জয়া এবং বিজয়াকে সঙ্গে নিয়েই লাহা বাড়িতে পূজিত হন লক্ষ্মী

সদ্য শেষ হয়েছে বাঙালিদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। মা উমা মর্ত্য ছেঁড়ে রওনা হয়েছে শিবের ঘর কৈলাশে। সঙ্গে রয়েছে তাঁর সন্তান-সন্ততিরা। রয়েছে, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ। সবাই মিলে কৈলাশের উদ্দেশ্যে রওনা হলেও মর্তে থেকে গিয়েছে মা লক্ষ্মী।

কারন দেবী দুর্গার বিসর্জনের পাঁচদিনের মাথায় বাঙালির ঘরে ঘরে পূজিত হন ধন-সম্পদের দেবী মা লক্ষ্মী। আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো । আর শনিবার থেকেই পুজোর আয়োজনে মেতেছে আমবাঙালি। দুর্গা পুজো নিয়ে বাঙালির মধ্যে যেমন রয়েছে প্রাচীন কাহিনী এবং ইতিহাস। ঠিক তেমনই ধনসম্পদের দেবী হিসাবে লক্ষ্মীকে পুজো করার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অজানা ইতিহাস এবং প্রাচীনত্ব।

আর পাঁচটা বাঙালি বাড়ির মত লক্ষ্মীদেবী আরাধ্য হন বর্ধমান জেলার মেমারির লাহা বাড়িতে। জানা গিয়েছে, বর্ধমানের মেমারির লাহা বাড়ির লক্ষ্মী পুজো প্রায় দুশো বছরের পুরনো। অন্যান্য বাঙালি বাড়ির মত এই বাড়িতেও সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয় মা লক্ষ্মীর পুজো। জানা গিয়েছে, লাহা বাড়িতে মা লক্ষ্মী শুধু একাই পূজিত হননা। তাঁর সঙ্গে পূজিত হয় দেবীর দুই সখী জয়া ও বিজয়া।

জানা গিয়েছে লাহা বাড়ির পূর্বসূরি মাখন লাল লাহার হাত ধরেই এই বংশে পারিবারিক পুজোর সূচনা হয়েছিল। আবার অনেকেই বলেন মাখন লাল লাহা স্বপ্নে দেবী দুর্গাকে পুজো করার আদেশ পেয়েছিলেন। সেই থেকেই আজ পর্যন্ত লাহা বাড়িতে পূজিত হয়ে আসছেন মা দুর্গা। সঙ্গে পূজিত হন মা লক্ষ্মীও।

জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে এই লাহা বাড়ির আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না থাকায় খুব একটা জাঁকজমক করে পুজোর আয়োজন করা হত না।

এমনও শোনা গিয়েছে, লাহা বাড়িতে দুর্গা এবং লক্ষ্মী পুজো করার জন্য পরিবারের সদস্যরা অর্থ উপার্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন। তাঁদের জমানো টাকা দিয়ে প্রথম দিকে পটেই পুজো করা হত। জানা গিয়েছে, মা দুর্গার পুজোর পরে ক্রমে লাহা বাড়ির আর্থিক উন্নতি ঘটে। এরপর বাড়ির উঠানে দুর্গা মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করা হয়। জানা গিয়েছে, ওই মন্দিরের একচালায় পূজিত হন মা উমা এবং অন্যপাশে পুজো করা হয় মা লক্ষ্মীর ।

দুশো বছরের উপাচার এবং পরম্পরা মেনে আজও ধূমধাম করে লক্ষ্মী পূজিত হন মেমারির লাহা বাড়িতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.