‘মুখোশ’ নিয়ে ফেসবুকীয় হকারের কিছু বাতেলা

Reaction

 'মুখোশ' নিয়ে ফেসবুকীয় হকারের কিছু বাতেলা

ভালো থাকলে চরম ফালতু সিনেমাও দু’বার ক’রে হলে দেখেছি এমনও হয়েছে, অসুস্থতার কারণে ‘মুখোশ’ সিনেমাহলে দেখা হয়নি, ‘Anjaam Pathiraa’-র রিমেক এজন্য দেখবো না এরকমটা ভাবিনি, টিজার, ট্রেলার দেখে মোটামুটি লাগলেও ঠিক ছিল যাব কিন্তু রিলিজের পরই…যাক সে কথা, গত কাল Hoichoi-তে আসার পর দেখতে শুরু করলাম

Anjaam Pathiraa-র সঙ্গে তুলনায় না গেলেও ছবির একটা ভালো জিনিস ব’লে দিই মালায়ালাম ছবিটিতে প্রথম থেকে যে তাসটির কথা বলাই হয়নি হঠাৎ ক’রে দেখানো হয়েছিল যেটা নিয়ে আমার অল্প অভিযোগও ছিল, এখানে কিন্তু সেই তাসটার ইঙ্গিত না দিয়েও একবার শুরুতেই বের করবো বের করবো করা হ’লো কিন্তু তারপরই আড়ালে পাঠিয়ে দেওয়া হ’লো..কিছু না হ’লেও এতে গোটা ঘটনার একটা সাযুজ্য পাওয়া গেল নইলে ক্রাইমের হোতাকে খুঁজে পাওয়ার পর এতক্ষণ ঘটে যাওয়ার ঘটনার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটা ঘটনা ব’লে ক্রাইমের জাস্টিফিকেশনই বলুন বা কারণ ব্যাখ্যা করার সময় লিঙ্ক পাওয়া যেত না যেটা মূল ছবিতে আমার মনে হয়েছিল। কিন্তু মুখটা সিজ্জিদার ভাষায় ‘মেগা সিরিয়ালের বিয়ে করা নতুন বউ’-এর মতো লুকিয়ে না রাখলেই কী হ’তো? অসুবিধাটা কী ছিল? অতই যদি বুদ্ধি তাহলে এটা তো অন্তত বোঝা উচিত ছিল কানকো চোষা বাঙালির কান এত খারাপও নয় যে কণ্ঠস্বর চিনতে পারবে না! আমার মতে পরিণত অবস্থার ভাই-বোন(এটা বলার পরও কোনো স্পয়লার আসছে না)-কে প্রথমেই দেখিয়ে দিলেও মহাভারত অশুদ্ধ হ’তো না বরং ব্যাপারটা আরও রিলেট করার মতো হ’তো।

যাইহোক গল্প বলার না হ’লেও দৃশ্যায়নে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু মূল ছবিতে যে জিনিসটা অসম্ভব ভালো লেগেছিল সেই কালার গ্রেডিংয়ের জায়গাটা মার খেয়ে গেছে খুব। আর মূল গল্প যতই ভালো হোক সম্ভবত স্ক্রিনপ্লে-র জন্যই ক্রাইম সিন হোক বা ইনভেস্টিগেশনের প্রসেস খুব আনরিয়েলিস্টিক লেগেছে সবটা। এমনকি খোদ অনির্বাণ ভট্টাচার্যকেও খুব ওভার দ্যা টপ লেগেছে অনেক জায়গায়। আর যদি লজিকের জায়গায় আসি ছবিতে কিংশুকের স্ত্রী রাই কি হোম মেকার না কিছু জব করেন স্পষ্ট হয়নি। যদি তাই হয় তাহলে একটা বড় প্রশ্ন কিংশুক যেখানে সরকারি চাকরির জন্য সুপারিশে চাকরি নিচ্ছে তাও বেশ তেল মাখিয়ে চলছে, সেখানে অত হাইফাই রুম কীভাবে হ’লো কে জানে! আর ক্রাইম ঘটার সময় যে টেনশন বিল্ড আপ হওয়ার কথা সেটাও কেমন ফিকে ফিকে ছিল। দেখলাম ছবির চিত্রনাট্য আর সংলাপ আলাদা লোকের। সংলাপলেখকের নাম দেখলাম শ্রীজীব, যিনি ‘বন্য প্রেমের গল্প ২’ ওয়েবসিরিজের লেখক। সত্যি বলতে কী উনি খুব চেষ্টা করেছেন কিন্তু চিত্রনাট্যের সঙ্গে সংলাপগুলো কেমন খাপছাড়া লেগেছে! এতই যদি লাউড ট্রিটমেন্ট সবেতে তাহলে তো উচিত ছিল ‘দ্বিতীয় পুরুষ’-এর মতো পাওয়ারফুল উইটি ডায়ালগ রাখা! আমরা যতই ওঁকে গরীবের নোলনদা ব’লে চাটাচাটি করি ভদ্রলোক না আমাদের সাইকোলজিটা ভালো বোঝেন, উনি জানেন ওঁর ছবির দর্শক কারা, সেই মতো কীভাবে ছবিটাকে বের করতে হয় জানেন। সেই দূরদর্শিতার জন্যই বহু সমালোচনার পরও পরপর ব্যাক টু ব্যাক সুপারহিট হয়ে যায় ওঁর ছবি।

আর একটা কথা সিনেমার ক্রেডিটে নাম না দিয়ে একদম শেষে ‘বিশেষ ভূমিকায়-টোটা রায়চৌধুরী’ লিখছেন অথচ পোস্টারেই ওঁর ছবি। বলি দর্শকদের কি ‘ঘাস মুখ দিয়ে চলা জীব’ মনে করেন নির্মাতারা? অলরেডি পরিস্থিতি খুব খারাপ, টিমটিম ক’রে টিকে ইন্ডাস্ট্রি! এই অবস্থার জন্য যে দর্শককে পাত্তা না দেওয়ার এই আনাড়ি মানসিকতাই ৯০% দায়ী সেটা কবে বুঝবেন মেকাররা?

আরফিন শুভ রক্তিম ঘন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.