বুধবার সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত ভয়াবহ তাণ্ডবের সাক্ষী রইল এ রাজ্য। সুপার সাইক্লোন আমফানের প্রকোপে তনছন হয়ে গেল কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ-সহ আরও জেলা। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ১০-১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হল আমফানে? জেলাগুলির বর্তমানে পরিস্থিতিই বা কী? সেই সমস্ত জানতে আজ বিকেলে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে থাকবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এদিনই তা নিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেবেন মুখ্যসচিব। তার জন্য জেলাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু গাছ ভেঙে পড়ায় ও জল জমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বহু জায়গায়। ফলে জেলার সঙ্গে যোগাযোগ কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করতে অন্তত ২-৩ দিন সময় লাগবে। তবে আজ একটি প্রাথমিক ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করা হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তী দিনে কীভাবে কাজ হবে, পরিস্থিতি কীভাবে স্বাভাবিক করা সম্ভব, ইত্যাদি আলোচনা হবে বৈঠকে। কোন কোন জেলায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন, যাঁদের বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের কোথায় রাখা যাবে, ইত্যাদি সমস্ত কিছু নিয়েই হবে আলোচনা।
গতকালই মমতার গলায় শোনা গিয়েছিল আক্ষেপের সুর। বলেছিলেন, অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। এমন সংকটের দিনে রাজনীতি ভুলে কেন্দ্রকে পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধও জানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, করোনার মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতোই এই আমফান। সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। অন্তত ১০-১২ দিন লাগবে সবকিছু ঠিক করতে। তাই বিলম্ব না করে এদিনই বৈঠকে বসছেন তিনি।
এদিকে আমফানে বাংলার যা ক্ষতি হয়েছে, তাতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বাংলায় টুইট করেন তিনি। লেখেন, “আমফানের প্রকোপে যে প্রাণহানি ঘটেছে বা সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে তার জন্যে আমি মর্মাহত। আমি গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত বিভিন্ন এজেন্সির সাথে সম্পর্ক রেখে চলেছিলাম। তাদের দায়িত্ববোধ ফলে ন্যুনতম ক্ষতি হয়েছে। তবু এটি একটি বিনাশকারী ছাপ রেখে গেছে যা বহু দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। এখন প্রত্যেককে সর্বব্যাপী ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।” যদিও তাঁর ‘ন্যূনতম ক্ষতি’ শব্দটি ব্যবহারে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আমফানের প্রকোপে যে প্রাণহানি ঘটেছে বা সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে তার জন্যে আমি মর্মাহত । আমি গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত বিভিন্ন এজেন্সির সাথে সম্পর্ক রেখে চলেছিলাম। তাদের দায়িত্ববোধ ফলে ন্যুনতম ক্ষতি হয়েছে। (1/2) pic.twitter.com/99vYqP2OXh
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 21, 2020
তবু এটি একটি বিনাশকারী ছাপ রেখে গেছে যা বহু দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। এখন প্রত্যেককে সর্বব্যাপী ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।(2/2)
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 21, 2020