‘সীমান্ত ওদের টাকা কামানোর জায়গা, তাই বিএসএফ-সুরক্ষা চায় না’, বিস্ফোরক বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা।

বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির বিরোধিতায় রাজ্য সরকার যখন বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চলেছে। বিজেপির সাংসদ রাজু বিস্তা তখন পাল্টা এক হাত নিলেন তৃণমূলকে। দার্জিলিংয়ের সাংসদের দাবি, ‘সীমান্ত ওদের টাকা কামানোর জায়গা। তাই বিএসএফের শক্তিবৃদ্ধিতে প্রতিবাদ জানাচ্ছে রাজ্য সরকার।’

শনিবার শিলিগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজু বিস্তা বলেন, “সীমান্তকে ব্যবহার করে ড্রাগ পাচার, মাফিয়াদের রমরমা তো রয়েছেই। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ, সর্বোপরি একটি রাজনৈতিক দলের টাকা কামানোর জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে সীমান্ত। সেই কারণেই সীমান্তে সুরক্ষার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকার যখন সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে তখন তার বিরোধিতা করছে এ রাজ্যের সরকার।”

বিজেপি সাংসদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে নিজেদের অবস্থানে বদ্ধপরিকর। সিতাইয়ের ঘটনার জেরে এ রাজ্যের সরকার বিধানসভায় কী প্রস্তাব আনবে তাতে রাজ্যের মানুষের কিছু আসে যায় না। সবার প্রথমে দেশের সুরক্ষা।

দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী অথবা বিএসএফ কে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকার তিনটি রাজ্যে সীমানার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা পাবে বিএসএফ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী পঞ্জাব, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফ গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে। যা মানতে নারাজ রাজ্য।

এরই মধ্যে শুক্রবার ভোরে কোচবিহারের সিতাই সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তাঁরা গরুপাচারকারী বলে অভিযোগ ওঠে। একজন ভারতীয় ও দু’জন বাংলাদেশি এই ঘটনায় নিহত হন বলে খবর। সাতভাণ্ডারীতে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বিএসএফ জানিয়েছে, দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে সামনে রেখেই এবার শাসকদল বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো নিয়ে চরম বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছে।

দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ শুক্রবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “ভারতীয় সীমান্তের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটা তারের বেড়া। ভারত তার নিজের জায়গা ছেড়ে কাঁটা তারের বেড়া দিচ্ছে। যত জুলুম ভারতীয়দের ওপর। বিএসএফের কী জুলুম আমরা জানি। আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করি, আমরা জানি। আমাদের পর্যন্তও ছাড়ে না ওরা। গাড়ি আটকে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে। সাধারণ মানুষও ওপরেও ওদের অত্যাচার বাড়বে।”

শুক্রবার পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিধানসভায় আমরা বিএসএফের নজরদারির যে সীমানা যা ১৫ কিলোমিটার ছিল, যাকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিধানসভার ১৮৫  যে রুল তাতে একটা আলোচনার জন্য এনেছি। সেটা গৃহীত হয়েছে। ১৬ তারিখ তা নিয়ে আলোচনা হবে। দেড় ঘণ্টার আলোচনাপর্ব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.