কাশ্মীরের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে একের পর এক উদ্যোগ নিয়েছে মোদী সরকার। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি একাধিক টানেলের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করার চেষ্টা চলছে। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচে সেই হাইওয়ে ও টানেলের কাজ করছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রক। জ়োজ়িলা টানেল প্রজেক্টের মাধ্যমে কাশ্মীর ও লাদাখকে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে এগোচ্ছে সেই কাজ? তা খতিয়ে দেখতে আজই পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রী নিতিন গড়করী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি ভি কৃষ্ণ রেড্ডি।
মঙ্গলবার সেই জ়োজ়িলা প্রজেক্টের দুটি টানেলের কাজ খতিয়ে দেখেন নিতিন গড়করী। টানেল ১ ও টানেল ২-এর কাজ পরিদর্শন করেন তিনি। টানেল ১-এর দৈর্ঘ্য ৪৩৫ মিটার ও ১.৯৫ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল ২। ১৮ কিলোমিটারের জ়োজ়িলা প্রজেক্টের অংশ এই দুই টানেল। টানেলের দুই প্রান্তেই কাজ পরিদর্শন করেন গড়করী, পি ভি কৃষ্ণ রেড্ডি মন্ত্রী ও অন্যান্য আধিকারিকেরা।
মন্ত্রীর পরিদর্শনের আগে সোমবার সোনমার্গে একটি সাংবাদিক বৈঠক হয়। ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (NHIDCL)-এর তরফ থেকে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার গুরজিত সিং কাম্বো ওই দুই টানেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, সব মরশুমেই যাতে কাশ্মীর ও লাদাখের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ থাকে, তার জন্যই এই জ়োজ়িলা প্রকল্পে টানেল তৈরি হচ্ছে। তিনি জানান, পুরোদমে এগোচ্ছে টানেল তৈরির কাজ। প্রবল শীতেও যাতে সেই কাজ চালিয়ে যাওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে সর্বতোভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার গুরজিত সিং।
শুধু কাশ্মীর নয়, লাদাখের পর্যটনের ক্ষেত্রেও যে এই টানেলের বিশেষ গুরুত্ব থাকবে সে কথা উল্লেখ করেছেন ব্রিগেডিয়ার গুরজিত সিং। এই প্রজেক্ট সম্পূর্ণ হলে জ়োজ়িলাই হবে দেশের দীর্ঘতম রোড-টানেল। এ ছাড়া বাই-ডিরেকশনাল টানেল অর্থাৎ দু’দিকেই যাতায়াত করা যায়, এমন টানেল হিসেবে এশিয়ার দীর্ঘতম হবে এই জ়োজ়িলা। এই রুটে একাধিক সেতুও তৈরি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কার্গিল ও সোনমার্গের মাঝামাঝি জায়গায় তৈরি হচ্ছে এমন একটি টানেল যা জাতীয় সড়কের জে মোড় থেকে জ়োজ়িলা টানেল অবধি বিস্তৃত থাকবে। এই প্রজেক্টের পুরো কাজ হচ্ছে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে।
এই টানেল শুরু হচ্ছে এনএইচ ওয়ানের গা ঘেঁষে। সোনমার্গ থেকে কাশ্মীর যাওয়ার পথ হল এই জাতীয় সড়ক। আর প্রজেক্টের শেষ অংশ থাকবে লাদাখে। জানা গিয়েছে, এই প্রজেক্ট যেখানে হচ্ছে, সেটি একটি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। তাই টানেল তৈরির সময় সবরকমের সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।