অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম এক দিনের ম্যাচে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিল ভারত। সেই সঙ্গে এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের এক নম্বর দল হয়ে গেল তারা। এই নিয়ে ক্রিকেটের তিনটি ফরম্যাটেই এক নম্বর দল হল ভারত। এক দিনের ক্রিকেটে এক নম্বর স্থান থেকে সরিয়ে দিল পাকিস্তানকে।
শুক্রবার ম্যাচের পর আইসিসি-র তরফেই ভারতের এক নম্বর দল হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। আইসিসি-র ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ভারতের রেটিং পয়েন্ট এখন ১১৬। এক পয়েন্ট পিছনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া নেমে গিয়েছে তিন নম্বরে। তাদের পয়েন্ট ১১১। তবে ভারতকে নিজেদের স্থান ধরে রাখতে গেলে পরের ম্যাচগুলিতেও জিততে হবে। না হলে আবার র্যাঙ্কিংয়ে অদল-বদল দেখা যেতে পারে।
ভারত তিন ফরম্যাটেই এক নম্বর হওয়ার পর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বোর্ড সচিব জয় শাহ। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “টেস্ট, এক দিনের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের এক নম্বর দল হলাম আমরা। এই ঐতিহাসিক মাইলফলক ছোঁয়ার জন্য গোটা দলকে অভিনন্দন। মাঠে কতটা পরিশ্রম করেছে ছেলেরা, তা এই র্যাঙ্কিং দেখলেই বোঝা যায়। বিশ্বকাপের আগে দারুণ কৃতিত্ব।”
এ দিন টস জিতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠান রাহুল। ৫০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ২৭৬ রান। জবাবে ৫ উইকেট বাকি থাকতে জয়ের রান তুলে নেয় ভারত। এশিয়া কাপের অধিকাংশ ম্যাচে সাজঘরে কাটানো শামি নজর কাড়লেন। ইনিংসের শুরুতে, মাঝে, শেষে— যখনই বল করতে এলেন, উইকেট তুলে নিলেন। ৫১ রান খরচ করে ৫ উইকেট নিয়ে এক দিনের ক্রিকেটে সেরা বোলিং করার পাশাপাশি বার্তা দিয়ে রাখলেন কোচ, অধিনায়ককেও। এশিয়া কাপ ফাইনালে ৬ উইকেট নেওয়া মহম্মদ সিরাজকে হয়তো কিছুটা চাপেও ফেলে দিলেন বাংলার জোরে বোলার। তবে দেড় বছর পর এক দিনের ক্রিকেট খেলতে নেমে ততটা দাগ কাটতে পারলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৪৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেও, বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে জায়গা পাকা করতে হলে অভিজ্ঞ অফ স্পিনারকে আরও ভাল কিছু করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের কেউই বড় রান পেলেন না। তবে দলগত চেষ্টায় লড়াই করার মতো রান তুলল পাঁচ বারের বিশ্বজয়ীরা। ডেভিড ওয়ার্নার (৫২), স্টিভ স্মিথ (৪১), মার্নাস লাবুশেন (৩৯), ক্যামেরন গ্রিন (৩১), জশ ইংলিশেরা (৪৫) দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে গেলেন। মার্কাস স্টোইনিসের ব্যাট থেকে এল ২৯ রান। ২১ রান করে অপরাজিত থাকলেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ় খেলে ভারতে আসা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা মোহালির বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়লেন। একটি করে উইকেট পেলেন যশপ্রীত বুমরা, রবীন্দ্র জাডেজা।
২৭৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন দুই তরুণ ওপেনার শুভমন গিল এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়। প্রথম উইকেটে তাঁদের জুটিতে ওঠে ১৪২ রান। এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলের অধিনায়ক রুতুরাজের ব্যাট থেকে এল ৭৭ বলে ৭১ রানের ইনিংস। ১০টি চার মারলেন তিনি। ঘরের মাঠে শুভমন করলেন ৬৩ বলে ৭৪। ৬টি চার এবং ২টি ছক্কা মারলেন শুভমন। প্রথম দুই ব্যাটার আউট হওয়ার পর ভারতের রান তোলার গতিও কমে গেল। শ্রেয়স (৩), ঈশানদের (১৮) ব্যর্থতা চাপে ফেলে দেয় ভারতকে। সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে সেই চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন রাহুল। তাঁদের ষষ্ঠ উইকেটের জুটি-ই ভারতকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দিল। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেললেন তাঁরা। তাঁদের জুটিতে উঠল ৮০ রান। ৪৯ বলে ৫০ রান করে শন অ্যাবটের বলে আউট হলেন সূর্য। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৫টি চার এবং ১টি ছয়। তবে অর্ধশতরান করে ভারতকে জিতিয়ে আসেন অধিনায়ক রাহুল।