মঙ্গলবার কাঁকসার বিরুডিহায় মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Paja) রাজ্যের ২৭৪৯০ টি শিশু আলয়ের উব্দোধন করতে চলেছেন । মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী মলয় ঘটক , পশ্চিম বর্ধমানের (West Burdwan) জেলা পরিষদের জেলাধিসভাধিপতি সহ একাধিক পদস্থ আধিকারিকরা । ২০১৫ সাল রাজ্যে ১০০০টিশিশু আলয় হয় । ২০১৬ সালে ১৪০৪ এবং পরের বছর ১০,০০০ টি শিশু আলয় উব্দোধন হয় । ২০১৮ সালে ১৪০০০ অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র শিশু আলয়ে রূপান্তরিত হয় । যখন নতুন শিশু আলয় নিয়ে প্রস্তুতি ও উত্তেজনা তুঙ্গে , তার মাঝেই কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা বেহাল। কাঁকসা থানার আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতর শোকনা গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা বিপজ্জনক। ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা সোমবার বিক্ষোভ দেখান ।
ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেন্দ্রের অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা সহ কর্মীরাও। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘরটি অর্ধেকে ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখানেই খুদে পড়ুয়াদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পঠনপাঠন। অভিভাবকরা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শিশুদের কেন্দ্রে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। অভিযোগ, প্রশাসন’কে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় আরও দুটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিস্থিতিও বিপজ্জনক বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে । বিক্ষোভকারী অভিভাবক বনানী বাউরি, প্রশান্ত বাউরি,ভৈরব বাউরি বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ঘরটির দেওয়ালে বড় বড় ফাটল হয়ে দেওয়াল বেঁকে গিয়েছে। টিনের চালের কাঠামো ভেঙে ঝুলে পড়েছে। মেঝে বলে কিছুই নেই।
সেই বিপদজনক ঘরের ভেতর দীর্ঘদিন ধরে খুদে শিশুদের নিয়ে চলছে পঠনপাঠন।কেন্দ্রের সহায়িকা ও কর্মীরা বিপদের ঝুঁকি সহ্য করতে না পেরে ঘরের বাইরে খোলা আকাশের নিচে শিশুদের নিয়ে পঠনপাঠন করাচ্ছেন। কিন্তু শীতকালে পঠনপাঠন খোলা আকাশের নিচে সম্ভব হলেও এই গরমে ও বর্ষাকালে খোলা জায়গায় পঠনপাঠন সম্ভব নয়। অনেক অভিভাবকরা শিশুদের বিপদের আশঙ্কায় কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে না। তাঁদের দাবি অবিলম্বে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দিতে হবে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা দীপা আকুঁড়ে ও কর্মী মাধবীলতা রায় বলেন, এই কেন্দ্রে পড়ুয়া, গর্ভবতী ও প্রসূতী মহিলা নিয়ে মোট কমবেশি ৫০ জনের খিচুড়ি রান্না করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই বিপদজনক ঘরে শিশুদের নিয়ে পঠনপাঠন করাচ্ছেন। ঘর ভেঙে পড়ায় পঞ্চায়েত প্রধান’কে জানানো হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় কিছুদিন তাঁরা এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় পঠনপাঠন করাচ্ছিলেন পঞ্চায়েতের নির্দেশ মত। সেখানে কিছু অসুবিধার কারণে তাঁদের ফের এই ভাঙা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ।
শীতকালে বিপদের ঝুঁকি থাকায় কেন্দ্রের বাইরে পঠনপাঠন করা হচ্ছিল।কিন্তু গ্রীষ্মের শুরুতে রোদ থেকে বাঁচতে সেই ভাঙাঘরে ঢুকতে হচ্ছে। অভিভাবকরা দুর্ঘটনার আতঙ্কে শিশুদের আর স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। অভিভাবকরা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। শিশুদের কিছু হলে কর্তৃপক্ষকেই দোষী করবেন গ্রামবাসীরা বলে মত ওই শিক্ষকের। আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরাও । এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান চয়নিকা পাল বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কাঁকসার বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ব্লকের বেশকিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর বেহাল রয়েছে। মোট ৪৫ টি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জেলাপরিষদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই নির্মাণ শুরু করা হবে।এই বিষয়ে এলাকার সিডিপিও (CDPO) নূপুর বিশ্বাস’কে ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি ।