সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের ফোন ট্যাপিং-এর তত্ত্বকে সমর্থন করতে গিয়েই কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেছিলেন, সরকার তাঁর সন্তানদের ইন্সটাগ্রামও হ্যাক করে আড়ি পাতা ও নজরদারি করার চেষ্টা করছে। প্রিয়াঙ্কা অভিযোগ করে ভুলে গেলেও, ভোলেনি কেন্দ্র। সেই কারণেই বুধবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক। সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সন্তানদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়নি।
তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রেই জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদিকা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তাঁর সন্তানদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার দাবি জানালেও, প্রাথমিত তদন্তে অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কোনও গতিবিধিই নজরে পড়েনি। বিগত এক মাসের মধ্যে ওই অ্য়াকাউন্টগুলি থেকে কোনও সন্দেহজনক পোস্টও করা হয়নি। তাহলে কীভাবে প্রিয়াঙ্কা বুঝলেন ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হচ্ছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। অনেকের মতে, কেবল সরকারের উপর দোষ চাপাতেই মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন প্রিয়াঙ্কা।
ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে গতকালই জানানো হয়েছিল যে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তাঁর সন্তানদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার যে দাবি জানিয়েছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তথ্য প্রয়ুক্তি মন্ত্রক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম এই তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় রবিবার। সমাজবাদী পার্টির তিন নেতার বাড়িতে আয়কর হানা প্রেক্ষিতে অখিলেশ যাদব বলেছিলেন, এই তল্লাশি অভিযানের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, “নির্বাচন আসছে, তাই এইসব হচ্ছে। এখন তো সবে আয়কর বিভাগ এসেছে, এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আসবে, সিবিআই আসবে। কিন্তু সাইকেল (সমাজবাদী পার্টির প্রতীক) চলতেই থাকবে। এর গতি আটকানো যাবে না।”
সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে অখিলেশ বলেছিলেন, “দলের সমস্ত নেতাদের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। রোজ বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সেই রেকর্ডিং শোনেন।”
মঙ্গলবার অখিলেশের এই দাবি প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেত্রীর মতামত জানতে চাওয়া হলে, তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ফোন ট্যাপিং ছাড়ুন…আমার সন্তানদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টও হ্যাক করা হচ্ছে। এই সরকারের কি কোনও কাজ নেই?”
সরকারি সূত্রের দাবি, প্রিয়াঙ্কার এই অভিযোগে সরকার বিস্মিত। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এখনও অবধি ইন্সটাগ্রাম কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ জানাননি। তবে সরকার অভিযোগটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখায়, তদন্তে সহযোগিতার জন্য তারা ইন্সটাগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
আগামী বছরই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এই দাবিতে মুখ পুড়ল কংগ্রেসের।