দার্জিলিং-এ আসার কয়েকদিন পূর্বে নিবেদিতা প্রাচীন বৌদ্ধধর্ম হইতে একটি প্রার্থনা বাণী অনুবাদ করিয়াছিলেন এবং উহা মুদ্রিত করাইয়া তাহার বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে বিতরণ করিয়াছিলেন।
সম্ভবত তিনি বুঝিতে পারিয়া ছিলেন ইহাই তাঁহার বিদায়-বাণী।
ভগিনী নিবেদিতা সমগ্র জীবন ছিল প্রার্থনা… উমা-হৈমবতীর যে উপাখ্যান তিনি আমাদের নিকট জীবন্ত ভাষায় বর্ণনা করিয়াছিলেন, নিবেদিতার মৃত্যুশয্যাপার্শ্বে বসিয়া সেই উপাখ্যানটি আমার বার বার মনে পড়েছে।
এই শরৎ ঋতুতেই তো উমা পিত্রালয়ে আসিয়া থাকেন।
আমার সম্মুখে তার আর একটি উমাকে দেখিতেছি, যিনি বহু জন্মের পরে তাহার নিজ আবাস ভারতবর্ষে ফিরিয়া আসিয়াছেন।…
তারপর অন্তিম-মুহূর্তে নিবেদিতার কণ্ঠ হইতে যখন অস্ফুট স্বরে উচ্চারিত হইল : অসতো মা সদ্গময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়, মৃত্যোর্মামৃতং গময়, আবিরাবির্ম এধি।। রুদ্র যত্তে দক্ষিণং মূখং তেন মাং পাহি নিত্যম্ ৷৷
তখন দেখলাম তার সমস্ত মুখখানি একটি দিব্যজ্যোতিতে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। নিমীলিত নয়নে নিবেদিতা ভারতের ধ্যানে ডুবিয়া গেলেন।
– লেডি অবলা বসু
আজ তাঁর প্রয়াণ দিনে প্রণতি।