জাতীয়তাবাদ আমাদের চালিকাশক্তি, অন্ত্যোদয় আমাদের দর্শন আর সুশাসন আমাদের মন্ত্র। বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহার সংকল্প পত্র-এর শুরুতেই রয়েছে এই কথাগুলি। সংকল্প পত্রে বিজেপি পঁচাত্তরটি লক্ষ্য স্থির করেছে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ক্ষমতায় ফিরলে আগামী পাঁচ বছরে প্রতিটি লক্ষ্য পূরণ করবে দল।
চাষির মুখে হাসি :
ক্ষমতায় ফিরলে পরবর্তী মোদী সরকার প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনা শুরু করবে। এর ফলে ষাটোত্তীর্ণ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা পেনশন পাবেন। কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য ২৫ লক্ষ কোটি টাকা অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা হবে। আসল পরিশোধ করার শর্তে সুদ বর্জিত ঋণ মিলবে কিষান ক্রেডিট কার্ড থেকে। এছাড়া পাওয়া যাবে সুদ-বর্জিত স্বল্পমেয়াদি কৃষি ঋণ এক লাখ টাকা পর্যন্ত।
জাতীয় নিরাপত্তা :
সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম কেনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। অগ্রাধিকার দেওয়া হবে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কেনার ওপর যাতে বাহিনীর আঘাত হানার ক্ষমতা বাড়ে। সন্ত্রাসবাদকে রেয়াত করা হবে না। প্রয়োজনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেনাকে দেওয়া হবে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা। ধাপে ধাপে সারা দেশে লাগু হবে এন আর সি।
অর্থনীতি :
মোদী সরকারের লক্ষ্য ২০৩০-এর মধ্যে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করা। ২০১৫-র মধ্যে ভারতের অর্থনীতি হবে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর ২০৩২ সালে ভারতের অর্থনীতি হবে ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি :
সাংবিধানিক লক্ষ্মণরেখা লঙ্ঘন না করে দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি যাতে লাগু করা যায় তার জন্য দল সব ধরনের প্রয়াস করবে। অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সংকল্প পত্রে গঙ্গোত্রী থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত— গঙ্গাকে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত করার দায়িত্ব যথাযোগ্য গুরুত্বের সঙ্গে পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।
কর্মসংস্থান :
দেশের ২২টি ‘চ্যাম্পিয়ন সেক্টর’ বেশিরভাগ চাকরি তৈরি করে। ক্ষমতায় ফিরলে বিজেপি এই ক্ষেত্রগুলিকে আরও শক্তিশালী করার মাধ্যমে নতুন চাকরি সৃষ্টি করবে। এছাড়া, নতুন প্রকল্প আনা হবে যার মাধ্যমে বিনা জামিনে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। উত্তর পূর্বাঞ্চলকে শক্তিশালী করার জন্য সেখানকার মধ্যমবর্গীয় বিনিয়োগকারীদের আরও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। ২০২৪-এর মধ্যে আরও ২০০টি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় স্থাপন করতে চায় বিজেপি।
নারীর ক্ষমতায়ন :
তিন তালাক এবং নিকাহ হালাল বন্ধ করার জন্য আইন প্রণয়ন করতে বিজেপি বদ্ধপরিকর। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং আশাদিদিদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য তাদের আয়ুষ্মন ভারত চিকিৎসাবিমা প্রকল্পের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। সংবিধান সংশোধন করে লোকসভা ও বিধানসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করবে বিজেপি।
সুশাসন :
বিজেপির লক্ষ্য সুশাসনের মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত ভারত নির্মাণ এবং দ্রুত ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ। সরকারি পরিষেবা পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব প্রয়াস করা হবে বলে জানিয়েছে বিজেপি।
2019-04-21