নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এর আগেও কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার দোলযাত্রার দিন যেন তাতে নতুন মাত্রা দিলেন বিজেপির এই নবাগত নেতা।
এদিন সাগরে জনসভায় শুভেন্দু বলেন, “গত দশ বছরে মাননীয়া আপনাদের অনেক দিয়েছেন। কী দিয়েছেন শুনবেন! বাংলায় ২ কোটি বেকার তৈরি করেছেন। সাড়ে পাঁচ লক্ষ সরকারি স্থায়ী পদ ছিল। সেগুলো বিলোপ করে দিয়েছেন। ৮ লক্ষ ছেলেমেয়ে বিএড পাশ করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাড়ে তিন লক্ষ বেসিক ট্রেনিং পাওয়া ছেলেমেয়ের কাজ নেই। সাত বছর ধরে স্কুল সার্ভিসের পরীক্ষা পর্যন্ত হয়নি। আর মাননীয়া বলছেন, চাকরি দিয়েছি। প্রাণী মিত্রর চাকরি মাসে দেড় হাজার টাকা। আর সিভিক ভলানটিয়ার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানে চাকরি ভোকাট্টা।”
শুভেন্দু আরও বলেন, “আর কী দিয়েছেন মাননীয়া! বামেরা যখন সরকার থেকে যায় তখন সরকারের উপর ঋণের বোঝা ছিল ২ লক্ষ কোটি টাকা। মাননীয়া সেই বোঝা বাড়িয়ে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা করেছেন। কেন্দ্রের প্রকল্পের নাম বদলে সেখান থেকেও কাটমানি নিয়েছেন। এই এখানকার বঙ্কিমবাবুরা কাটমানি নিয়েছেন, তাঁর বৌমারা নিয়েছেন, তাঁর জামাইরা নিয়েছেন।”
বাংলায় ভোটে বহু জায়গায় তৃণমূল ক্ষমতায় এলে খাদ্যসাথী বন্ধ হয়ে যাবে। তার জবাবে শুভেন্দু এদিন বলেন, ২ টাকা কেজি চাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেন না। এক কেজি চালের দাম ৩২ টাকা। কেন্দ্র দেয় ২৯ টাকা। আপনারা দেন ২ টাকা। আর রাজ্য দেয় ১ টাকা।
রবিবার দোলের দিনই নন্দীগ্রামে পৌঁছে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেয়াপাড়ায় দোল উৎসবে অংশ নিয়েছেন। তার পর সভা করেছেন বিরুলিয়া বাজারে। ঠিক যেখানে তাঁর পায়ে চোট লেগেছিল।
মমতা যখন নন্দীগ্রামে, তখন রবিবার সারাদিন পাথরপ্রতিমা, সাগরে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন শুভেন্দু। পরে সন্ধ্যায় খড়্গপুরেও সভা করেছেন বিজেপি নেতা। দুপুর রোদে এদিন পাথরপ্রতিমায় প্রায় বাইশ কিলোমিটার রোড শো করেছেন শুভেন্দু। তার পর বিকেলে সাগরে দলীয় প্রার্থী বিকাশ কামিলার সমর্থনে সভা করেছেন সাগরে।
সাগরের সভায় শুভেন্দু আরও বলেন, “এখানকার মানুষের সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তা রয়েছে। এপার আর ওপার। আমরা হলাম আপনাদের কুটুম। ওপারে আমি বেগমকে হারাবই। যত নাটকবাজি করুন না কেন, পা ভাঙা হাত ভাঙা মাথা ভাঙা, কোনও নাটক কাজে লাগবে না।”
তবে প্রচারের এ সব কথার বাইরে বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রে আর একটি বিষয় রয়েছে। তা হল, শুভেন্দুকে মেদিনীপুরের বাইরে আরও বেশি করে ব্যবহার করা শুরু করল বিজেপি। তাঁর প্রচারের সুবিধার জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও করেছে দল।