গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি : পুনর্জীবন পাওয়া শতাব্দী প্রাচীন এক পুরাকীর্তি

 

জয় বাবা ফেলুনাথ ছবির প্রায় প্রথম দিকের দৃশ্য, রিক্সায় চড়ে কাশীতে হাজির হচ্ছেন ফেলু এবং তাঁর দলবল। মন্দির দেখলেই জটায়ু প্রণাম করছেন, এই দেখে তোপসে বলে ওঠে, ‘তার চেয়ে হাতটা মাথায় ঠেকিয়ে রাখুন না, নইলে তো হাত ব্যথা হয়ে যাবে।’ আপনি যদি ঈশ্বরভক্ত হোন, তবে উত্তর চব্বিশ পরগনার বৃহত্তর আগরপাড়া, পানিহাটি-সোদপুরে অঞ্চলে আসলে আপনার জটায়ুর মতোই দশা হবে। হাত নামাতেই পারবেন না! কারণ, এ চত্বরে মন্দিরের অভাব নেই। তাদের মধ্যে কোনওটা কোনওটা জনপ্রিয় আবার কোনওটা আজও জনশ্রুতির বাইরে থেকে গেছে। তবে এদের মধ্যে মিল একটিই, প্রতিটির সমৃদ্ধ ইতিহাস বিদ্যমান। তেমনই একটি মন্দির তথা পুরাকীর্তি হল গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি, বয়সে শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দির রাজ্য সরকারের ‘হেরিটেজ সাইট’ তকমা কিন্তু এখনও অনেকাংশে আড়ালে রয়ে গিয়েছে।

ক্ষেত্র সমীক্ষার কাজে গিয়ে প্রথমেই কথা হল, নরেশ নামের এক যুবকের সঙ্গে, তিনি মন্দিরেই থাকেন। মন্দিরের ইতিহাস  জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অনেকদিন হল হেরিটেজ পেয়েছে। দক্ষিণেশ্বরেরই এটা একটা।” এহেন উত্তর পেয়ে হতাশ হলাম, বুঝলাম বর্ধিত সংস্করণ বোঝাতেই চাইলেন। ইতিহাস হয়ত এভাবেই হারিয়ে যায়। কিন্তু মন্দিরের ইতিহাস কী জানাচ্ছে?

অনেকে বলেন ছোটো দক্ষিণেশ্বর। এক ঝলক দেখলে মনেও হবে, ঠিক তাই। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রানি রাসমণির নাতবউ, গোপালকৃষ্ণ দাসের বিধবা স্ত্রী গিরিবালা দাসী। মন্দিরে নিত্য পূজিত হন রাধা-গোবিন্দ। গিরিবালা দেবীর নামেই মন্দিরের নাম হয়েছে গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি। বাংলার ১৩১৮ সনের ১৮ জ্যৈষ্ঠ, বৃহস্পতিবার (১৯১১ সাল, ১ জুন) মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। অর্থাৎ মন্দিরের বয়স এখন ১১২ বছর। নির্মাণকার্যে খরচ হয়েছিল প্রায় তিন লক্ষ টাকা। অবসরপ্রাপ্ত ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার গগনচন্দ্র বিশ্বাস এবং এস এম ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি মন্দিরটি তৈরি করেছিল। 

মন্দির প্রাঙ্গণ প্রাচীর ঘেরা। মূল মন্দিরটিতে রাধাগোবিন্দ, কষ্টিপাথরের কৃষ্ণ ও অষ্টধাতুর রাধা বিরাজমান। সঙ্গে রয়েছে গণেশ, নারায়ণ শিলা, অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি এবং গিরিবালা দেবীর জপ রতা পিতলের মূর্তি। মন্দিরটি দক্ষিণমুখী, পঞ্চরত্ন। ৭ ফুট উঁচু বেদীর উপর অবস্থিত। মন্দিরের প্রবেশপথের সিঁড়ির দুপাশে পাথরের দুই নারী মূর্তি রয়েছে, যাদের হাতে ধরা রয়েছে বাতিদান।

মন্দিরের পশ্চিম দিকে রয়েছে গিরিবালা ঘাট। গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার জন্যে রয়েছে চাঁদনি দালান (মন্দির থেকে গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার রাস্তা)।

তার দু’পাশে, তিনটি তিনটি করে মোট ছ’টি শিবমন্দির রয়েছে – কামেশ্বর, রাজেশ্বর, গোপেশ্বর, তারকেশ্বর, ভুবনেশ্বর ও গিরিশ্বর। প্রতিটি শিব মন্দিরের দরজায় খিলানের ওপর রাধাকৃষ্ণের বিভিন্ন লীলার দৃশ্য নকশা করা রয়েছে। কামেশ্বর মন্দিরে রয়েছে যুগল মিলন, রাজেশ্বর মন্দিরে মথুরানাথ, গোপেশ্বর মন্দিরে রয়েছে গোষ্ঠলীলা, অনন্তশয্যা রয়েছে তারকেশ্বর মন্দিরে, ভুবনেশ্বর মন্দিরে রাই মিলন স্থান পেয়েছে এবং গিরিশ্বর মন্দিরে কালিয়াদমনের দৃশ্য রয়েছে। মন্দিরের পূর্ব দিকের দরজার উপরে যেমন কৃষ্ণের লীলা, তেমন পশ্চিমদিকে রয়েছে নানান দৃশ্য; কৃষ্ণ-বলরাম মূর্তি, রামরাজার মূর্তি, নন্দীর পিঠে হরপার্বতী মূর্তি, সঙ্গে শিঙ্গাবাদক ও শঙ্খবাদক,  শিব ও অন্নপূর্ণার মূর্তি, নন্দীর পিঠে শিব-গণেশজননী ও ইন্দ্রের বাহন ঐরাবতের পিঠে ইন্দ্র-শচি।

 

এছাড়া রয়েছে বিশাল নাটমন্দির, বিরাট বিরাট পিলারের উপর কড়িবর্গার ছাদ। রয়েছে নহবতখানা। দুটি নহবতখানা ছিল, একটি রয়েছে। আরেকটি ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে তৈরি হচ্ছে। 

মূল মন্দিরের পূর্ব দিক বরাবর রয়েছে অজস্র ঘর। একটিতে ভোগ রান্না হয়, রয়েছে অফিস, ভাঁড়ার ঘর, ভক্ত ও সেবকদের জন্যও রয়েছে কিছু ঘর। গিরিবালা দেবীর উত্তরসূরিদের ইচ্ছায় ১৯৮৫ সালের ২৩ জানুয়ারি মহামণ্ডলেশ্বর শ্রী শ্রী শিবানন্দ গিরি মহারাজের তত্ত্বাবধানে হরিদ্বারের ভোলানন্দ সন্ন্যাস আশ্রম এই মন্দিরের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এখন গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি ভোলাগিরি স্নেহনীড় নামেও পরিচিত, মন্দিরের গেটেও তাই লেখা রয়েছে। ১৯৮৫ সাল থেকে এই মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত আছেন শিবানন্দ গিরির শিষ্য তপন কুমার শাহ। তিনিই জানালেন মন্দিরের হালহকিকত। তপনবাবু বললেন, তাঁর গুরু শিবানন্দ গিরিই নিজ উদ্যোগে এই মন্দিরের প্রথম সংস্কার করেন। এখানে এসে শিবানন্দ গিরি দু’বছর বেঁচে ছিলেন। (এখানে বলি, মন্দিরের রাধারানির মূর্তিটি শিবানন্দ প্রতিষ্ঠিত। গিরিবালা প্রতিষ্ঠিত মূর্তিটি চুরি গিয়েছিল। পরে একটি শ্বেত পাথরের মূর্তি পূজিত হত। যা অসাবধানতাবশত ভেঙে যায়, পরে শিবানন্দ গিরি বৃন্দাবন থেকে অষ্টধাতুর রাধারানির মূর্তি গড়িয়ে নিয়ে আসেন।

মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নাটমন্দিরের কারুকার্য বৃন্দাবনকে স্মরণ করায়। লতা, গুল্ম, পাতা দিয়ে বিভিন্ন শিল্পকলার কাজ দেখা যায়। খুব সূক্ষ্ম কাজ। রাধাগোবিন্দ মন্দিরে লক্ষ্য করে দেখবেন, নকশায় চারদিকে বাঁশির ছাপ দেখা যায়। একেদিকে হাঙরের মাথা আর প্রত্যেক দিকে দুটো করে বাঁশির আদল। ভাল করে দেখলেই বুঝবেন। মন্দিরের প্রবেশ পথে দেখবেন, ডানদিকের ফলকে লেখা গিরিবালা দাসীর শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ কুঞ্জ। গিরিবালা ঘাটে দেখবেন পাথর রয়েছে, তাতে লেখা পানিহাটি মোকাম গিরিবালা দাসী। সবাই সেখানে এখন স্নান করে উঠে জল দেন। আমিও দিই। আরও নিদর্শন আছে, এসব দেখে মনে হয় গিরিবালা দাসী বৃন্দাবন ভাব ধারায় প্রভাবিত হয়ে, এখানে নব বৃন্দাবন তৈরি করতে চেয়েছিলেন।”

তপনবাবু জানালেন, “দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরটি অবহেলায় পড়েছিল। তারপর আমার গুরু মহারাজ (শিবানন্দ গিরি) পরবর্তীকালে আমরা সকলে, পানিহাটি পৌরসভার সহযোগিতায় মন্দিরের কাজ হয়েছে। গত চার বছর ধরে ট্রাস্টের এক-দু’জন এগিয়ে এসেছে, তাঁরা ধীরে ধীরে মন্দিরের সংস্কারের কাজ করছেন। চন্দন বিশ্বাস একেবারে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে এ কাজ করছেন। তিনি উচ্চশিক্ষিত, একজন অডিটর। তাঁর নেতৃত্বে, প্রচেষ্টায় কাজ হচ্ছে। তিনি গিরিবালা দেবীর পরিবারের সদস্য। শুনেছি নহবতখানায় সানাই বাজিয়ে মন্দিরে ভগবানের আরাধনা আরম্ভ হত। দ’দিকে দুটি নহবতখানা ছিল। উত্তরদিকেরটি আমফানের সময় ভেঙে পড়ে যায়। একই স্থাপত্যরীতিতে, সেই সময়কার কারুকার্য রেখে, একই আদলে সেটি আবার তৈরি হচ্ছে। গেলেই দেখতে পাবেন, কাজ চলছে।”

তিনি আরও জানালেন, “ধ্বংসের মুখ থেকে জেগে উঠেছে এই মন্দির, ধ্বংস হতে হতে আবার নতুন করে তৈরি হচ্ছে। অনেক ঝড়-ঝাপটা গেছে। প্রবল অর্থকষ্ট, পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুষ্ট ব্যক্তিদের আড্ডাতে পরিণত হয়ে গিয়েছিল গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি। কিন্তু শিবানন্দ গিরি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এক বেলার জন্যেও পুজো বন্ধ হয়নি। ভোলাগিরি আশ্রম কোনও দায়িত্ব পালন করেন না। সেবায়েত বা কোনও ক্ষেত্রেই তারা কোনও রকম সহযোগিতা করে না। এখানে দিনে নিত্যভোগ হয়, অন্নভোগ। দিনে চার-পাঁচবার পুজো হয়। এসব পরিচালনা করা খুব কঠিন। সারাদিন এখানেই থাকি। আমি রিটায়ার্ড লোক।” 

মন্দিরের হাল আমলের জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে গুগলকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন তপনবাবু, বলছেন, “আশপাশের লোক অনেকেই মন্দিরের কথা জানত না। আজ গুগুল, ইন্টারনেটের দয়ায় অনেক লোক আসে। তারা কেউ কেউ এসে ভিডিও করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রচার হচ্ছে, কিছু মানুষ সেই সুবাদে আসে। সোদপুরেই থাকে, এসে বলে এত সুন্দর মন্দির! এখানে আছে, কিছুই জানতাম। আমাদের না আছে অর্থ, না আছে প্রচুর্য, তবু আমরা চলছি। আমার দেখা ১৯৮৫ সাল থেকে, একদিনও পুজো বন্ধ হয়নি। আমি এসে দূরবস্থা দেখেছি। দিন আনে দিন চলে। একশো টাকা করে ভোগের কুপনের ব্যবস্থা আছে। সারা বছর উৎসব হয়, মন্দিরে প্রতিষ্ঠা উৎসব, রথ, রাধাষ্টমী, জন্মাষ্টমী, দোলযাত্রা, স্নানযাত্রা, ঝুলন, রাসযাত্রা, নীলষষ্ঠী, শিবরাত্রি ইত্যাদি পালিত হয়। বড় করে অন্নপূর্ণা পুজো, নাটমন্দিরে প্রতিমা এনে দুর্গা পুজো হয়। অষ্টমীতে, অন্নপূর্ণা পুজোয়, বছরের দু-এক দিনে মানুষকে প্রসাদ খাওয়ানো হয়। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। টাকা পয়সার কোনও ব্যাপার নেই বিনামূল্যেই হয়। তিন-চারজন-পাঁচজন আমরা আছি, সবার অন্য কাজ (ভিন্ন পেশা অর্থে) আছে, সব সময় আসতে পারে না কিন্তু সবাই মিলেই মন্দিরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে আছেন, দিলীপ সরকার, অসিত প্রামানিক, জহর দাশগুপ্ত, আরও কত নাম বলব। অনেকে আছেন। এঁরা সব মন্দিরের শুভাকাঙ্খী।” 

রাজ্যের তরফে মন্দিরের হেরিটেজ সাইট শিরোপা পাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, “শেখর কুমার শেঠ, পানিহাটি নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর প্রচেষ্টাতে এই মন্দির হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। কিন্তু হেরিটেজ পাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত কোনও অর্থ সাহায্য পাইনি। মাঝে মাঝে শুনি, তাঁরা আসবেন এটা করবেন, ওটা করবেন, সেটা করবেন কিন্তু…। ওই ভোলাগিরি আশ্রমের মতোই, ওনাদের আইনমাফিক এটা (গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি) দেওয়া হয়েছিল সেবা করতে, ওনারা সেবা করেন না। অধিকার নিতে আসেন। ওঁরা যখন আসেন, বলেন আমাদের পেপার্স আছে, ডকুমেন্ট আছে ওটাই যথেষ্ট।”  

সরকারি তথ্য বলছে, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রাধাগোবিন্দ কুঞ্জ অর্থাৎ গিরিবালা ঠাকুরবাড়িকে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু মন্দিরের কোথাও আমি তার ফলক দেখিনি, হতে পারে হয়তো আমার চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। দেখলাম নিত্যযাত্রীরা সাইকেল, মোটরবাইক থামিয়ে প্রণাম করে যাচ্ছেন, স্টেশন যাওয়ার পথে, অফিসের পথে সব্বাই প্রণাম ঠুকছেন, গঙ্গা স্নান সেরে এসে মন্দিরে জল দিয়ে প্রণাম সারছেন, ইতিহাসের সন্ধানে জিজ্ঞেস করতে  মিলল না উত্তর। এক ভদ্রলোক বললেন, “আমি কিছু জানি না, অফিসে দেখুন।” মুখে তিনি ভুল উচ্চারণে সংস্কৃত আওড়াচ্ছেন। গিরিবালা ঠাকুরবাড়ির প্রবেশপথে, সুবিশাল ভাঙা দালান দেখলাম। প্রশ্ন করলাম, কেউ কিছু বলতে পারলেন না। সেই ভগ্নস্তুপেও এককালের বর্ধিষ্ণুতার ছাপ স্পষ্ট। শিব মন্দিরের নকশায় কৃষ্ণের লীলা, কেন এল? কোথা থেকে এল? উত্তর নেই। একই পরিবারের তিন প্রজন্মের তিন মহিলা উত্তর চব্বিশ পরগণার গঙ্গা তীরের তিনটি জনপদ বেছে নিলেন, তিনটি মন্দির গড়লেন। সংযোগ সূত্র কেবল শিব। গিরিবালার নব বৃন্দাবন গড়ার ইচ্ছে হল কেন? উত্তর জানা নেই।

ইতিহাস, ঐতিহ্য, অভিনব নকশা-স্থাপত্য নিদর্শন, তাতে ইউরোপীয় তথা পাশ্চাত্য ও এ দেশের নির্মাণশৈলীর মিলন সবাইটাই ঢাকা পড়ে গেল ভক্তি আর ঈশ্বর বিশ্বাসের আড়ালে। যত দিন এগোবে, সংরক্ষণ না করলে হয়তো একটু একটু করে আরও অতলে চলে যাবে ইতিহাস।

কীভাবে যাবেন? 

আগরপাড়া স্টেশনে নেমে, এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের বাইরে থেকে আটোতে গিরিবালা ঘাট।
সড়কপথের ক্ষেত্রে, বিটি রোডের উপর মোল্লার হাট স্টপেজে নেমে হেঁটে বা টোটোতে গিরিবালা ঘাট। ঘাটের পাশেই ঠাকুরবাড়ি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.