গত বছর বাংলাদেশে ভাঙা হয়েছে শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি, এবার পাকিস্তানে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো মোহম্মদ আলী জিন্নার মূর্তি।
বেশ কিছুদিন ধরেই বালোচিস্তানে পাওয়া যাচ্ছিলো দেশ বিরোধী বিক্ষোভের আঁচ। এবার এরই প্রতিফলন ঘটলো।
চলতি বছরের শুরুতে বালোচিস্তানের একটি ‘সুরক্ষিত’ এলাকায় জিন্নার মূর্তিটি স্থাপন করেছিল প্রশাসন আর গতকাল রাতে তার নিচে বিস্ফোরক পুঁতে দেয় বালোচ বিদ্রোহীরা। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কার্যত ধুলোয় মিশে যায় জিন্নার স্ট্যাচুটি। ইতিমধ্যে হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘বালোচ লিবারেশন ফ্রন্ট’। বহুদিন ধরেই পাকিস্তানের দখলে থাকা বালোচিস্তানকে স্বাধীন করার চেষ্টা চালাচ্ছে সংগঠনটি। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। বিদ্রোহীদের খোঁজে অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। খোদ পাকিস্তানের বুকে জিন্নার মূর্তি ভাঙার ঘটনায় রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে ইসলামাবাদ।
স্বাধীন বালোচিস্তানের দাবিতে বহুদিন থেকে লড়াই চালাচ্ছে বিদ্রোহী সংগঠন ‘বালোচ লিবারেশন আর্মি’। নিরীহ বলোচদের উপর পালটা অমানুষিক অত্যাচার চালাচ্ছে পাকিস্তানি ফৌজ। গত বছর তুরবাট শহরে এক মহিলা ও তাঁর চার বছরের শিশুকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তান সেনার মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তারপর থেকেই ক্ষোভের আগুন আর প্রবলভাবে জ্বলে উঠেছে বালোচিস্তানে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হত্যার বিচার চেয়ে শুরু হয়েছে আন্দোলন। সব মিলিয়ে ক্রমে জোরাল হচ্ছে স্বাধীনতার দাবি।
উল্লেখ্য, ২০১৫-য় মউ স্বাক্ষরের ভিত্তিতে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি নির্মাণকার্য শুরু হয়েছে৷ চিনের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতির উপর ভিত্তি করে, তাদের অর্থ সাহায্যেই এই করিডর তৈরি হচ্ছে। পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ পর্যন্ত মোট ২ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটি তৈরি করা হচ্ছে।
এই করিডর নিয়ে প্রথম থেকেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন বালোচিস্তান-সহ গিলগিট-বালতিস্তান ও পিওকে-র নাগরিকরা। অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করছে পাকিস্তান। যাতে পূর্ণ মদত দিচ্ছে চিন। এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই পাক প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছেন বালোচ নাগরিকরা এবং তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে পাক সেনা।