বাড়ি থেকে টেনে এনে বিজেপি কর্মীর উপর ‘হামলা’, ‘বোমাবাজি’, উত্তপ্ত সিতাই।

ফের আক্রান্ত বিজেপি কর্মী।  সিতাইতে বিজেপি কর্মীর উপর হামলা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন আবহেও বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এই বিধানসভা কেন্দ্র। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জেরে সম্প্রতি এখানে তদন্তও করে গিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারপরেও ফের শাসক-বিরোধী সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল দিনহাটা আদাবাড়ি ঘাট এলাকায়।

আক্রান্ত বিজেপি কর্মী সুকুমার দাসের অভিযোগ, প্রায় ২০-২৫ জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী আচমকা তাঁর উপর হামলা চালায়। ওই কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। মারধর হামলার জেরে সুকুমারবাবু গুরুতর জখম হন। তাঁর মাথা ফেটে যায়। ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য় হয়ে পড়ে যান তিনি। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর কথায়, “আমার বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকালে হামলা চালানো হয়। আমাকে লাঠি বল্লম নিয়ে মারধর করে। পরিবারের লোক বাধা দিতে এলে বাড়িতে বোমাবাজি করে। যখন আমার জ্ঞান ফেরে দেখি হাসপাতালে শুয়ে রয়েছি। ”

স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, সুকুমার দলের সক্রিয় কর্মী। সেইজন্যেই সুকুমারের উপর হামলা চালানো হয়েছে। তাঁকে প্রথমে জোর করে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে যায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। লাঠি-রড-বল্লম দিয়ে মারধোর করে। পরে পরিবারের উপরেও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। হামলার ঘটনায়, দুলাল মিঞা, আলম মিঞা, মিজানুর রহমান-সহ একাধিক তৃণমূল নেতার নাম উঠে এসেছে। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গে যে আইনের শাসন নেই তাও দাবি করেছেন  স্থানীয় বিজেপি নেতা। প্রথমে জখম বিজেপি নেতাকে সিতাই হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

যদিও, হামলার ঘটনার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক শিবির। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কোথায় কার উপর হামলা করা হয়েছে কেন করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। এমনকী, বিজেপি কর্মীকে হামলার ঘটনাটি সম্পূর্ণ তাদের দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল বলেই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। ইতিমধ্যেই সিতাই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। যদিও, এই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

তবে এই প্রথম নয়, বিভিন্ন সময়েই রাজনৈতিক সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে  সিতাই। বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর, অনিল বর্মণ নামে এক বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য় ছড়ায় সিতাই এলাকায়। বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরেই অনিল বর্মনের বাড়ি ভাঙচুর করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এমনই অভিযোগ উঠেছিল। তার পর দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ি ছাড়া ছিলেন অনিল বর্মন। পরে বাড়ি ফেরেন। ফের, দিনহাটায় উপনির্বাচনের আগে সিতাইতে বিজেপি কর্মীকে হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.