মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাঁর মন্ত্রিসভার প্রথম প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন মনোহর পারিক্কর। আড়াই বছর সেই পদে ছিলেন তিনি। আর তার মধ্যেই জঙ্গি হামলার জবাব দিতে সীমান্ত পার করে ভারতীয় সেনা।
২০১৬, ২৮-২৯ সেপ্টেম্বরের রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে আসে ভারতীয় সেনার স্পেশঅল ফোর্স। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে শিলমোহর দিয়েছিলেন পারিক্কর। সেই অভিযানের পর ১২৭ কোটি ভারতবাসীকে ক্রেডিট দিয়েছিলেন পারিক্কর। সেই অভিযানেরও আগে মায়ানমার সীমান্তে বড়সড় জঙ্গিদমন অভিযান চালিয়েছিল ভারত, সেটাই পারিক্করের আমলেই।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সিদ্ধান্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাঁর কৃতিত্ব বাড়িয়ে দিয়েছিল অনেকটাই। একটি অভিযানেই বদলে গিয়েছিল পাকিস্তানের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি। দেখিয়ে দিয়েছিলেন, চাইলে ভারতও পারে পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে আসতে। উরিতে জঙ্গি হামলার পর সেনাবাহিনীকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন তিনি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রক ছাড়ার পর পারিক্কর বলেছিলেন, আসে ২০১৫-র জুন মাস থেকেই শুরু হয়েছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর পরিকল্পনা৷ নাগাল্যান্ডে সেনা কনভয়ে খাপলাং জঙ্গি হানার পরেই সেই পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা৷
২০১৫-র ৪ জুন, উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন(কে) মনিপুরের চন্দেল জেলায় ভারতীয় সেনা জওয়ানদের ওপর হামলা করলে ১৮জন সেনা শহিদ হন৷ এরপর ৮জুন ভারত, ভারত-মায়ানমার সীমান্তে এই হামলার প্রত্যুত্তরে দিয়ে প্রায় ৭০-৮০ জন জঙ্গিকে খতম করে আসে৷ এবার ফোর্স ও প্যারা কমান্ডো মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে গিয়ে সেই অভিযান চালিয়ে আসে। যে অভিযান ‘হট পারস্যুট’ হিসেবে পরিচিত। মাত্র ৪০ মিনিটের অভিযানে জঙ্গিদের খতম করে দিয়ে এসেছিল সেনা। ভারতে হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র।
পারিক্কর জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমের একটি প্রশ্নে তাঁর খারাপ লেগেছিল, যখন এক টেলিভিশন সঞ্চালক রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোড়কে প্রশ্ন করেছিলেন, পশ্চিমেও এই সাহস এবং ক্ষমতা তারা প্রদর্শন করতে পারবে কিনা৷ প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও জানান, সেসময় এই প্রশ্ন তাঁকে আঘাত করলেও তিনি এর প্রত্যুত্তর সঠিক সময়ে দেওয়ার প্রতীক্ষায় ছিলেন৷