২০১৯-এর নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভারত এখন রণক্ষেত্র। ক্ষমতাসীন বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিরোধী দলগুলি অনেক ক্ষেত্রেই সীমা লঙ্ঘন করে দেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থার বিরোধিতা, সেনাবাহিনীর বিরোধিতায় নেমে পড়ছেন। বিরোধী নেতাদের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে চীন পাকিস্তানের মতো দেশ বিশ্বের দরবারে সরাসরি ভারতকে কাঠগড়ায় তুলছে। প্রশ্ন উঠছে বিরোধী দলগুলির রাজনৈতিক বিরোধিতার নামে দেশবিরোধিতা কোনও বিদেশি ষড়যন্ত্রের অঙ্গ নয় তো? নির্বাচনের দামামা বেজে ওঠার আগেই সৈয়দ সুজা নামে আমেরিকা ভিত্তিক একজন স্বঘোষিত ভারতীয় সাইবার এক্সপার্ট কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বালকে পাশে বসিয়ে লন্ডনে প্রেস কনফারেন্স করে অভিযোগ করেন যে ওর কাছে পাকাপোক্ত প্রমাণ আছে যে ২০১৪ সালে ইভিএম হ্যাক করেই নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করা হয়েছিল। বিদেশের মাটিতে বসে করা অভিযোগের ধরন দেখে এটা স্পষ্ট করেই বলা যায় দেশ জুড়ে ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার বাতাবরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই এই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যে-কোনো নির্বাচনের আগে বিভিন্ন মসজিদের মোল্লা মৌলভি ও বিভিন্ন গির্জার ফাদারদের ফতোয়াগুলিতে চোখ রাখলেই ভারতে মুসলমান ও খ্রিস্টান নির্বাচকমণ্ডলীকে প্রভাবিত করার প্রয়াস স্পষ্টতই চোখে পড়বে। এই সমস্ত ফতোয়ার পিছনে আন্তর্জাতিক চার্চ সংগঠন, বিদেশভিত্তিক বিভিন্ন ইসলামিক সংস্থার যোজনাবদ্ধ প্রয়াস এবং বিদেশি অর্থের প্রভাব নেই একথা হলফ করে বলা যাবে না। এদেশের মাওবাদীরা ভোট বয়কট নতুবা ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো দলকে সমর্থন করে থাকে। যেমন মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে সদ্য অনুষ্ঠিত ছত্তিশগড়ের বিধান সভা নির্বাচনে মাওবাদীরা বিজেপিকে পরাজিত করার জন্য গোপনে সরাসরি কংগ্রেসের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিল।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তো প্রকাশ্যেই বলেছে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু হবে। কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য পাকিস্তানের সাহায্য চেয়ে রেখেছেন। পাকিস্তানের মোল্লা মৌলভিরাও ভারতীয় মুসলমানদের নরেন্দ্র মোদীকে পরাজিত করার আবেদন রেখেছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই একটি প্রশ্ন উঠে ভারতের বিরোধী দলগুলির হাতে রাজনৈতিক অস্ত্র তুলে দিতে নির্বাচনের আগে ইচ্ছে করেই পুলওয়ামার সন্ত্রাসবাদী হামলা ঘটানো হয়নি তো? পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে পাকিস্তানের হয়তো বিশ্বাস ছিল পাকিস্তানের ভিতরে আক্রমণ করার সাহস ভারত দেখাবে না। কিন্তু পাকিস্তানের দম্ভ গুড়িয়ে দিয়ে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইকের পর ভারত সরকারের দৃঢ়তা ও বায়ুসেনার পরাক্রম দেখে সমস্ত ভারতকে আত্মবিশ্বাসের আলোতে ঝলমলিয়ে উঠতে দেখে শুধু পাকিস্তান ও পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি নয় ভারতের বিরোধী দলগুলিও ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। পাকিস্তানের দম্ভ গুড়িয়ে দেওয়ার জেরে দেশজুড়ে তৈরি হওয়া উচ্ছ্বাস আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোটে রূপান্তরিত হয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির ভোট বাক্স ভরিয়ে দেবে না তো? সংশয় ছড়িয়ে পড়ে বিরোধী শিবিরে।
এই আশঙ্কা থেকেই প্রমাদ গুনলেন মমতা-রাহুল-অখিলেশ- কেজরিওয়ালদের মতো ভারতের বিরোধী নেতারা। নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণের নামে বায়ুসেনার পরাক্রম নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। ভারত বিরোধী বিদেশি মিডিয়া ও পাকিস্তানের সঙ্গে সুরে সুর মিলিয়ে এয়ার স্ট্রাইকে কতজনের মৃত্যু হয়েছে শুধু তার প্রমাণ চেয়ে থেমে থাকলেন না, নানা প্রসঙ্গ উপস্থাপন করে এটা বোঝানোর চেষ্টা করলেন আসলে পাকিস্তান নয়, নির্বাচনকে সামনে রেখে সমস্ত ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিশ্বের দরবারে কোণঠাসা পাকিস্তান ও ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি ভারতের বিরোধী নেতাদের বক্তব্য হাতিয়ার করে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করলো। চীনের আপত্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘে মাসুদ আজহারকে গ্লোবাল টেরোরিস্ট ঘোষণা আটকে যেতেই উচ্ছ্বসিত বিরোধীরা যেন আবার ফ্রন্ট ফুটে এসে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে শুরু করলেন। রাহুল গান্ধী প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে চীনের বিরুদ্ধে একটি বাক্যও উচ্চারণ না করে বললেন নরেন্দ্র মোদী নাকি চীনের প্রেসিডেন্টকে ভয় পান। এর থেকে স্পষ্ট বিরোধীরা ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য ভারতের স্বার্থ বিরোধী কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের পদক্ষেপকেও স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
উরি হামলা ও তার জেরে হওয়া সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং বালাকোটের হামলা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর থেকে মমতা ব্যানার্জি, রাহুল গান্ধী, দিগ্বিজয় সিংহ, নভোজ্যোত সিংহ সিধু, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অখিলেশ যাদববের মতো অনেক বিরোধী নেতাই এখন পাকিস্তানি মিডিয়ায় হিরো। সমস্ত বিশ্ব সমর্থন জানালেও নির্বাচনের মুখে সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারতের ভূমিকা নিয়ে মোদী সরকারকে হেনস্থা করে যে ভাবে পাকিস্তানের সুবিধে করে দেওয়া হচ্ছে তাতে কিন্তু এই শত্রু দেশটির কলকাঠি নাড়ার সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। খুব সাধারণ যুক্তিতেই বোঝা যায় ভারতের বিরোধী দলগুলির প্রো-পাকিস্তানি অবস্থান দেখে পাকিস্তান লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সরকারকে হেনস্থা করার রসদ জুগিয়ে ভারতের বিরোধী নেতাদের হাত শক্ত করার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করতে চাইবে না। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, বিভিন্ন ধর্মীয় জমায়েত থেকে গুজব ছড়িয়ে বিশেষ করে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের মনে বিজেপি বিরোধী ঘৃণা ও ভয়ের ভাব তৈরি করতে যে পাকিস্তান সক্রিয় ভূমিকা নেবে এই বিষয়েও খুব একটা সন্দেহের অবকাশ নেই।
লাদেনের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার পর কেউ ওসামার লাশ দেখতে চেয়েছে বা প্রমাণ চেয়েছে এমন নজির নেই। পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বিমান হানার পর সমস্ত বিশ্ব ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে একযোগে পাকিস্তানের নিন্দা করেছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা, আত্মরক্ষার অধিকারকে কুর্নিশ জানিয়েছে সমগ্র বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে চরম শিক্ষা দিয়ে ভারতকে ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের কালো ছায়া থেকে মুক্ত করার মতো পরিবেশ যখন নির্মাণ হয়েছে ঠিক সেই সময় কয়েকটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডাকে অবলম্বন করে ভারতের ভিতর থেকেই সমস্ত ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো। কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ পুলওয়ামার ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে উল্লেখ করে এটিকে সন্ত্রাসবাদী হানা বলতেই নারাজ। বিমানবাহিনী বালাকোটের জঙ্গলে বোমা ফেলে গাছ উপড়ে এসেছে এমন কথাও বলছেন বিরোধীরা।
উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের মুক্তির ঘটনাকে ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য না বলে বিরোধীরা পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতা বলে প্রচার করছেন। পাকিস্তানি মিডিয়া ভারতের বিরোধী নেতাদের বক্তব্য ফলাও করে প্রচার করেছে। সন্দেহ নেই ভারতের বিরোধী নেতাদের ভূমিকা ভারতের অবস্থানকে দুর্বল করে পাকিস্তানকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক মহলে অক্সিজেন জুগিয়েছে। ভারতের মধ্যে এই অনৈক্যের বার্তা ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, পাকিস্তান বা চীনের মতো বৈরী দেশগুলিকে ভারত বিরোধী ক্রিয়াকলাপ চালাতে উৎসাহিত করবে, বিপাকে ফেলতে উৎসাহ জোগাবে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠবে যে, ভারতের বিরোধী নেতারা পাকিস্তানের ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডার মাধ্যম হয়ে উঠলেন না তো?
১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর কান্দাহারে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্সের আইসি ৮১৪ বিমানের যাত্রীদের ছাড়ানোর জন্য ভারতে মিছিল মিটিং, প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের সামনে ধরনা প্রদর্শনের ঘটনায় সমস্ত দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সে সময় কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার। বিরোধীরাও মাসুদ আজহার- সহ সমস্ত সন্ত্রাসবাদীদের ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে হলেও যাত্রীদের মুক্তি চাইছিলেন। মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির উপর নিরন্তর চোখ রাখছিল সন্ত্রাসবাদীরা। মিডিয়ায় প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে অজিত দোভাল (বর্তমানে ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার)-কে বলতে শোনা গেছে তিনি যখন যাত্রীদের মুক্ত করার ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করছিলেন সে সময় সন্ত্রাসবাদীরা বারবার এটাই বলছিলেন যে, ‘তোমার দেশের মানুষ সমস্ত দাবি মেনে যাত্রীদের মুক্তির কথা বলছে, কোন অধিকারে এখানে তুমি দরকষাকষি করছ?’ দোভাল আরও জানান যে দেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থা সম্পর্কে ভারতীয় মিডিয়ার তুলে ধরা সমস্ত তথ্য সন্ত্রাসবাদীরা এমন ভাবে উল্লেখ করছিল যে ওদের সঙ্গে কথাবার্তা চালানোই সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল। শ্রী দোভালের এই সাক্ষাৎকার থেকে এটা স্পষ্ট যে সন্ত্রাসবাদ কিংবা চীন পাকিস্তানের মতো দেশের ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডা মোকাবিলার পথে প্রধান সমস্যা ভারতের অন্তঃসার শূন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির ধারক ও বাহক সিংহভাগ ভারতীয় মিডিয়া জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে হলেও ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডা বিস্তারে সাহায্য করে থাকে।
ভারতীয় রাজনীতির চলমান গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে সমগ্র দেশ এমন স্পষ্টতই দুইটি রাজনৈতিক মেরুতে বিভক্ত। একটি হচ্ছে ক্ষুদ্র স্বার্থ কেন্দ্রিক রাজনীতি যাতে সবার উপরে ‘ব্যক্তি কিংবা দল’ সত্য, তার উপরে নাই। আরেকটি ‘বৃহত্তর স্বার্থ’ কেন্দ্রিক রাজনীতি যাতে সবার উপরে ‘দেশ সত্য’ তার উপরে নাই। বিগত পাঁচ বছরে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির সস্তা পথে না হেঁটে দেশের বুনিয়াদি ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার নোট বাতিল, জিএসটি, স্বচ্ছ ভারত, জনধন যোজনা, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, মেক ইন ইন্ডিয়া, স্টার্টআপ ইন্ডিয়া অ্যাকশন প্ল্যানের মতো বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ স্বাধীনতার পর থেকে চলে আসা সস্তা রাজনৈতিক সংস্কৃতির দেশের বুনিয়াদি ব্যবস্থাগুলিকে দুর্বল করে দিয়েছিল। কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েও বৃহত্তর স্বার্থে ভারতবাসী হাসি মুখে এই সমস্ত উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। স্বাধীনোত্তর ভারতে জনমোহিনী রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে এই ধরনের ভোট বিমুখ সিদ্ধান্তের নজির খুব একটা নেই। কিন্তু এই সমস্ত প্রকল্প নিয়ে বিরোধীদের সেই প্রচলিত সস্তা রাজনৈতিক সংস্কৃতিজাত আক্রমণের ভাষা ও ভাব লক্ষণীয়। বিরোধীরা এই সমস্ত কঠোর সিদ্ধান্তের পিছনেও ব্যক্তিস্বার্থ, দলীয় স্বার্থ, ভোটের রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। যেমন, নোট বাতিলের গায়ে ভারতের সবচেয়ে বড়ো দুর্নীতির তকমা দিয়ে দেশবাসীকে এটা বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে যে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষের স্বার্থে এই নোট বাতিল করা হয়েছে। জিএসটিকে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’ বলে কটাক্ষ করে এই নতুন কর ব্যবস্থায় মানুষের প্রাথমিক সমস্যাগুলিকে উস্কে দিয়ে একটি অনাস্থার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই যে দেশের রাজনীতিতে রাজনীতির নামে বিরোধিতার কোনো লক্ষণরেখা নেই, মর্যাদার কোনো সীমারেখা টানা নেই সেই দেশের নির্বাচনে বিদেশি শক্তি অতি সহজেই হস্তক্ষেপ করতে পারে।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলিও যে ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে সেটাও ইতিমধ্যে প্রমাণিত। ২০১৮ সালে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের সময় কেমব্রিজ এনালটিকার মতো বিদেশি কোম্পানি ভারতীয়দের সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য চুরি করে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পক্ষে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগে ভারতীয় রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছিল। উনিশের নির্বাচনে বিদেশি ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে ভারতে ‘বৃহত্তর স্বার্থ কেন্দ্রিক’ রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করার বড়ো সুযোগ উপস্থিত।
এই নির্বাচনকে কোনো দল বিশেষের জয়-পরাজয় হিসেবে না দেখে ভারতীয় রাজনীতির গুণাত্মক পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত। এই সুযোগ ভারতবাসী কতটা কাজে লাগাবে তা দেখার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।
সাধন কুমার পাল