ভারত-পাকিস্তান ঘাত-প্রত্যাঘাত শুধু সীমান্ত পাড়েই থেমে নেই, দু’দেশের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে সাইবার-যুদ্ধও। ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে আত্মঘাতী জইশ হামলার ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি, ভারতের ওয়েবসাইটগুলিতে একপ্রকার আছড়ে পড়ে পাক হ্যাকাররা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারতের প্রায় ৯০টি সরকারি ওয়েবসাইট ও ক্রিটিক্যাল সিস্টেম হ্যাকিংয়ের চেষ্টা চালায় পাকিস্তানি হ্যাকাররা।
সরকারি সূত্রে খবর, পুলওয়ামায় হামলার সময়েই ভারতের সমস্ত ব্যস্ত নেটওয়ার্কগুলি হ্যাক করার চেষ্টা শুরু করে পাক হ্যাকাররা। তবে আগে থেকেই সতর্ক থাকায় সেই হামলা রুখে দেন ভারতের সাইবার বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, শত চেষ্টা করেও ক্রিটিকাল সিস্টেমের ফায়ারওয়ালের নিরাপত্তা ভেদ করতে পারেনি হামলাকারীরা। তখন হানাদারদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় ফিনান্সিয়াল সিস্টেম ও পাওয়ার গ্রিড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের কথায়, আক্রমণের সময় ও ধাঁচ দেখে অনুমান করা গেছে এই হ্যাকিংয়ের চেষ্টা প্রথম শুরু হয় বাংলাদেশ থেকে। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে ভাবে পরিকল্পনামাফিক সাইবার নেটওয়ার্কে হামলা চালানোর চেষ্টা হয়েছে তাতে স্পষ্ট এর পিছনে ভারতের মিত্র দেশ বাংলাদেশের সহায়তা ছিল। একদিকে জঙ্গি হামলা নিয়ে ভারত যখন মেতে থাকবে, সে সময় সরকারি সাইটগুলি থেকে জরুরি তথ্য চুরি করে নেবে পাকিস্তান, হ্যাকারদের লক্ষ্য ছিল এটাই।’’
পাকিস্তানের সাইবার হানা রুখতে ভারতের তরফেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে সরকারি সূত্রে খবর। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ পুলওয়ামা হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়ার পর আর বসে থাকেননি ভারতের সাইবার বিশেষজ্ঞরা। শত্রুপক্ষের থেকে যে কোনও ভাবে আক্রমণ আসতে পারে বুঝেই চটজলদি পাকিস্তানের প্রায় ২০০ ওয়েবসাইট হ্যাক করে নেয় ভারতের হ্যাকিং গ্রুপ ‘টিম আই ক্রু।’ তাদের দাবি ছিল, পাকিস্তানের বেশ কিছু ওয়েবসাইটের সূত্র ধরে খবর চালাচালি করতে পারে জইশ জঙ্গিরা। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই ওই ওয়েবসাইটগুলি হ্যাক করে নজর রাখা শুরু হয় ভারতের তরফে।
এই মুহুর্তে ভারতের সমস্ত ওয়েবসাইট সুরক্ষিত বলেই জানিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। তবে পাল্টা সাইবার হানা রুখতে আগ্রিম সতর্কতা জারি হয়েছে সমস্ত সরকারি দফতরে। ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়রস’ কোনও ভাবেই যাতে লঙ্ঘন করা না হয়, সে বিষয়ে কড়া নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। সাইবার সংস্থাগুলি সূত্রে খবর, ভারতের কোনও ওয়েবসাইট হ্যাক করতে না পেরে মিথ্যা খবর ও গুজব ছড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে পাক হ্যাকাররা। কাশ্মীরের মানুষের উপর হামলা হচ্ছে, রাজৌরি সেক্টরের সাধারণ মানুষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে ইত্যাদি গুজব ছড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।