জুলাই মাসে ১৪ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত নয় দিন নেপাল ভ্রমণে গিয়েছিলাম । বেড়াতে নয় , ঠেলায় পড়ে । বিদেশ থেকে বন্ধুরা আমার উপর খুবই চাপ সৃষ্টি করেছিলেন , নেপালের অবস্থা একবার ভাল করে দেখে আসার জন্য ।
এক , সে দেশের হিন্দুদের পরিস্থিতি ও সমস্যাগুলি বুঝে সেগুলি সমাধানের জন্য কিছু পথনির্দেশ দেওয়া ও সহযােগিতা করার জন্য । পশ্চিমে বন্ধুদের এই অনুরােধ গ্রহণ করা আমার পক্ষে খুব সহজ ছিল না । বাংলার হিন্দুদের সমস্যার পাহাড় আমার সামনে।সে ছেড়ে চললাম নেপালের সমস্যা সমাধান করতে । কিন্তু পশ্চিমের হিন্দু বন্ধুরা আমাদের এত সহযােগিতা করে , ভারত , পাকিস্তান , বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার হিন্দুদের জন্য তাদের এত দরদ দেখেছি , যে তাদের কথা ফেলে দেওয়া আমার পক্ষে খুবই কঠিন । তাই কিছুটা অনিচ্ছায় যেতেই হল নেপালে । নেপালের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযােগও তারাই করিয়ে দিয়েছে ।
১৩ই জুলাই কলকাতা থেকে ট্রেনে করে গেলাম গোরখপুর , যোগীজীর শহর দেখতে দেখতে চলে গেলাম নেপালের সীমান্তবর্তী শহর সুনৌলি । একটা গেট পেরিয়ে ঢুকে গেলাম নেপালের ভিতরে কোন পাসপোর্ট , ভিসা , পারমিট কিছুই লাগে না । সেখানে দুজন হিন্দু যুবক আমাকে নিতে এসেছিল । একজন মধেসি , একজন পাহাড়ি । সেখান থেকে চলে গেলাম ১৫ কিলােমিটার দুরে ভৈরাওয়া শহরে । এটা নেপালের রূপানদেহী জেলায় পড়ে । এই জেলাতেই গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনী । আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান সারা বিশ্বের বৌদ্ধরা এখানে আসেন বুদ্ধদেবের জন্মস্থান দেখতে । ১৫ তারিখ সকালে আমিও দর্শন করলাম সেই বিখ্যাত লুম্বিনী উদ্যান যেখানে আজ থেকে ২৫০০ হাজার এর আগে মা যশােধরা জন্ম দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থকে । যিনি পরে বোধিলাভের পর সারা বিশ্বে প্রচার করেছিলেন করুণার বাণী ।
১৩ থেকে ২২ জুলাই আমি নেপালে পাঁচটি জেলা ভ্রমণ করতে পেরেছি । রুপানদেহী , কাস্কি , তানাহুঁ , গোরখা এবং কাঠমাণ্ডতে । এরমধ্যে একটু বেশিসময় থেকেছি কাস্কি জেলার পােখড়া শহরে এবং নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ।
পােখড়া একটি টুরিস্ট শহর । সারাবছরই আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম থাকে । হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই শহর থেকে বরফে ঢাকা পর্বত চূড়া মাছাপুছার এবং অন্নপূর্ণা রেঞ্জ দেখা যায় । আর আছে একটি বিশাল লেক যার মধ্যে আছে তালবাড়াহী ভগবতী মন্দির , নৌকা করে যেতে হয় । এই পোখড়া শহরের পাশেই পাহাড়ের উপরে আছে এক বৌদ্ধস্তুপ , নাম ওয়ার্ল্ড পীস প্যাগোড়া । এই শহরে আছে বিশাল লেকের ধারে কয়েক হাজার হোটেল , গেট হাউস । প্রায় সারা বছরই ভর্তি থাকে । এছাড়াও দেখলাম বিখ্যাত বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির এবং ভদ্রকালী মন্দির ।
পরবর্তী গন্তব্যস্থান ছিল তানাহু জেলার দমৌলি শহর । এই শহরের পৌরসভার নাম ব্যাস পৌরনিগম । এখানে আছে মহর্ষি বেদব্যাসের জন্মস্থান এবং সাধনক্ষেত্র ।মহাভারত রচয়িতা মহর্ষি বেদব্যাসের পিতা পরাশর মুনি ও মাতা ধীবরকন্যা সত্যবতীর সাক্ষাৎ ও মিলন হয়েছিল এখানেই নদীবক্ষে নৌকার উপর ।
কতবছর আগে এই ঘটনা তা বলা কঠিন । কিন্তু সেখানকার মানুষ সযত্নে ধরে রেখেছেন সেই স্মৃতিকে । সেখানে আছে ব্যাস গুফা( গুহা ) এবং পরাশর মুনি ও সত্যবতীর নানা স্মৃতিচিহ্ন । ওখানকার কমিটির লােকজনের সঙ্গে দেখা হল , কথা হল । তাঁদের দুটি সভাতেও বসার এবং আলোচনা করার সুযােগ পেলাম । তাঁদের কথা শুনলাম । আমিও তাদেরকে জানালাম যে মহর্ষি বেদব্যাসের স্মৃতিবিজড়িত এই স্থান , এটা শুধু হিন্দুদের তীর্থস্থান নয় , এটা সারা বিশ্বের হিন্দুধর্মের কেন্দ্রস্থান বলে মনে করি ।
তাঁরা জানালেন যে ব্যাস কোন একজন মাত্র ব্যাক্তির নাম নয় । মােট ২৮ জন শাস্ত্রকার এই ব্যাস উপাধি পেয়েছিলেন । এখানে যার জন্মস্থান তিনি হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস । এক লক্ষ শ্লোক সমৃদ্ধ মহাভারত এঁরই রচনা । এঁর গায়ের রঙ ঘোর কালো ছিল এবং দ্বীপে এঁর জন্ম হয়েছিল বলে তাঁকে শ্রীকৃষ্ণ দ্বৈপায়ন নামে অভিহিত করা হয় ।
এখানকার লোকের গভীর ধর্মভাব , ধর্মনিষ্ঠা , হিন্দুধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতি বিশ্বাস ও সরল আচরণ আমাকে মুগ্ধ করেছে ।
এখানে একজনের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম । তিনি বললেন , ১৯৪৭ সালে যখন আপনাদের দেশ স্বধীন হল তখন আপনাদের নাম ভারতবর্ষ রেখে ভুল করেছেন । আপনাদের দেশের নাম হিন্দুস্থান রাখা উচিত ছিল । আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কেন ? তিনি বললেন , আমরা তাে সমস্ত পূজা হোম যাগযজ্ঞের সময় যে সংকল্প করি তাতে আমরা বলি , জম্মুদ্বীপে ভারতবর্ষ । অর্থাৎ আমরা ভারতবর্ষের নিবাসী । আর আপনারা ভারত নামটা নিলেন , তাহলে আমরা কি সংকল্প থেকে ভারতবর্ষ কথাটা বাদ দিয়ে দেব ? হাজার হাজার বছর ধরে আমরা তাে নিজেদেরকে ভারতবর্ষের বাসিন্দা বলেই জেনে এসেছি ।
এই ব্যক্তির কথা শুনে আমি সত্যি নিজেকে লজ্জিত অনুভব করলাম । এরা নিজেকে ভারতবাসী বলতে চান । আর আমরা এদেরকে বলি নেপালী , বিদেশী ।
এখানে এসেই আমি সত্যি সত্যি নিজেকে অনুভব করতে পারলাম সাংস্কৃতিক ভারতের শিকড়টা কত ভিতরে ও কতটা মজবুত । এই শিকড় নড়িয়ে দেওয়ার কত চেষ্টা হচ্ছে । কিন্তু একে রক্ষার জন্য জাগ্রত ও সচেতন হিন্দু সমাজের যতটুকু প্রয়াস করা দরকার তার এক শতাংশও আমরা করি না ।
এই প্রসঙ্গে মনে পড়ল , ভারতের মধ্যেই নাগাল্যান্ড , মিজোরাম গত পাঁচশো বছরেও সম্ভবত একজনও সাধু সন্যাসী যান নি । অথচ সুদূর ইউরোপ , আমেরিকা থেকে সাদা চামড়ার খ্রীষ্টান মিশনারীরা ওখানে গেছেন । বছরের পর বছর ওই দুর্গম স্থানে থেকে সেখানে মানুষের চিকিৎসা ও সেবা করেছেন এবং তাদেরকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছেন । আজ ব্যাসক্ষেত্রে এসে মনে হল , হিন্দু ধর্মের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ভক্তি নিয়ে এখানে সাধারণ মানুষ বসে আছেন । কিন্তু এখানেও ভারত থেকে সাধু সন্নাসী ধর্মপ্রচারক আসেন না । যাই হােক ,এই দমৌলী শহরে মহর্ষি বেদব্যাসের জন্মস্থান ও কর্মভূমি দেখতে পাওয়া আমার জীবনে বড় সৌভাগ্য বলে আমি মনে করি । এই দমৌলি শহরের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি মনোরম ।
পরের গন্তব্যস্থল গোরখা । জেলা গোরখা , শহর গোরখা । এই জায়গার একটি বিশেষ ইতিহাস আছে ।১৭৬৯ সালের আগে পর্যন্ত আজকের নেপাল অনেকগুলি রাজেবিভক্ত ছিল । তার মধ্যে একটি ছোট রাজ্য ছিল গোরখা । এই রাজ্যের রাজা পৃথ্বীনারায়ণ শাহ।তিনি তাঁর সেনাবাহিনীকে নিয়ে এক বিজয় অভিযান চালিয়ে এই সমস্ত রাজ্যগুলিকে জোড়া লাগিয়ে যে বড় রাজ্যটি তৈরী করলেন সেটাই হল আজকের নেপাল । যেহেতু গোরখা রাজা এই রাজ্যটি গঠন করলেন , সেইজন্য এই সমগ্র রাজ্যতদবীরেকেের অধিবাসীদেরকে গোরখা নামে অভিহিত করা হতে লাগল । সুতরাং স্পষ্ট বোঝাই যাচ্ছে গোরখা শব্দটি কোন একটি নির্দিষ্ট জাতি-গােষ্ঠী বা এথনিক গ্রুপের নাম নয় । এটি একান্তই একটি ভৌগলিক নাম এবং একটি ছোট রাজ্যের নাম । জাতি বা এথনিসিটি বললে তামাং , গুরুং , রাই , ছেত্রী ইত্যাদি পড়বে ।
যাক ফিরে আসি গোরখা জেলায় । সেখানে পাহাড়ের অনেক উঁচুতেই আছে মহারাজা পৃথ্বীরাজ নারায়ণ শাহের দরবার । অর্ধেক উচ্চতা গাড়ি যায় তারপর হেঁটে উঠতে হয় । এখানেই বসত মহারাজের দরবার । এর মধ্যেওে আছে এক কালী মন্দির । সে মুর্তি পর্দায় ঢাকা থাকে । সাধারণ মানুষ দেখতে পাবেন না । সেখানে পশু বলি হয় । সেই দুর্গম দরবার ও মন্দির দেখে এলাম । সেখানেই আছে গােরখনাথজীর গুহা । বিশাল নাগ সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা গোরখনাথজী এই গুহাতেই তপস্যা করতেন । ছবি তোলা নিষেধ , তাও ছবি তুলে এনেছি । এই গুহাটি লোহার অস্ত্রে ভর্তি । অর্থাৎ গুরু গোরখনাথ নিরস্ত্র ছিলেন না তা সহজেই বোঝা যায় ।
গোরখা থেকে গেলাম কাঠমান্ডু . নেপালের রাজধানী । বিখ্যাত পশুপতিনাথ মন্দির দেখার জনা মন ছটফট ছিল । সৌভাগ্যক্রমে কাঠমান্ডুতে আমি যে হােটেলে উঠেছিলাম তার কাছেই এই পশুপতিনাথ মন্দির । গেলাম সকালে । বিশাল প্রাঙ্গণ । দেশ বিদেশের ভক্ততে ভর্তি । মূল মন্দিরের ভিতর ছবি তােলা নিষেধ । এখানে ছবি তুলতে পারি নি কিন্তু মন্দির দেখে মন ভরে গেল । তারপর কাঠমান্ডুতে আর কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করলাম , তার মধ্যে নীলকণ্ঠ মহাদেব মন্দির , বৌদ্ধস্তূপ , নারায়ণহিতি রাজপ্রাসাদ প্রভৃতি স্থান । বেশ বড় শহর । বেশ কিছু লােকের সঙ্গে করলাম । নেপালে বর্তমান শাসক দল নেপালী কংগ্রেসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে দেখা করলাম । নাম উহ্য রাখছি ।
ভ্রমণ বৃত্তান্ত এখানেই শেষ । এবার বলব নেপালের পরিস্থিতি সম্বন্ধে কয়েকটি কথা ।
সেই ১৭৬৯ থেকে নেপালে রাজতন্ত্র ছিল যা একটানা ২০০৭ সাল পর্যন্ত চলেছে । এই রাজারা ছিলেন হিন্দু রাজা । তাই নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র বলা হত ।
কিন্তু চীনের ষড়যন্ত্রের ফলে নেপালে কমিউনিষ্ট পার্টি ও মাওবাদী রাজনৈতিক দল নেপালের সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে দেশে চরম অস্থিরতা তৈরী করল। তার ফলে এই মাওবাদীরা একসময় ক্ষমতা দখল করে দেশের নতুন সংবিধান চালু করল এবং নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র রাখল না । ২০০৭ সালে নেলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হল । নতুন সংবিধান চালু হল এবং নেপাল হিন্দুষ্টের পরিবর্তে সেকুলার রাষ্ট্রে পরিণত হল । তার ফল হল এই যে খ্রীষ্টান মিশনারী ও মোল্লা মৌলবাদের দ্বারা সহজ সরল নেপালীকে ধর্মান্তরিত করার কাজটা আরও সহজ হয়ে গেল । আজ নেপালের বাঁকে এবং কপিলাবস্তু দুটি জেলায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট হয়ে গেছে । পার্শ্ববর্তী ডাং জেলাতেও মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ হয়ে গেছে । এইগুলি সবই ভারত সংলগ্ন সমতল ক্ষেত্র । আর উপরের দিকে পাহাড়ি ক্ষেত্রে খ্রীষ্টান ধর্মান্তকরণ জোর কদমে চলছে । তার সঙ্গে আছে চীনের প্রভাব । এগুলিকে আটকাতে না পারলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই নেপালে হিন্দুদের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে ।
এছাড়াও নেপালের বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে । পূর্ব – পশ্চিমে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত এই দেশে নীচের দিকে ভারত সংলগ্ন ২২ টি জেলাকে বলা হয় তরাই অঞ্চল । এর অন্য নাম মধেস । এই অঞ্চলের বসবাসীদের মধেসী নামে ডাকা হয় । এই ২২ জেলার উপরে বাকী ৫৩ টি জেলার অধিবাসীকে পাহাড়ি বলে । এই পাহাড়ি ও মধেসীদের মধ্যে চেহারার স্পষ্ট তফাৎ আছে । এবং এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে খানিকটা মনের অমিল আছে । পারস্পরিক বিশ্বাসের যথেষ্ট অভাব আছে । মধেসীরা মনে করে তারা নেপালের বিভিন্ন সুযােগ সুবিধা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত । আর পাহাড়িরা মনে করে মধেসীদের এক পা নেপালে আর এক পা ভারতে । তাই মধেসীরা নেপালের সঙ্গে একান্ত হতে পারে না। এই মনের অমিল ও বিশ্বাসের ঘাটতি দূর করা বেশ কঠিন বলে মনে হয়েছে।
নেপাল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। বিশেষ করে জলবিদ্যুৎ তৈরীর অপার সম্ভাবনা । এখানে সেই বিদ্যুৎ তৈরী করে নেপাল নিজের প্রয়ােজন মিটিয়েও ভারতকে বিক্রী করতে পারে । তার ফলে উভয় দেশই উপকৃত হবে । এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ বনজ সম্পদ সেখানে আছে । সেখানে বিভিন্ন ফলমূল ও আয়ুর্বেদিক গাছগাছড়া চাষ ভালাে হতে পারে । কিন্তু এসব কাজে ভারতের যতটা আগ্রহ থাকা উচিত তা নেই । তাই নেপালের অর্থনীতিতে চীনের প্রভাব বেড়েই চলেছে । এটা কখনই ভালাে লক্ষণ নয় ।
নেপালের সাধারণ মানুষ অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ । তাদের ভাষা নেপালি বা গোর্খালি( দুটেই এক ) দেবনাগরী লিপিতে লেখা হয় । তাই যে কোন হিন্দী জানা লোক খুব সহজেই নেপালি ভাষা পড়তে পারবে । নেপালের মানুষ কখনাে ইংরাজি সাল ব্যবহার করে না । তারা বিক্রম সংবত ব্যবহার করে । পূজা পাঠ ও কর্মকান্ডের আধিক্য আছে । আছে প্রাচীন পরম্পরার প্রতি শ্রদ্ধা । কিন্তু আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কিছুটা অভাব আমি লক্ষ্য করেছি । পশুপতিনাথ মন্দিরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা সাধারণ মানুষের আছে । এই পশুপতিনাথই গােটা নেপালকে এক রেখেছে । কিন্তু কোন ধর্মীয় আইকন সেখানে নেই । রাজনৈতিক দলনেতাদের প্রতি সাধারণ মানুষের কােন শ্রদ্ধা নেই । যুব সমাজের মনে কােন শক্তি নেই যা দরগর বলে আমি সামনে কোন আদর্শ ব্যক্তিত্ব নেই যা থাকা দরকার বলে আমি মনে করি । নেপালের হিন্দুদের হিন্দুত্ববোধকে taken for granted ধরে নিলে ভুল হয়ে যাবে । সময় থেমে থাকে না । তাই ভারতের হিন্দু সংগঠন ও হিন্দু ধর্মীয় সংস্থাগুলিকে নেপালের দিকে মনযোগ দিতেই হবে ।
এ সম্বন্ধে আমার যা কিছু পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্তকে যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবো এবং নিজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবো ।
নেপাল সংস্কৃতি ভারতেরই অঙ্গ । নেপালের বীর সন্তানরা আজও ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সমৃদ্ধ করে চলেছে । তাই নেপালকে ভারতের বন্ধু করে রাখা আমাদেরই কর্তব্য ।
সংগৃহীতঃ স্বদেশ সংহতি সংবাদ আগষ্ট ২০১৭ থেকে
সঙ্কলনঃ শ্রী শুভঙ্কর নাগ …
লেখক #পথপ্রদর্শক_মাননীয়_তপন_ঘোষ