‘এমন ধমক কী কখনও খেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ?’ শুক্রবার সকালে রাজভবন থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই এমন আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। কার্যত এমন চিঠি পাঠিয়ে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। “নাটক বা রাজনীতি নয়। এই মুহূর্তে আসল কাজ ও সুশাসন দরকার।” এই ভাষাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) পত্রাঘাত করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। বৃহস্পতিবার রাতে একদফায় মুখ্যমন্ত্রীকে পাঁচ পাতার চিঠি লিখে প্রাথমিক জবাব দেন ধনখড়। শুক্রবার সকালে ফের দ্বিতীয় কিস্তির জবাব সাত পাতার চিঠি দেন তিনি। রাজ্যপাল লিখেছেন, “যাঁদের একটু সাহস রয়েছে, তাঁদের বলুন আপনাকে আয়না দেখাতে। এই সংকটের পরিস্থিতিতে মাইক, ঝাঁটা হাতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘুরে বেড়ানো কতটা বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে। এই মুহূর্তে আসল কাজ ও সুশাসন দরকার, নাটক বা রাজনীতি নয়।”
রাজ্যপাল লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনার কাজ হল সংবিধান সম্মত পথে চলা, আর আমার কাজ হল সংবিধানকে সুরক্ষিত রাখা। সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপালের প্রতি আপনার কিছু দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে তার অবমাননা করেছেন আপনি।” নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা প্রতিবাদের সময় মুখ্যমন্ত্রী রাষ্ট্র পুঞ্জের তত্ত্বাবধানে যে ভোটাভুটির দাবি করেছিলেন সেই প্রসঙ্গও এখানে তুলে এনেছেন রাজ্যপাল।
জগদীপ ধনখড় লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যাঁকে সম্মানের সঙ্গে ‘দিদি’ বলে ডাকেন, তাঁর কাছ থেকে এই সংকটের সময় তাঁদের এটাই প্রাপ্য। চিকিৎসকদের আটটি সংগঠন পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সে কথা শোনা হচ্ছে না। আপনি যে ভাবে সব ঢাকা চাপা দিতে চাইছেন, তার পরিণতি খুবই যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। এমনকি আইসোলেশন ওয়ার্ডে মোবাইল ফোন বন্ধ করা হয়েছে।” তিনি আরও লিখেছেন, “করোনা সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে যত ছবি উঠে আসবে ততই ভাল। তাই রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে আপনার রাজনৈতিক অ্যান্টেনা নামিয়ে রাখুন, সংঘাতের পথ ছেড়ে কাজ করুন।”