দুশ বছরের বেশি সময় ধরে ব্রিটীশরা ভারতে শাসন করলেও কখনোই তারা ভারতের সংস্কৃতি ও তার মহান ঐতিহ্য কে গ্রহণ করেনি। বরং এর বিপরীতে তারা ভারতীয়দের খ্রীষ্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত করণ ও গীর্জা নির্মানের কাজে বেশী আগ্রহী হয়েছে।কিন্ত মধ্যপ্রদেশের অগর মালওয়া তে অবস্থিত বৈজনাথ মন্দিরের সঙ্গে এক ব্রিটীশ দম্পতির যোগ ও তাদের জীবনের বিশেষ ঘটনায় মহাদেব শিবের প্রভাব শুধু এক ব্যাতিক্রমি ঘটনা নয় বরং ভারতীয় সমাজ, সংস্কৃতি ও তার আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের সঙ্গে দেবাদিদেব মহাদেবের নিবিড় যোগের এক প্রতিফলন।
১৮৭৯ সালের ব্রিটীশ ভারতে লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল মার্টিন অগর মালওয়া এলাকায় কর্মসূত্রে নিয়োযিত ছিলেন।কিন্তু সীমান্তবর্তি প্রদেশে ব্রিটীশদের সঙ্গে আফগানদের যুদ্ধ শুরু হলে কর্নেল মার্টিনকে যুদ্ধে যোগ দিতে হয়। তিনি যুদ্ধে গেলেও অগর মালওয়ায় তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাঁর জীবিত থাকার খবর নিযমিত চিঠির মাধ্যমে চলতে থাকে।কয়েক মাস পরে এই চিঠি আসা বন্ধ হয়ে যায় তখন মার্টিনের স্ত্রী তাঁর সঙ্গ কোনো যোগাযোগ করতে না পারায় স্বামীর বিষয়ে খারাপ চিন্তা করতে থাকেন। এতে তাঁর স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে।
একদিন বৈজনাথ মন্দিরের পাশ দিয়ে যাবার সময় ব্রাহ্মনদের মন্ত্র উচ্চারন শুনে সেখানে যান। তাঁর সমস্যা শোনার পর ব্রাহ্মনরা বলেন ভগবান শিবকে প্রার্থনা করলে তিনি তাঁর ভক্তদের দু:খ লাঘব করেন।সঙ্গে ১১ দিন নম: শিবায় মন্ত্রে শিবের প্রার্থনা করার উপদেশ দিলেন।স্বামী ফিরে এলে মন্দিরের সংস্কার করবেন কথা দিয়ে প্রার্থনা শুরু করেন ও ১১ দিনের মাথায় স্বামীর চিঠিতে ব্রিটীশের যুদ্ধ জয়ের কথা জানতে পারেন।
আবার এমনও শোনা যায় যে মার্টিন তাঁর স্ত্রী কে চিঠিতে লিখেছিলেন আফগানদের হাতে বন্দী হবার পর বাঘ ছাল পরা এক যোগী ত্রিশূল হাতে এসে তাঁকে রক্ষা করেন ও আফগান দের পিছু হটতে বাধ্য করেন। তাঁর স্ত্রীর প্রার্থনা ও ত্যাগের কারনে যোগী তাঁকে রক্ষা করতে এসেছেন বলে জানান।
১৮৮৩ সালে জন্মসূত্রে হিন্দু না হওযা ঐ ব্রিটীশ দম্পতি বৈজনাথ মন্দির সংস্কারে এগিয়ে আসেন এবং ১৫,০০০ টাকার অর্থ সাহায্য করেন।