শ্রীরামজন্মভূমি মন্দির নির্মাণ, ৩৭০ ধারা বাতিল এবং শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান সশক্ত ভারত নির্মাণের একটি ধাপ

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভার বৈঠক ১৫ থেকে ১৭ মার্চ বেঙ্গালুরুতে হওয়ার কথা ছিল। করোনা মহামারীর কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রতি নজর রেখে সঙ্ঘের সরকাৰ্যবাহ ভাইয়া যোশী বলেন, সমস্ত স্বয়ংসেবক নিজ নিজ এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমস্যা মোকাবিলায় সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলবেন। এই সময় সঙ্ঘের কার্যকরী মণ্ডল শুধুমাত্র তিনটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, বর্তমানে সারা দেশে ৩৯ হাজার স্থানে ৬৩ হাজার নিত্য শাখা, ২৮ হাজার স্থানে মিলন ও মণ্ডলী চলছে। সঙ্ঘের গৃহীত তিনটি প্রস্তাব প্রকাশ করা হলো।

প্রস্তাব-১ শ্রীরামজন্মভূমিতে মন্দির নির্মাণ রাষ্ট্রীয় স্বাভিমানের প্রতীক

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল মনে করে যে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সমগ্র রাষ্ট্রের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক অযোধ্যায় শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থানে সুরম্য মন্দির নির্মাণের সমস্ত বাধা দূরীভূত হয়েছে। শ্রীরামজন্মভূমি মামলায় ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর দেশের শীর্ষ আদালত যে রায় দিয়েছে তা ভারতে বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে সর্বোত্তম রায়গুলির মধ্যে একটি। শুনানির সময় সৃষ্টি করা বহু প্রকার বাধা সত্ত্বেও অপরিসীম ধৈর্য এবং প্রাভজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে মাননীয় বিচারপতিগণ একটি অত্যন্ত পরিণত রায় দিয়েছেন। সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় কার্যকরীমণ্ডল এই ঐতিহাসিক রায়দানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে। শ্রীরামজন্মভূমির পক্ষে অভিজ্ঞ আইনজীবীরা যে সমর্পণ, নিষ্ঠা ও প্রাজ্ঞতার সঙ্গে প্রামাণ্য তথ্য ও যুক্তি রেখেছেন তার জন্য তারা সবাই অভিনন্দনের যোগ্য। আনন্দের বিষয় যে, সমাজের কোনো অংশই এই রায়কে নিজেদের জয় অথবা পরাজয় হিসেবে না দেখে সমগ্র দেশ, বিচার ব্যবস্থা এবং সংবিধানের জয় হিসেবে স্বীকার করেছে। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল সারা দেশের জনগণকে এই পরিণত মানসিকতার জন্য সর্বান্তঃকরণে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

বিশ্বের ইতিহাসে ‘শ্রীরামজন্মভূমি মন্দিরের সংঘর্ষ’ দীর্ঘকালীন সংঘর্ষগুলির মধ্যে অতুলনীয়। ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে নিরন্তর সংঘর্ষেলক্ষ লক্ষ রামভক্তের বলিদান হয়েছে। এই সংঘর্ষ কখনো কোনো সাধুসন্তের প্রেরণায় হয়েছে, আবার কখনো স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে হয়েছে। শ্রীরামজন্মভূমি মন্দির ফিরে পাওয়ার জন্য ১৯৫০ সাল থেকে আইনি লড়াই এবং ১৯৮৩ সাল থেকে জনআন্দোলন নিরন্তর চলেছে। বিশ্ব ইতিহাসের এই মহানতম আন্দোলনকে বহু সাধুসন্ত তাদের নিরলস পরিশ্রম ও ত্যাগের দ্বারা সফলতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছেন। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল সেই জ্ঞাত-অজ্ঞাত হুতাত্মাদের পুণ্যস্মরণ ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা পবিত্র কর্তব্য বলে মনে করছে।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর সমস্ত শ্রেণীর মানুষের বিশ্বাস উৎপন্ন করে সদ্ভাবপূর্ণ রীতিতে তা স্বীকার করানো যেকোনো সরকারের চ্যালেঞ্জের বিষয়। যে ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে সরকার সবার বিশ্বাস উৎপন্ন করেছে তার জন্য কার্যকরী মণ্ডল কেন্দ্র সরকার এবং বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় এবং রামভক্তদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ‘শ্রীরামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র’ নামে এক নতুন ন্যাস গঠন এবং সেই ন্যাসকে সরকার নিয়ন্ত্রিত না করে তাকে সমাজ সঞ্চালিত করা ও প্রশাসনকে সহযোগী ভূমিকায় রাখা সরকারের দূরদর্শিতার পরিচায়ক। যে পুজ্য সাধুসন্তদের আশীর্বাদে এই আন্দোলন চলেছে, তাদের নেতৃত্বেই মন্দির নির্মাণের কাজ করার সিদ্ধান্তও প্রশংসনীয়। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডলের বিশ্বাস যে, এই ন্যাস শ্রীরামজন্মভূমির ওপর সুরম্য মন্দির এবং তৎসংলগ্ন এলাকার নির্মাণকাজ শীঘ্রাতিশীঘ্র সম্পন্ন করবে। এই পবিত্র কাজে সমস্ত ভারতীয় এবং সমগ্র বিশ্বের রামভক্তরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন।

এটা নিশ্চিত যে, এই পবিত্র মন্দিরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাজে মর্যাদা, সহমর্মিতা, একাত্মভাব এবং মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামের জীবনাদর্শের অনুরূপ জীবন নির্মাণের ভাব বৃদ্ধি হবে এবং ভারত সারা বিশ্বে শান্তি, সদ্ভাব ও সমন্বয় স্থাপন করার দায়িত্ব পূর্ণ করতে পারবে।

প্রস্তাব-২ জম্মু-কাশ্মীরে ভারতের সংবিধান পূর্ণরূপে প্রয়োগ এবং রাজ্য পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত এক অভিনন্দনযোগ্য পদক্ষেপ

মহামহিম রাষ্ট্রপতির আদেশে ভারতীয় সংবিধানকে জম্মু-কাশ্মীরে পূর্ণরূপে প্রয়োগ করার এবং সংসদের দুই কক্ষেই অনুমোদনের পর ৩৭০ধারাকে বাতিল করার সিদ্ধান্তকে সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পুনর্গঠিত করার সিদ্ধান্তও এক প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল এই সাহসী ও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য কেন্দ্র সরকার ও রাষ্ট্রহিতে পরিপূর্ণ সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। সম্মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীদের এবিষয়ে পরিলক্ষিত ইচ্ছাশক্তি ও দূরদর্শিতাও প্রশংসনীয়।

ভারতীয় সংবিধানের সমস্ত ধারা দেশের সমস্ত এলাকায় সমান ভাবে প্রয়োগ হওয়ার কথা, তথাপি দেশ বিভাজনের অব্যবহিত পরে পাকিস্তানি আক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩৭০ ধারাকে এক অস্থায়ী ব্যবস্থা রূপে সংবিধানে যুক্ত করা হয়েছিল। পরে ৩৭০ ধারার আড়ালে জম্মু-কাশ্মীরে বহু অনুচ্ছেদ শুধু যুক্ত করাই হয়নি, তৎকালীন রাষ্ট্রপতির আদেশে ৩৫এ-র মতো অনুচ্ছেদকে সংবিধানে যুক্ত করে বিচ্ছিন্নতার বীজ বপন করা। হয়েছে। এই সাংবিধানিক অসঙ্গতির কারণে অনুসূচিত জাতি, জনজাতি, অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণী, গোরখা সমাজ, মহিলা, সাফাই কর্মচারী এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থীরা ঘোর ভেদভাবের শিকার। হয়েছে। জম্মু ও লাদাখকে রাজ্য বিধানসভায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, সম্পদের বণ্টন ও নির্ণয় প্রক্রিয়ায় সমুচিত প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল।

এই সমস্ত ভুল নীতির কারণে আমরা দেখেছি যে, রাজ্যের সর্বত্র মৌলবাদ ও সন্ত্রসবাদের ব্যাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয় শক্তির প্রতি সম্পূর্ণ উপেক্ষার মানসিকতা মাথা চাড়া দিয়েছে।

অখিলভারতীয় কার্যকরী মণ্ডলের নিশ্চিত ধারণা যে, সম্প্রতি গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং তার ক্রিয়ান্থয়নের ফলে। সেইসব সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অসঙ্গতি দূর হয়ে যাবে। কার্যকরী মণ্ডল এও বিশ্বাস করে যে, সেইসব সিদ্ধান্ত ভারতের। মৌলিক ধারণা ‘ এক রাষ্ট্র এক জাতি’র অনুরূপ এবং সংবিধানের প্রস্তাবনায় বর্ণিত আমরা ভারতের নাগরিক’ আকাঙ্ক্ষাকে পুষ্টকারী পদক্ষেপ।

অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডলের এটাও ধারণা যে, রাজ্য পুনর্গঠনের সঙ্গে সঙ্গে ওই তিনটি ক্ষেত্রে বসবাসকারী সমস্ত শ্রেণীর সামাজিক ও আর্থিক বিকাশের নতুন দিগন্ত তৈরি হয়েছে। রাজ্য পুনর্গঠনের ফলে লাদাখ ক্ষেত্রের মানুষের দীর্ঘকালের চাহিদার পূর্তি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমগ্র বিকাশের রাস্তাও প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল আশা করে যে, উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের চাহিদাও শীঘ্ন পূরণ হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকার উদ্বাস্তু হিন্দু সমাজের সুরক্ষা এবং সম্মানজনক পুনর্বাসনের প্রক্রিয়াও শীঘ্রাতিশীঘ্র শুরু করা প্রয়োজন।

এটি ঐতিহাসিক তথ্য যে, মহারাজা হরি সিংহ‘বিলয়পত্রে স্বাক্ষর করে রাজ্যকে সম্পূর্ণরূপে ভারতে বিলয় করে দিয়েছেন, ৩৭০ ধারার দুরুপোযোগে উৎপন্ন সমস্যাগুলি দূর করে রাষ্ট্রীয় একাত্মতা, সংবিধান ও জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার জন্য ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও পণ্ডিত প্রেমনাথ ডোগরার নেতৃত্বে প্রজা পরিষদ আন্দোলনের সহযোগীরা এবং অবশিষ্ট ভারতের দেশভক্ত সমাজ সংঘর্ষ করেছে। গত ৭০ বছর ধরে রাজ্যের রাষ্ট্রীয় শক্তি বাকি ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখেছে। তাদের মধ্যে অনেকে প্রাণ বলিদান দিয়েছেন। সেনা ও সুরক্ষাবহিনীর কয়েক হাজার জওয়ান দেশের একতা ও সার্বভৌম রক্ষার জন্য শৌর্য-বীর্যের পরিচয় দিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে জীবনও বলিদান দিয়েছে। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল এদের সবার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছে।

অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল দেশবাসীকে আহ্বান করছে যে, মর্যাদা ও মূল ভাবনাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাজনৈতিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠুন এবং জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বিকাশ প্রক্রিয়ায় সহযোগী হয়ে রাষ্ট্রের একতা ও অখণ্ডতাকে পুষ্টকরুন। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল সরকারকেও আহ্বান করছে যে, এই ক্ষেত্রের নাগরিকদের সমস্ত আশঙ্কা দূর করে লাভপ্রদ, ন্যায়সঙ্গত শাসন ব্যবস্থা এবং আর্থিক বিকাশের দ্বারা তাদের আকাঙ্ক্ষার পূর্তি করুন।

প্রস্তাব-৩ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ ভারতের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব

সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল ভারতের প্রতিবেশী ইসলামি দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসি ও ক্রিস্টানদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ার জটিলতা সমাপ্ত করে তার সরলীকরণের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ প্রণয়ন করার জন্য সংসদের উভয় কক্ষ এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভাজন ধর্মের ভিত্তিতে হয়েছে। দুই দেশই তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা, পূর্ণ সম্মান এবং সমান সুযোগসুবিধা ভোগের আশ্বাস দিয়েছিল। ভারতের সরকার ও সমাজ উভয়েই সংখ্যালঘুদের হিতার্থে এবং তাদের বিকাশের লক্ষ্যে সাংবিধানিক দায়িত্ব-সহ নানাবিধ আইন ও নীতি প্রণয়ন করে। অন্যদিকে, ভারত থেকে আলাদা হওয়া দেশ নেহরু-লিয়াকত চুক্তি এবং সময়ে সময়ে নেতাদের আশ্বাস সত্ত্বেও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার পরিবেশ দিতে পারেনি। ওই দেশগুলিতে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের। ওপর ধর্মীয় উৎপীড়ন, তাদের সম্পত্তি জবরদখল এবং মহিলাদের ওপর নিত্যনৈমিত্তিক অত্যচারের ঘটনা তাদের নতুন এক দাসত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ওখানকার সরকারও অন্যায় আইন ও বিভেদ সৃষ্টিকারী নীতি প্রণয়ন করে ওই সংখ্যালঘুদের ওপর উৎপীড়ন আরও বাড়িয়েই দিয়েছে। ফলস্বরূপ, বিশাল সংখ্যায় সংখ্যালঘুরা ওই দেশগুলি থেকে পালিয়ে এসে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। দেশভাগের পরে ওই দেশগুলিতে সংখ্যালঘুদের জনসংখ্যার দ্রুত হাস এই তথ্যের সত্যত্য প্রমাণ করেছে।

এটা মনে রাখতে হবে যে, ভারতীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ, সংবর্ধন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ওখানে বসবাসকারী ভারতীয় সমাজেরও গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা ছিল। এই কারণে ভারতীয় সমাজ ও ভারত সরকারের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এই অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করার। গত ৭০ বছর ধরে এই বন্ধুদের জন্য সংসদে বহুবার চর্চা হয়েছে এবং কেন্দ্রের বিভিন্ন সরকারের পক্ষ থেকে সময়ে সময়ে অনেক ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু প্রক্রিয়ার জটিলতায় বহু সংখ্যক মানুষ আজও নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে অনিশ্চয়তা ও ভয়ের পরিবেশের মধ্যে বেঁচে রয়েছে। বর্তমান সংশোধনী আইনের বলে এই সমস্ত মানুষ সম্মানজনক ভাবে বাঁচতে পারবেন।

সংসদে চর্চার সময় এবং পরে সময়ে সময়ে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, এই আইনের বলে ভারতের একজন নাগরিকও প্রভাবিত হবেন না। কার্যকরী মণ্ডল সন্তোষ প্রকাশ করছে যে, এই আইন প্রণয়ন করার সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীদের আশঙ্কাকে দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এই আইন ওই তিন দেশ থেকে ধর্মীয় ভাবে অত্যাচারিত হয়ে ভারতে আসা দুর্ভাগা মানুষদের নাগরিকত্ব দেবার জন্য এবং কোনো ভাবেই কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার জন্য নয়। কিন্তু জিহাদি-বামপন্থী জোট, কিছু বিদেশি শক্তি কয়েকটি স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক দলের সমর্থনে সমাজের একটি অংশে কাল্পনিক ভয় ও বিভ্রান্তির পরিবেশ সৃষ্টিকরে দেশে হিংসা ও অরাজকতা সৃষ্টির কুৎসিত প্রয়াস করে চলেছে।

অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল এই সব কাজকর্মকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করছে এবং সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে দেশের সামাজিক সৌহার্দ্য ও রাষ্ট্রীয় একাত্মতানষ্টকারী শক্তির যোগ্য তদন্ত করে সমুচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার। অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল সমাজের সমস্ত শ্রেণী বিশেষ করে সচেতন ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের প্রতি আবেদন জানাচ্ছে যে, এবিষয়ে সত্যাসত্য উপলব্ধি করুন এবং সমাজে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ অটুট রাখতে ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র বিফল করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.