‘ডমরু যার, শাসন তার’, কাশী বিশ্বনাথ করিডরের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করে বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সোমবার বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ করিডরের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুরো ভোল পাল্টে দিয়েছেন কাশীর। আগে কাশীর মন্দির গঙ্গা থেকে দেখা যেত না। শুধু মন্দিরের চূড়া উপর থেকে উঁকি মারত। কিন্তু এখন গঙ্গা থেকে সোজা দেখা যাবে কাশীর মন্দির। ঢেলে সাজানো হয়েছে কাশী বিশ্বনাথ ধামকে। আর কাশীর এই নতুন রূপের মেগা উদ্বোধনে জাঁক-জমকের কোনও খামতি ছিল না।

করিডর তৈরির আগে, কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরটি গঙ্গা থেকে সরাসরি দেখা যেত না। ২০-২৫ ফুট চওড়া এই করিডরটি গঙ্গার ললিতা ঘাট থেকে মন্দির চককে সংযুক্ত করবে। পুণ্যার্থীরা গঙ্গাস্নান সেরেই সরাসরি কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের জ্যোতির্লিঙ্গকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। নতুন করিডরে এখন ঘাট থেকে সরাসরি মন্দির দেখা যাবে। এছাড়া, কাশী বিশ্বনাথ করিডরের আগে, ঘাট থেকে মন্দিরে যেতে একাধিক অলি-গলিই ভরসা ছিল। কিন্তু নতুন পরিকল্পনায় কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের বিশাল চত্বর সহ নিজস্ব একটি এলাকা থাকবে।

আজ এই কাশী বিশ্বনাথ করিডরের মেগা উদ্ধোধনে যে হালকা রাজনীতির ছোঁয়া থাকবে, এমন আন্দাজ আগে থেকেই করছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যখন কয়েক মাস পরেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন, তখন এই সুযোগ মোটেই হাতছাড়া করতে চাইবেন না যোগী আদিত্যনাথরা। আর শুরুতেই কংগ্রেসকে খোঁচা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “১০০ বছর আগে মহাত্মা গান্ধী বারাণসীতে এসেছিলেন। তখন তিনি সরু গলি ও নোংরা পড়ে থাকতে দেখে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। গান্ধীজীর নাম করে অনেকেই ক্ষমতায় এসেছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীই কাশীর সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন।”

রাজনৈতিক ইঙ্গিতবহ বার্তা আজ শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর গলাতেও। বলেন, “কাশীতে একটাই সরকার রয়েছে। যার হাতে ডমরু রয়েছে, সেই মহাদেবের সরকারই এখানে চলে। এই করিডরও মহাদেবের কৃপাতেই হয়েছে। আমরা তো কেবল তা বাস্তবে রূপান্তর করেছি।” কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী বললেন, “একটা সময় ছিল, যখন মানুষ বারাণসীর মানুষদের সন্দেহ করত। বলা হত, মোদীর মতো অনেকেই আসে-যায়, এভাবেই কাজ আটকে থাকে। এর পিছনে কিছুটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য় ছিল, কিছুটা ব্যক্তিগত স্বার্থ ছিল। কিন্তু কাশীবাসী তাদের ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসী। তাই প্রধানমন্ত্রীর আলাদাই টান রয়েছে কাশী বারাণসীর সঙ্গে। এদিন সেই কথা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, “কাশী যুগ যুগ ধরে নানা পরিবর্তন দেখেছে। বিভিন্ন সময়ে ঔরঙ্গজেব থেকে ব্রিটিশ শাসক, সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে। তবুও কাশীর উন্নয়ন থেমে থাকেনি। আজ উন্নয়ন, উৎকর্ষের আরও একধাপ এগিয়ে গেল কাশী। বিগত সাত বছর ধরে কাশীতে যে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছিল, আজ তার প্রথম ধাপ পূরণ হল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.