হায়দরাবাদে ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে অভিযুক্ত চার জনই মারা যায় পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, যখন ঘটনা পুনর্নিমাণের জন্য অভিযুক্তদের ঘটনা স্থলে নিয়ে যাওয়া হয় তখনই সেই অভিশপ্ত হাইওয়েতেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে চার অভিযুক্তের। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পালানোর চেষ্টা করছিল। তখনই তাদের গুলি করা হয়। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মুখ খুললেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
তিনি জানান, সকালে উঠে খবরটা শুনে খুবই ভালো লেগেছে। তিনি জানান, অন্ততপক্ষে মেয়েটার আত্মা শান্তি পেয়েছে বলে তিনি মনে করেন। হায়দরাবাদের পুলিশকে এই এনকাউন্টারের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ এনকাউন্টারের প্রসঙ্গে জানিয়েছে, পালানোর চেষ্টা করেছিল অভিযুক্তরা। সেই কথার প্রেক্ষিতে বিজেপি নেত্রী বলেন, এই জঘন্যতম ঘটনার পরেও পালানোর চেষ্টা করছিল অভিযুক্তরা! তিনি বলেন, হায়দরাবাদ পুলিশ যে এইভাবে পুরোপুরি এনকাউন্টার করে খতম করেছে তাঁর জন্য ধন্যবাদ জানাই পুলিশকে।
অন্যদিকে পশু চিকিৎসক সেই তরুণীর বাবা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছেন, অবশেষে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পেল। তেলেঙ্গানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তরুণীর বোন বলেন, ‘একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
তেলেঙ্গানায় গত সপ্তাহে বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে, যাতে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। ২৬ বছরের ওই তরুণীর আধপোড়া দেহাংশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে সাইবারাবাদ পুলিশ। মহম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলু (২০) নামে এই চার জনই ট্রাকের কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন, ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণ ও ৩৬২ ঝারায় অপহরণের অভিযোগ আনা হয়।
হায়দরাবাদ গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে গত সোমবারই দিল্লির যন্তরমন্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। কালো ব্যান্ড এবং ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান অনেকে।
সাইবারাবাদ পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই তরুণীর স্কুটারের চাকা পাংচার করে দেয় ওই চার অভিযুক্ত। এরপর তাঁকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়। টোল প্লাজার কাছে একটি জায়গায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয় ওই তরুণীকে। সেখানেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। শ্বাসরোধ করে তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর তাঁর দেহ জ্বালিয়ে দেয় অভিযুক্তরা।
ওই তরুণীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল হয় সংসদের উভয়কক্ষ। সোমবার রাজ্যসভায় নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ তথা অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। তিনি বলেন, ধর্ষকদের আমজনতার হাতে তুলে দেওয়া হোক। মানুষই ওদের পিটিয়ে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিক। জয়ার সেই দাবিকে সমর্থন করেছেন এরাজ্যের তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী, বিজেপি এমপি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও।