বাংলা জুড়ে বিজেপির সুনামি। এক ধাক্কায় রাজ্যে বিজেপির সাংসদ বেড়ে ২ থেকে ১৮। শুধু লোকসভা কেন্দ্রেই নয়, তৃণমূলের জেতা একাধিক বিধানসভা আসনেও ‘লিড’ করছে বিজেপি। এই অবস্থায় কোনঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস। গত ২০১৪ সালে গোটা দেশে যখন মোদী ঝড় বয়েছিল সেই সময়ে বাংলাতে মাত্র দুটি আসন পেয়েই খুশি থাকতে হয় বিজেপিকে। কিন্তু পাঁচ বছরে এমন কি ঘটল যে এক ধাক্কায় বিজেপির আসন বেড়ে দুই থেকে ১৮! এমন প্রশ্ন ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরেও। আর সেখানেই গুঞ্জন এটা কি মুকুল এফেক্ট…!!!
এবার বাংলাকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করার স্বপ্ন দেখছে বিজেপি শিবির। আর সেজন্যে এবার ১৭ বার বাংলায় প্রচারে এসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুদু তাই নয়, বাংলায় দফায় দফায় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে এসেছেন রাজনাথ সিং, যোগী আদিত্যনাথ সহ একাধিক বিজেপি নেতা-মন্ত্রী। কিন্তু শুধু হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীদের এনেই এক ধাক্কায় বাংলায় ৪০ শতাংশ ভোট পাওয়া সম্ভব? প্রশ্ন তৃণমূলেরই বহু নেতাকর্মীর। ফলে অনেকেই বাংলায় এই বিজেপির ফলাফলের পিছনে মুকুল-এফেক্টকেই দায়ী করছেন।
শুধু তৃণমূলই নয়, বিজেপির এই ফলাফলের পিছনে যে মুকুল রায়ের একটা বড় হাত রয়েছে তা এককথায় মেনে নিয়েছেন বহু বিজেপি নেতা-কর্মীই। বিজেপির একাংশের মতে, এখনও সেই অর্থে বাংলার বহু জায়গাতেই বিজেপির সেই অর্থে সংগঠন গড়ে ওঠেনি। এরপর যেভাবে একের পর এক কেন্দ্রে নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে তাতে তৃণমূলের উচ্ছ্বাস চোখে পড়েছিল। আর যা দেখে যথেষ্ট অস্বস্তি বেড়েছিল বিজেপি শিবিরে। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে ২ থেকে এক ধাক্কায় ১৮টা আসন বাংলায় বাড়িয়ে শাসকসহ অন্যান্যদের কার্যত ধুয়ে দিয়েছে বিজেপি। আর এর পিছনে মুকুলেরই হাত রয়েছে বলে মত বিজেপির একাংশের।
অন্যদিকে বিজেপির অপর অংশের মতে, বাংলায় প্রত্যেক দফার আগে ভোট প্রচারে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রচারের ফাঁকেই মুকুল রায়ের সঙ্গে মোদীকে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। এমনকি বারবার পীঠ চাপড়াতেও দেখা গিয়েছে। তা দেখে অনেকের দাবি, বাংলার ভোটে প্রত্যেক মুহূর্তের আপডেট মোদীকে দিয়েছেন মুকুল রায়। আর তা শুনে বারবার মোদী মুকুল রায়কে সাবাসী দিয়েছেন। কিন্তু শুধুই কি সাবাসি দেওয়া। এবার পুরস্কৃত করারও পালা।
সূত্র বলছে, সম্ভবত মুকুল রায়কে কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রী করতে পারে বিজেপি। সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সভায় তৃণমূলের প্রাক্তন ‘চাণক্য’কে নিয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ কোনও মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কারণ দ্বিতীয় বারের জন্যে ক্ষমতায় বসার আগে নতুন করে ক্যাবিনেট সাজাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেখানেই গুরু দায়িত্ব মুকুলকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।