কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সাংসদ লকেট চ্যাটার্জির হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলাপরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান। গত কয়েকদিন ধরে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন। সিরাজ খান শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মেচেদায় বিজেপির এক ঐতিহাসিক সভা মঞ্চ থেকে বিজেপিতে যোগদান করেন সিরাজ।

এদিন রাজ্য সরকারের নয়া প্রকল্প নিয়ে কটাক্ষ করে সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি বলেন, “হঠাৎ করে ভোটের সময় মনে পড়লো ঘরে ঘরে যাই। দুয়ারে দুয়ারে নাকি তৃণমূল সরকার। এতদিন রাস্তায় মারপিট করছিল, এখন দুয়ারে দুয়ারে চোর- ডাকাতি করতে যাবে। সেই জন্য সবাই দরজা বন্ধ করে রাখবেন। সবাই দরজায় খিল- ছিটকিনি দিয়ে রাখবেন একটাকেও ঢুকতে দেবেন না। যা ছিল সব নিয়ে চলে যাবে।”

অন্যদিকে, বুধবার বিজেপির ঐতিহাসিক সভা মঞ্চ থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খাঁন সহ কয়েকশো কর্মী বিভিন্ন দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন।

সেই মঞ্চ থেকে লকেট তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “মানুষ বুঝে গেছে পিসি ভাইপো সিন্ডিকেট কোম্পানিকে একুশে বাংলা থেকে তাড়াতে হবে। বাংলা থেকে তাদের তাড়িয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার আসবে। কারণ তৃণমূলের দুটো ফুলের এখন দুজন মালিক। একজন পিসি আরেকজন ভাইপো।

সিরাজ ভাই আজকে তৃণমূল ছেড়ে কত দুঃখের কথা বলছেন। সব হার্মাদগুলোকে দলে নিয়েছে আর আসল সৈনিক গুলো দলে বিদ্রোহ করছে। যারা তৃণমূলের থেকে এতদিন চুপচাপ কাজ করে গিয়েছে তারা এখন সিরাজ ভাইয়ের মতো বিদ্রোহ করছে। আগামী দিনে দেখবেন ওই দুটো লিডার ছাড়া আর কেউ তৃণমূলে নেই আস্তে আস্তে সবাই বিজেপিতে যোগ দেবেন। ভারতীয় জনতা পার্টি সবাইয়ের জন্য দরজা খুলে রেখেছে।”

রাজ‍্যে চলতি বছরে করোনা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “করোনার সময় কেন্দ্রের চাল-ডাল এসেছিল। সেসব তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা সব ঘরে ঢুকিয়ে নিয়েছেন। এগুলো সব বিক্রি করে মানুষকে নিজের নাম দিয়েছে। সেই জন্য সাধারণ বাংলার মানুষজন নাম দিয়েছে ‘চালচোর সরকার আর নেই দরকার’।

আমরা দেখেছি রাজ্যে একের পর এক মহিলাদের অত্যাচার করে তাদেরকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। আজকে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকতেও মহিলাদের ওপর অত্যাচারের একটাও বিচার হয়নি।

তিনি নিজের জায়গায় একজনকে শাস্তি দেননা উল্টে চলে যান উত্তরপ্রদেশ। উনিতো অভিভাবক আছেন পশ্চিমবাংলার উত্তরপ্রদেশের যিনি অভিভাবক আছেন তিনি দেখে নিচ্ছেন সেখানে কেন নাক গলাতে যাচ্ছেন। আগে পশ্চিমবাংলাকে দেখুন তারপর অন্যদিকে যাবেন।”

তিনি রাজ্য বেকারত্ব নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, “আজকে ৫০লক্ষ শ্রমিককে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছো। আজকে যদি করোনা না হতো আমরা জানতেই পারতাম না। রাজ‍্যে কোন শিল্প নেই, কোন কৃষি নেই তার পরিবার ছেড়ে তাকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছো।

তারা যখন বাংলায় এসেছে তখন জব কার্ড পর্যন্ত পায়নি উল্টে তারা আবার সেখানে ফিরে গিয়েছে। আজকের লজ্জা করে না তুমি নিজের হাতে করে বহিরাগত বানিয়েছো, শিল্প বলে কিছু নেই।

শুধু একটাই আছে বোমা শিল্প, চপ শিল্প আর ঢপ শিল্প।” সব মিলিয়ে দিনের ঐতিহাসিক সমাবেশ একুশের নির্বাচনের আগে বিজেপির এক শক্তি প্রদর্শন বলা চলে। সমাবেশে লকেট চ্যাটার্জি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.