“মমতার মনে ভয় আছে বলেই তো….”, বাঁকুড়ায় নেমেই আগ্রাসী ভবিষ্যদ্বাণী অমিত শাহর

একবার ব্রিগেডে বাম সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের মৃত্যুঘণ্টার প্রতীকী ছবি দেখতে কেমন, সেই প্রথম দেখেছিল বাংলা।

অমিত শাহ তেমন কোনও ঘণ্টা দেখালেন না। তবে আজ বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় বিরসা মুণ্ডার মূর্তিতে মালা দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা গেরুয়া শিবিরের দ্বিতীয় শক্তিধর নেতা প্রত্যয় দেখাতে চাইলেন বাংলায় ক্ষমতা দখলের।

কী বললেন তিনি?

অমিত শাহ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। বাংলায় দুই তৃতীয়াংশ আসনে জিতে সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি।”

এখানে একটি বিষয় বলার। এহেন ভবিষ্যদ্বাণী রাজনীতিতে আকছার অনেকেই করেন। অনেকে লক্ষ্যও স্থির করেন অনেক রকম। যেমন উনিশের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিলেন ৪২ এ ৪২ চাই। আবার অমিত শাহ কিন্তু লোকসভা ভোটের অনেক আগে থেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, উনিশের নির্বাচনে বাংলায় অন্তত ২১-২২ টি আসনে জিতবে বিজেপি। অমিতের সেই পুর্বানুমান প্রায় মিলে গিয়েছে লোকসভা ভোটে। পশ্চিমবঙ্গে ১৮ টি আসনে জিতেছে বিজেপি।

গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, গতকাল রাতে কলকাতায় পৌঁছে বিজেপির রাজ্য নেতাদের সঙ্গে রাত প্রায় ১২ টা পর্যন্ত বৈঠক করেছেন অমিত শাহ। সেই আলোচনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে তিনি সমীক্ষা করিয়েছেন। বাংলায় বিজেপির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। একুশের ভোটে বিজেপির জেতার সম্ভাবনা ষোলো আনা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, হতে পারে রাজ্য নেতাদের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্যই এ সব বলছেন অমিত শাহ। তবে এও ঠিক যে, কোনও রাজ্যে ভোটের অনেক আগে থেকেই দফায় দফায় সমীক্ষা করানো বিজেপির বর্তমান ঘরানার রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।

সে যাক। এদিন বাঁকুড়ায় সাংবাদিকদের অমিত শাহ আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন। উনি ভয় পেয়েছেন বলেই তো কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্প বাংলায় বাস্তবায়িত হতে দিচ্ছেন না। কৃষকদের ৬ হাজার টাকা করে কেন্দ্র যে দিচ্ছে তা বাংলার চাষীরা পাচ্ছে না। গরিব পরিবার ৫ লক্ষ টাকা করে স্বাস্থ্য বিমা পাচ্ছে না। পিছিয়ে পড়া এলাকার মানুষ শৌচালায়, ঘরবাড়ির জন্য টাকা পাচ্ছে না। অন্তত ৮০ টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে রাজ্য সরকার।”

গতকাল কলকাতা বিমানবন্দরে নামা ইস্তক অমিত শাহকে নিয়ে বিজেপি শিবিরে উচ্ছ্বাস নজরে পড়ছে। তাতে খুশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীও। তিনি এদিন বলেন, বাংলায় এসে দুটো জিনিস স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। একদিকে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর জন আক্রোশ। অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আশা ও শ্রদ্ধা। বাংলায় পরিবর্তন আসন্ন। তার দেওয়াল লিখন পরিষ্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.