গঙ্গা দূষণ বৃদ্ধিতে পশ্চিমবঙ্গে আকাল ইলিশের, লাভের গুড় পাচ্ছে বাংলাদেশ

গঙ্গা মোহনায় ইলিশের দেখা মিলছে না। হা-হুতাশ করছেন মৎস্যজীবীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, গঙ্গায় দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ইলিশ। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের অভিমুখ এখন বাংলাদেশের পদ্মা পাড়ে।

সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ট অফ ড্যাম রিভার অ্যান্ড পিপলস এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্টে গঙ্গায় ইলিশের দেখা না পাওয়ার কারণ হিসেবে দূষণকেই বেশি মাত্রায় দায়ী করা হয়েছে। তাদের রিপোর্টে উঠে এসেছে, গঙ্গা থেকে অচিরেই উধাও হয়ে হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে নদীর পাড় বরাবর গড়ে ওঠা একশোটিরও বেশি পুরসভার ময়লা আবর্জনা ও কলকারখানার বর্জ্যে গঙ্গায় দূষণের মাত্রা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে। তাঁদের মতে, ডিম সংরক্ষিত রাখার জন্য ইলিশের মিষ্টি জলের প্রয়োজন হয়। সেইজন্যই তারা গঙ্গায় আসে। কিন্তু দূষণের ফলে গঙ্গায় লবণের মাত্রা অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণেই ইলিশ এখন গঙ্গার মোহনায় এসেও ফিরে যাচ্ছে।

অন্যদিকে গঙ্গা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে ইলিশের অভিমুখ এখন বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশের পদ্মা পাড়ে এখন জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। বাংলাদেশের মৎস্য বিভাগের এক পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত ২ বছরের তুলনায় বাংলাদেশে ১৯ শতাংশ ইলিশ বেশি ধরা পড়েছে। শুধু পদ্মাপাড়েই নয়, মায়ানমার উপকূলেও এখন প্রচুর ইলিশের দেখা মিলছে। বাংলাদেশের মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘‌পদ্মা পার বরাবর ভারী শিল্প, কলকারখানা তেমন গড়ে ওঠেনি। তাই এখনও পদ্মার মোহনা ইলিশের কাছে ব্রাত্য হয়ে ওঠেনি।’‌ তবে গঙ্গার দূষণ বাড়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। তাঁদের এখন মাথা চাপড়ানো ছাড়া কোনও উপায় নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.