বুমরাহ-ভুবির দাপুটে বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিরাট জয় ভারতের

একেই বোধহয় বলে বিশ্বকাপ। ৫০ ওভারের খেলার ৪৪ ওভার পর্যন্ত খেলা দুলল পেন্ডুলামের মতো। কখনও মনে হচ্ছিল ভারত সহজে জিতে যাবে, তো পরক্ষণেই মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া হয়তো ম্যাচ বের করে দেবে। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে নিজেদের নার্ভ শক্ত রাখতে পারল ভারত। সেইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকে ৩৬ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নিল কোহলি ব্রিগেড।

এ দিন শুরু থেকেই যথেষ্ট ধৈর্য নিয়ে খেলা শুরু করেন ভারতের দুই ওপেনার। ধাওয়ান কিছু শট খেললেও একেবারে ধীরে চলো নীতি নিয়েছিলেন রোহিত। উইকেট হারাননি তাঁরা। প্রথম ১০ ওভার ধরে খেলার পর হাত খুলে খেলা শুরু করেন দুজনে। অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ভূমিকায় এ দিন দেখা গেল ধাওয়ানকে। তুলনায় কিছুটা ধীরে হলেও ভালো খেলছিলেন রোহিত। দু’জনেই নিজেদের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। অবশেষে ব্যক্তিগত ৫৭ রানের মাথায় কুল্টার-নাইলের বলে আউট হয়ে প্যাভিলয়নে ফেরেন রোহিত। কিন্তু নিজের খেলা চালিয়ে যান ধাওয়ান। কোহলির সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়েন তিনি। এ দিন নিজের ১৭ তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ধাওয়ান। শেষ পর্যন্ত ১০৯ বলে ১১৭ করে আউট হন ধাওয়ান। তারপর রানের গতি বাড়াতে নামানো হয় হার্দিক পান্ড্যকে। তিনিও নিজের কাজ করে যান। একদিকে ধরে ছিলেন কোহলি। অন্যদিকে ঝড়ের গতিতে রান করতে থাকেন হার্দিক। ২৭ বলে ৪৮ করে আউট হন তিনি। ধোনিও এ দিন শুরু থেকে ছিলেন আগ্রাসী মেজাজে। তিনি করেন ১৪ বলে ২৭। সেঞ্চুরি না পেলেও ভালো ব্যাট করেন কোহলি। ৭৭ বলে ৮২ করে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ তোলে ভারত।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ধীরে শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ওয়ার্নার ও ফিঞ্চ। প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৩৩ রান হয়। তারপরে কিছুটা রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন দুজনে। কিন্তু ৩৬ রানের মাথায় রানআউট হয়ে যান ফিঞ্চ। ওয়ার্নার ভালো খেললেও ৫৬ রানের মাথায় তাঁকে প্যাভিলিয়নে পাঠান চাহাল।

দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর পার্টনারশিপ গড়েন অভিজ্ঞ স্মিথ ও খোয়াজা। বেশ দ্রুত রান তুলতে থাকেন তাঁরা। মাঝে কিছুটা সময় চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু সেই সময় ফের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন সেই বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর। প্রথমে খোয়াজাকে ৪২ রানের মাথায় বোল্ড করেন বুমরাহ। স্মিথকে ৬৯ রানের পাঠায় ফেরত পাঠান ভুবনেশ্বর। পাঁচে নেমে ঝোড়ো ইনিংস খেলা শুরু করেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু ২৮ করে সেই চাহালের শিকার হন ম্যাক্সওয়েল। স্টোয়নিস শূণ্য রানে ভুবির বলে আউট হন।

তারপর মনে হয়েছিল তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে অজি ইনিংস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খেলা টিকিয়ে রাখেন উইকেট কিপার ক্যারি। অন্যদিকে উইকেট পড়লেও একদিকে তিনি দ্রুত রান তুলছিলেন। কিন্তু তারপরেও তিনি অস্ট্রেলিয়াকে জেতাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৩১৬ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ক্যারি অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে।

ভারতের হয়ে দুই পেসার বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর দুরন্ত বোলিং করেন। দুজনেই ৩টি করে উইকেট নেন। চাহালও ২ উইকেট নেন। এ দিনের জয়ের ফলে ১৯৯৯ সালের পর মাত্র দ্বিতীয়বার রান তাড়া করতে গিয়ে হারতে হলো অস্ট্রেলিয়াকে। অন্যদিকে পরপর দু’ম্যাচ জিতে নিজেদের ১০০ শতাংশ জয়ের ধারা বজায় রাখল ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.