গণধর্ষণ মধ্যপ্রদেশে, স্কুল শিক্ষিকাকে টেনে নিয়ে গিয়ে নারকীয় নির্যাতন চালাল চারজন

ধিক্কার শব্দটা ক্রমশই তার মর্যাদা হারাচ্ছে। গণরোষ, প্রতিবাদ, আইনকানুন সবকিছুই অর্থহীন হয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। হায়দরাবাদ, তেলঙ্গানা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, কলকাতা, মধ্যপ্রদেশে—একের পর নারী নির্যাতনে রক্তাক্ত হচ্ছে দেশ। মাথা নত হচ্ছে লজ্জায়। হায়দারাবাদের পুলিশি এনকাউন্টার নিয়ে যখন তর্ক-বিতর্কের আগুন জ্বলছে দেশে সেই সময়েই বিহার, কলকাতায় একের পর এক শিশু ধর্ষণ হয়েছে। এবার মধ্যপ্রদেশ। এক স্কুল শিক্ষিকার উপর নৃশংস নির্যাতন চালাল চারজন।

ঘটনা বুলন্দশহরের। পুলিশ জানিয়েছে, সিধি শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকাকে সন্ধেবেলা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় চারজন। ধর্ষণের পরে মারধরও করা হয় শিক্ষিকাকে। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।

নির্যাতিতা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ স্কুলের পরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। স্কুল থেকে তাঁর বাড়ির পথ কিছুটা নির্জন। খুব দ্রুতই হাঁটছিলেন তিনি। আচমকাই তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায় চার যুবক। তিনি পালানোর চেষ্টা করলে তারা চুলের মুঠি ধরে টেনে আনে তাঁকে। এরপর টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় রাস্তার পাশে একটি নির্জন স্থানে। মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে যৌন নির্যাতন চালানো হয় তাঁর উপর। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা মারধরও করে তাঁকে। তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা পালিয়ে যায়।

কোনওরকমে টলতে টলতে বাড়ি ফেরেন তিনি। সব কথা জানান পরিবারকে। ওই দিন রাতেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় বাচ্চু লোনিয়া, ভিরু লোনিয়া, নরেন্দ্র লোনিয়া ও শিবশঙ্কর লোনিয়া নামে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় তারা ধর্ষণের কথা স্বীকারও করেছে।

হয়াদরাবাদে গণধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত চার যুবকের এনকাউন্টার নিয়ে তোলপাড় হয়েছে দেশ। ধর্ষকদের কড়া শাস্তির দাবিতে কঠিন আইন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে সরব হয়েছেন অনেকেই। তার ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফের বিহারে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক অটোচালকের বিরুদ্ধে। কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকাতে ৬ বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উত্তরপ্রদেশ, তেলঙ্গানায় একের পর এক নারকীয় ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে উন্নাওয়ের গণধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে পাঁচজন। গতকাল রাতে হাসপাতালেই থেমে গেছে উন্নাও নির্যাতিতার জীবনের লড়াই। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, গণরোষ, কড়া আইন আনার চেষ্টা সব কিছুর মধ্যেও এমন মর্মান্তিক ঘটনা থামার নাম নেই সেটা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ঘটনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.