ভীমগড় ইসকন মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে স মন্দির। ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ভক্তরা। পরে প্রশাসনের আশ্ব অবরোধ ওঠে।
শনিবার ভোরে বীরভূমের খয়রাশোল থানার অন্তর্গত ভীমগড়ের চূড়র গ্রামে ইসকনের ভক্তি বেদান্ত ভোকেশন্যাল ট্রেনিং আশ্রমের ভজন কুঠির আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় খয়রাশোল থানার পুলিশ। আগুনে মন্দিরের বিগ্রহ, তুলসী বৃক্ষ, মন্দিরের সমস্ত পুজোর সামগ্ৰী, বিছানা পত্র সমস্ত কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যে সময় আগুন জ্বলছে সেই সময় ওই কুঠিরে মন্ত্রী রুই দাস নামে এক ভক্ত শুয়েছিলেন। সেও কোনো রকমে প্রাণে বেঁচেছেন।
ইসকন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে এই আশ্রমের পথ চলা শুরু হয়। বহু ভক্ত এখানে আসা-যাওয়া করেন। গত কয়েকদিন আগেও এখানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। কি কারণে ভজন কুটির আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল তা খতিয়ে দেখছে খয়রাশোল থানার পুলিশ।
ভজন কুটির কংক্রিটের প্রাচীর বেস্টিত খড়ের ছাউনি দিয়ে তৈরি। অভিযোগ, গত ৯ ডিসেম্বর রাতে এই আশ্রমে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই আগুন খুব বেশি ছড়ানোর আগেই দেখতে পান ভক্তরা। তড়িঘড়ি আগুন নেভানো হয়। সেই দিনই ইসকনের তরফে খয়রাশোল থানায় বিষয়টি জানানো হয়। তারপরে এদিন ভোর রাতে মন্দিরের চার দিক থেকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আগুনে বিগ্রহ সহ ভস্মীভূত হয় সমগ্র মন্দির। দমকলের ইঞ্জিন আসতে আসতে সব কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ৷
এই ঘটনার খবর পেয়েই এদিন সকাল থেকেই শয়ে শয়ে ভক্ত এসে ঐ মন্দির প্রাঙ্গণে হাজির হয়। কেউ কেউ বিগ্রহ পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে হাউ মাউ করে কাঁদতে শুরু করে। এরপরেই সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়ে যায়। আগুন লাগার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় চার ঘন্টা রানীগঞ্জ- মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ভীমগড়ের কাছে রাস্তা অবরোধ করেন ভক্তরা। অবরোধে স্থানীয় বাসিন্দারা যোগ দেন।
গৃহবধূ চন্দ্ৰানী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। কিছু দিন আগেও একবার দুষ্কৃতীরা আগুন লাগাবার চেষ্টা করে। পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছেল কিন্তু মন্দির রক্ষা হল না। আমরা দুষ্কৃতীদের চরম শাস্তি চাই।”
ভীমগড ইসকনের ভজন কুটিরে চার দিক দিয়ে তেল ঢেলে পরিকল্পনা করে দদুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ করেন মহারাজ ঔদার্য্যচন্দ্র দাস। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেন্সের দুর্গাপুর ও ভীমগড়ের জিএম ঐদার্য্যচন্দ্র দাস বলেন, “এর আগেও আগুন লাগানো হয়েছিল। প্রশাসনকে আমরা জানিয়েছিলাম। ফের চার দিক থেকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সব কিছু পুড়ে গিয়েছে। আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।” প্রশাসনের আশ্বাসে প্রায় চার ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে।