প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। শনিবার দিল্লির এইমস হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
গত ৯ অগস্ট সকালে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে এইমসে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কার্ডিওলজি বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল তাঁর। পরদিন ১০ অগস্ট এইমস শেষ বারের মতো মেডিকেল বুলেটিন প্রকাশ করে জানিয়েছিল, শারীরবৃত্তীয় ভাবে উনি স্থিতিশীল রয়েছেন। তার পর আর এইমসের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে বিজেপি নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় জানাচ্ছিলেন, সে দিন থেকেই লাইফ সাপোর্টে তথা ভেন্টিলেশনে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
৯ অগস্ট ছিল শনিবার। আজ ২৪ অগস্ট আর এক শনিবার। টানা পনেরো দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিজেপি তথা সর্বভারতীয় রাজনীতির এই খোশ মেজাজের নেতা।
গত দু’বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন অরুণ জেটলি। গত বছর তিন মাসের জন্য জনসমক্ষে সে ভাবে দেখাই যায়নি তাঁকে। ২০১৮ সালে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়েছিল তাঁর। এ বছরের গোড়ায় চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন আমেরিকায় ছিলেন তিনি। সে সময় অস্থায়ী ভাবে অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে। তিনিই অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও অংশ নেননি অরুণ জেটলি। তখন দেশে ফিরে এলেও শুধু ব্লগ লিখেই বিজেপি-র সম্ভাবনা নিয়ে সওয়াল করে গিয়েছেন। এমনকী কদিন আগে জম্মু কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পক্ষেও জোরদার সওয়াল করেছিলেন এই দুঁদে আইনজীবী।
কয়েকদিন আগেই চলে গিয়েছেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সেই মৃত্যুতে এমনিতেই শোকের আবহ রয়েছে বিজেপিতে। এর মধ্যেই ফের শোকের খবর এল এইমস থেকে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিলেন অরুণ জেটলি আর নেই।
ডাক্তাররা আগেই জানিয়েছেন, কিডনির সমস্যা এখন না থাকলেও জেটলি ‘সফ্ট টিস্যু সার্কোমা’য় আক্রান্ত ছিলেন। এটি একটি ‘রেয়ার ভ্যারাইটি ক্যানসার’। এটিকে অ্যাগ্রেসিভ ক্যানসার বলা হয়। মূলত ফুসফুস এবং লিভারে ছড়িয়ে যায় খুব দ্রুত। লো গ্রেড, ইন্টারমিডিয়েট গ্রেড, হাই গ্রেড এই তিনটি গ্রেড থাকে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। স্বাভাবিক ভাবেই লো-গ্রেড হলে লেস অ্যাগ্রেসিভ হয় , আর হাই হলে ঠিক তার উল্টোটা। সাধারণত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায় এই ক্যানসার। তাই খুব কম সময়েই ফুসফুস এবং লিভারে ছড়াতে পারে এই মারণরোগ।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি করার পরেই চিকিৎসকার দেখেন ফুসফুসে জল জমে গিয়েছে জেটলির। তার পরেই তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। মেডিক্যাল টিমও গঠন করা হয়। কিন্তু একটা সময়ের পরে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।