বিজেপির চিন্তন বৈঠকের রিপোর্ট দেখবেন অমিত শাহ

বিজেপির চিন্তন বৈঠকের রিপোর্ট দেশে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেবেন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। আজ শনিবার এবং রবিবার বিজেপির মহা গুরুত্বপূর্ণ চিন্তন বৈঠক শুরু হতে চলেছে দুর্গাপুরে। ওই বৈঠক, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৌশল তৈরি করার প্রথম পদক্ষেপ বলা যেতে পারে, মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দুর্গাপুরে সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ প্রত্যেক জেলা সভাপতি।

এছাড়া রাজ্যের প্রত্যেক সাধারণ সম্পাদক, মোর্চার সভাপতি ছাড়াও শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় সকলেই থাকবেন। রাজ্যর পর্যবেক্ষকরা থাকবেন ওই বৈঠকে, কিন্তু দিল্লির কোনও কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত থাকবেন কি না তা পরিষ্কার নয়। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু মনে করেন, ২০২১ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বৈঠকটি অনন্ত গুরুত্বপূর্ন। একইরকম চিন্তন বৈঠক ২০১৬, ২০১৭ তে হয়েছে। ২০১৯ সালের এই বৈঠক ২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ চিন্তন বৈঠক হতে পারে।

বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, আমার মনে হয় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এগিয়ে আসবে। তবে বিধানসভার আগে এটাই শেষ চিন্তন বৈঠক তা বলা যায় না। পার্টির ৪১ জন কার্যকর্তা এই বৈঠকে থাকবেন।

বিধানসভা নিয়ে যা কৌশল নেওয়া হবে, তা আমরা সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে জানাবো। এরপর তিনিই কৌশল তৈরি করে দেবেন। চিন্তন বৈঠকে রিপোর্ট যাবে সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে।

রাজ্য বিজেপির অন্দরেই খবর, শেষ লোকসভা নির্বাচনে১৮টি আসন নিয়ে বিজেপির অভাবনীয় সাফল্যের জন্য রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ভালো নম্বর দিয়েছে পার্টি। দার্জিলিং থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগণা, দিলীপ যেভাবে দলের পতাকা হাতে ছোটাছুটি করেছেন তা কেন্দ্রীয় পার্টিতে প্রশংসা পেয়েছে। সেই সঙ্গে মুকুল রায়-কৈলাস বিজয়বর্গীয়র চাণক্যনীতিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যকরি হয়েছে বলে মনে করেছে কেন্দ্রীয পার্টি।

২০২১ সালের আগে কেন্দ্র পার্টি ‘উইনিং কম্বিনেশন’ ভাঙতে চায় না। কিন্তু, অরবিন্দ মেনন এবং কৈলাস বিজয়বর্গীকে এক রাজ্যে ফেলে রাখতে চায় না বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিজয়বর্গীয়কে অন্য কোনও বড় দায়িত্ব দিতে চায় বলেই খবর রয়েছে। ২০১৫ সালে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হন দিলীপ ঘোষ। পার্টি সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮ সালেই সভাপতি হিসাবে নিজের প্রথম অধ্যায় শেষ করেছেন। কিন্তু দল তাঁকে দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা করতে বলেছিল অনেক আগেই। পার্টি সংবিধান অনুযায়ী, একজন সভাপতি দুই বার পরপর তিন বছর করে সভাপতিত্ব করতে পারেন।

কিংবা ৬ বছর টানা সভাপতিত্ব করত পারেন – সেক্ষেত্রে যেটা আগে হবে সেটিই তার সভাপতিত্বের শেষ দিন হিসাবে ধরবে পার্টি। দিলীপ ঘোষের ক্ষেত্রে ২০২১ পর্যন্ত সভাপতির চেয়ারে থাকবেন তা নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপের নেতৃত্বেই ঝাঁপাবে পার্টি। পার্টির ভিতরের খবর, হিন্দুত্বের পোস্টার বয় দিলীপ ঘোষ-ই রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখ হন, তা-ই চায় দিল্লি। তবে পর্দার আড়ালেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চাণক্যনীতি চালিয়ে যাক মুকুল – তাও চায় দিল্লি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ এবং ২০২১ সালের টিমের মধ্যে বিশেষ ফারাক চায় না বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.