একই দিনে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই তালিকা ধরে কোভিডের ভ্যাকসিন (COVID Vaccine) দেওয়া শুরু করবে পুরসভা। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশের সঙ্গে শহরের সাফাইকর্মীদের মতো প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধাদের টিকাকরণের প্রথম তালিকায় রাখা হয়েছে। এর পর নবান্নের গাইড লাইন মেনে ওয়ার্ডে ৫০ ঊর্ধ্ব, কো-মর্বিডিটি আছে এমন প্রবীণ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের করোনার টিকা দেবে পুরসভা। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চিকিৎসা নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা (KMC)।
কেন্দ্রীয় সরকারের টিকাকরণ শুরুর দিন ঘোষণার পর মঙ্গলবারই ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে পুরভবনে দীর্ঘ বৈঠক করেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওয়ার্ডভিত্তিক কোভিডের ‘ফ্রন্টলাইনার’ ও কো-মর্বিডিটিযুক্ত ব্যক্তির তালিকা দফায় দফায় স্বাস্থ্যদপ্তরে জমা দেবে। এবং কেন্দ্রীয় সরকারের টিকাকরণ অ্যাপের সঙ্গে সমন্বয় করেই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে। তবে টিকা দেওয়ার পর যদি কারও কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects) হয় তবে তাদের পুরসভাই হাসপাতালে ভরতি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।
কলকাতায় দ্রুত কোভিডের টিকাকরণ নিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এদিন জানিয়েছেন, “মহানগরের প্রতিটি পাড়ায় টিকাকরণের নেটওয়ার্ক প্রস্তুত। এমনকী, ওয়ার্ডভিত্তিক কোল্ড স্টোরেজ চেন রয়েছে। প্রয়োজন পড়লে আরও ফ্রিজার ভাড়া করা হবে।” পুরসভার হেলথ সেন্টারে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সারা বছর ধরেই নানা ধরনের টিকা দিয়ে থাকেন, তাই কোভিডের ভ্যাকসিন দিতে কোনও অসুবিধা হবে না বলেও মন্তব্য করেন পুরমন্ত্রী। টিকাকরণ কর্মসূচি চলার সময় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের ছুটি বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু টিকাকরণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে বিশেষ অ্যাপ চালু করছে তার সঙ্গে সমন্বয় রাখা নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে কথা বলছেন পুরকমিশনার। কারণ, ওই অ্যাপে নাম থাকলে যে টিকা পাওয়া যাবে তার গ্যারান্টি কতটা তা নিয়ে এদিন পর্যন্ত কোনও সরকারি সুস্পষ্ট নির্দেশনামা পুরভবনে আসেনি।
সাগরস্নানের সময়েই যেহেতু টিকাকরণ শুরু হচ্ছে তাই নবান্নের নির্দেশ পেলে প্রবীণ পুণ্যার্থীদেরও ভ্যাকসিন দিতে চায় পুরসভা। তবে এবছর করোনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সাগরমেলায় আসা সমস্ত পুণ্যার্থীর বিশেষ পরীক্ষা করা হবে। যেহেতু ভিন রাজ্য থেকে দলে দলে পুণ্যার্থী আসবেন তাই শহরে ঢোকার প্রতিটি পয়েন্টে থার্মাল গান ও অক্সিমিটার নিয়ে পরীক্ষা করবেন পুরকর্মীরা। মুখ্যপ্রশাসক জানান, “সন্দেহভাজন রোগীর আরটিপিসিআর ও অ্যান্টিজেন, দু’ধরনের করোনা পরীক্ষাই করা হবে। কেউ অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে প্রথমে সেফ হোম, পরে হাসপাতালে নিয়ে যাবে পুরসভা। চিকিৎসা শেষে প্রয়োজনে বাড়ি পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকারই।”