৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বিজ্ঞপ্তি ঘিরে শোরগোল

আগামী বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক কবে থেকে শুরু হবে তা জানতে চূড়ান্ত উদ্বেগে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ২০২১ সালের পরীক্ষার ছাঁটাই সিলেবাস জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কবে পরীক্ষা তা ঘোষণা করেনি। তার ফলেই উদ্বেগ সব মহলে। এসবের মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় পর্ষদের একটি ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam) শুরু। তবে স্কুল শিক্ষাদপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, ওই বিজ্ঞপ্তি পুরোপুরি ভুয়ো। পুলিশের সাইবার শাখা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে।

করোনা সতর্কতায় স্কুল বন্ধ। মাধ্যমিকে সামান্য কিছু ক্লাস হলেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একদিনও পঠন-পাঠন হয়নি। রাজ্য সরকারের দাবি অনলাইন, দুরভাষ, টেলিভিশন ও স্কুলশিক্ষা দপ্তরের পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করা হয়েছে। আগামী বছর দুই মেগা পরীক্ষায় লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার যাতে অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করতে সিলেবাস থেকে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ সিলেবাস কমানো হয়েছে। আগামী বছর মার্চ-এপ্রিল নাগাদ বিধানসভা ভোট হতে পারে। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, ভোট পর্ব শেষ হলে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে জুন মাসকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে পর্ষদ এবং সংসদ। যদিও সরকারিভাবে একজন আধিকারিকও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পর্ষদ ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে মাধ্যমিকে ভৌত বিজ্ঞান জৈব রসায়ন, ধাতুবিদ্যা এবং অজৈব রসায়নের কিছু অংশ পরীক্ষায় আসবে না। জীবন বিজ্ঞানে অভিব্যক্তি ও অভিযোজন এবং পরিবেশ অধ্যায় সম্পূর্ণ বাদ। ইতিহাসের ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম অধ্যায় সম্পূর্ণ বাদ। ভূগোলে বাদ পড়েছে প্রাকৃতিক ভূগোলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গণিতের সিলেবাসে ত্রিকোণমিতি অংশ পরীক্ষায় থাকবে না। ইংরেজিতেও বাদ গিয়েছে বেশ কিছু অংশ। শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, “সিলেবাস কমানোর ফলে ছাত্রছাত্রীরা অজানা অংশ শেখার সুযোগ পাবে না। আখেরে পড়ুয়াদের লাভের থেকে ক্ষতি বেশি হবে। প্রশ্নের ব্লু প্রিন্ট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উৎকণ্ঠা বাড়তেই থাকবে।”

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা (HS Exam) সংসদও বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ফ্রেঞ্চ থেকে পার্সি, সব বিষয়ের সিলেবাসে কাঁচি চালিয়েছে। বদল করা হয়েছে রসায়নের সিলেবাস। বাংলা (ক) থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’৷ ভাষা সাহিত্য থেকে বাদ ‘শব্দার্থ তত্ত্ব, ‘আমার বাংলা’ ও ‘কলের কলকাতা’৷ শিল্প ও সংস্কৃতি থেকে বাদ ‘বাংলা গানের ধারা’ অধ্যায়৷ বাংলা (খ) থেকে বাদ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা ও দ্বিতীয় পর্ব তৃতীয় অধ্যায়ের রূপতত্ত্ব। ইংরেজি থেকে দুটি চ্যাপ্টার বাদ। রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ পড়েছে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বৈদেশিক নীতি ও রাষ্ট্রসংঘ। রসায়ন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু অধ্যায়। পদার্থবিদ্যা থেকে বাদ ইলেকট্রো ম্যাগনেটিভ ওয়েভ, অ্যাটম এবং নিউক্লিয়াস, কমিউনিকেশন সিস্টেম, অল্টারনেটিভ কারেন্ট। শিক্ষামহলের একটি অংশের বক্তব্য, সিলেবাস কমিয়ে দেওয়া হলে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে পিছিয়ে পড়তে পারে রাজ্যের পড়ুয়ারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.