সীমান্তে ভারত-চিন সংঘাত: এক নজরে রইল M-777 সম্পর্কে পাঁচ তথ্য

বোফর্স কেলেঙ্কারির পর কেটে যায় কয়েক বছর৷ বছরের পর বছর কেটে গেলেও ভারতীয় সেনার হাতে কোনও কামান এসে পৌছয়নি৷ যদিও বছরখানেক আগে আমেরিকা থেকে দেশে এসে পৌঁছয় 145 M-777 আল্ট্রা লাইট কামান৷

যুদ্ধের জন্যে এই কামান গত কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। পোখরান রেঞ্জে হয় এই কামানের পরীক্ষা। তাতে পাস করে গিয়েছে 145 M-777 আল্ট্রা লাইট। লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা। মিসাইল থেকে শুরু করে মোতায়েন করা হয়েছে ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট। বিপুল সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনার এই কামান সম্পর্কে পাঁচটি অজানা তথ্য এক নজরে-

১) এই দুটি কামানই 25 রেডি-বিল্ট অস্ত্রের অংশ৷ আগামি ২০২১-র মধ্যে মোট ১৪৫টি কামান নিয়ে আসা হবে আমেরিকা থেকে৷ প্রথম ২৫টি আমেরিকা থেকে আনা হলেও বাকি ১২০টি কামান তৈরি হবে ভারতে৷ মোদী সরকারের মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের অধীনে এই কামান গুলি তৈরি হবে৷ BAE সিস্টেমের অধীনে মাহিন্দ্রা ডিফেন্সের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই কামানগুলি তৈরি হবে৷ ৪০টি ভারতীয় সংস্থার উদ্যোগে এই কামানগুলি তৈরি করা হবে৷

২) চিনের সীমান্তে মোতায়েন করা মাউন্টেন স্ট্রাইক কর্পসের ব্যবহারের জন্য মূলত আনা হচ্ছে এগুলি৷ ২০২৫ সালের মধ্যে সরকার প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে এই প্রজেক্টটি সম্পন্ন করতে৷ M777 হালকা কামানটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্থাপন করা হবে৷

৩) হালকা কামানগুলির ওজন মাত্র ৪,২১৮ কেজি৷ লাদাখ কিংবা কারগিলের মতন অতি উচ্চতায় যে যুদ্ধক্ষেত্রগুলি অবস্থিত সেখানে হেলিকপ্টারে কামানগুলিকে নিয়ে গিয়ে মোতায়েন করা হবে৷ M777 হালকা কামানটি টাইটেনিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি৷

৪) ১,০৯০টিরও বেশি M777 হালকা কামান সারা বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করা হবে৷ আফগানিস্তান এবং ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় এই হালকা বিমান গুলির সাহায্যে যুদ্ধ করা হয়৷ এই সমস্ত কামানগুলি আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা মিলিটারিরা চালনা করে৷

৫) লারসেন অ্যান্ড টারবো সংস্থার সঙ্গে ৪,৩৬৬কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে, যার ভিত্তিতে দক্ষিণ কোরিয়াকে টেকনলজি পার্টনার করে তৈরি করা হয়েছে ১০০টি কামান৷

প্রসঙ্গত, চিনকে চমকে লাদাখ সীমান্তে লং রেঞ্জ মিসাইল নির্ভয় মোতায়েন করেছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ওই পারে একাধিক মিসাইল মোতায়েন করেছে চিন, বলে সেনা সূত্রে খবর। এই সারফেস টু সারফেস মিসাইল নির্ভয় প্রায় হাজার কিমি দূরে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে পারে বলে ভারতীয় সেনা জানিয়েছে। মাটি থেকে ১০০ মিটার থেকে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ওপরে উঠতে পারে নির্ভয় মিসাইল।

শুধু তাই নয়, ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট মোতায়েন রয়েছে। যে কোনও উস্কানির জবাব দিতে যে তৈরি তা কার্যত হাবেভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে ভারত। অন্যদিকে, নয়াদিল্লি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করলেই আত্মরক্ষার জন্য ভারতীয় সেনা গুলি চালাবে চিনা সেনাকে লক্ষ্য করে। তাই চিনা সেনা যেন সেই ভুল না করে। চিনকে কার্যত সাবধানবাণী শুনিয়েছে ভারত।

গত কয়েক মাস ধরেই লাদাখ সীমান্তে চিনা সেনার অবস্থান নিয়ে সংঘাত চলছে। একাধিক সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরের বৈঠকের পরেও কোনও লাভ হয়নি। উচ্চপদস্থ সরকারি সূত্র বলছে গালওয়ান ভ্যালির সংঘাতের পর এটাই ভারতের সবথেকে কড়া সতর্কবার্তা।

এদিন ভারত জানিয়ে দেয় চিন যেন মনে রাখে, কোনওভাবেই ভারতীয় সেনা নিয়ন্ত্রণরেখা পার করা বরদাস্ত করবে না। চিনা সেনাকে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হতে দেখলেই গুলি চালাবে ভারতীয় সেনা। কোনও রেয়াত করা হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.