেতন করার পাশাপাশি এরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বারুইপুর (Baruipur) ব্লকের বিডিও (BDO) মোশারফ হোসেন (Musharraf Hossain), যুগ্ম বিডিও সায়ন্তন ভট্টাচার্য (Sayantan Bhattacharya) সহ ৫-৬ জনের এক প্রতিনিধি দল। অভিযোগ, তাদের ওপর হামলা চালায় ৫০-৬০ জনের একটি দল। কাঠ, বাঁশের লাঠি দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে মারধর করা হয় তাদের। যুগ্ম বিডিও-কে টেনে নিয়ে গিয়ে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তাঁর পায়েও গুরতর চোট লাগে। বিডিওকে বাঁচাতে গিয়ে মাথা ফাটে অফিসের কর্মী সন্তোষ পালের (Santos Pal)। বিডিও অফিসের ইঞ্জিনিয়র গৌতম পালের (Gautam Pal) দামি মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁকেও মাটিতে ফেলে ব্যাপক মারধর করা হয়। আঘাত করা হয় বিডিও-কেও। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এর জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কোনওরকমে ফাঁক গলে বারুইপুর থানার আইসি-কে ফোন করা হলে তিনি দ্রুততার সঙ্গে গাড়ি পাঠিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বিডিও অফিসের কর্মী সন্তোষ পালের মাথার সিটি স্ক্যান করা হয়।
ঘটনার কথা জানিয়ে বারুইপুর থানায় রাতেই অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও। এরপরেই বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খানের (Rashid Munir Khan) কড়া নির্দেশে রাতভর এলাকাতে গিয়ে তল্লাশি চালায় বারুইপুর (Baruipur) এসডিপিও অভিষেক মজুমদার ও আইসি দেবকুমার রায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনি। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম শাহআলম খান (Shahalam Khan) ও ইমরান আলি মণ্ডল (Imran Ali Mandal)। বারুইপুর (Baruipur) পশ্চিমের বিধায়ক তথা অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার কড়া নিন্দা করে পুলিশ সুপারকে সবরকম ব্যাবস্থা নিতে বলেন।
এদিকে, মল্লিকপুরের (Mallikpur) তৃণমূল কংগ্রেসের এক অন্যতম নেতার মদতে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরই মদতপুষ্ট লোকজনই এই হামলার পেছনে আছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও এই ব্যাপারে বিধায়ক বিমানবাবু বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তবে আইন আইন অনুযায়ী চলবে। প্রসঙ্গত, বারুইপুর ব্লকের বিডিও, যুগ্ম বিডিও বারুইপুরের সব এলাকাতেই গিয়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে প্রচার চালাচ্ছিলেন। বুধবারও মল্লিকপুরে (Mallikpur) গনিমায় গিয়ে প্রচুর মানুষের জমায়েতের ব্যাপারে মানুষকে বুঝিয়ে এসেছিলেন। এরপরে বৃহস্পতিবার বিকালে এই এলাকা থেকে প্রশাসনের কাছে খবর যায় চায়ের দোকান খোলা রাখা হয়েছে। প্রচুর মানুষের জমায়েত হচ্ছে। পাশাপাশি এই বেআইনি বাড়ি নির্মাণেও প্রচুর লোকজন জড়ো হয়েছে। এই খবর আসা মাত্রই বিডিও, যুগ্ম বিডিও এর নেতৃত্বে ৬ জনের দল এলাকায় যায়। বেআইনি বাড়ি নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়। একইসঙ্গে চায়ের দোকান বন্ধ করে দিয়ে জমায়েত সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয় মাইকের মাধ্যমে। এরপর এক জায়গায় বিশ্রামের সময় তাদের পর ঝাঁপিয়ে পড়ে ৫০-৬০ জনের ওই দলটি ।
https://bartamanpatrika.com/detailNews.php?cID=12&nID=220783&P=1