বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাকে পাখির চোখ করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে রাজ্যের সংগঠনে কিছু রদবদল করেছে বিজেপি। সাংগঠনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বুধবার দু-দিনের সফরে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় এসে রাজারহাটের একটি হোটেলে থাকবেন অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে ও শুক্রবার কলকাতার ইজেডসিসি-তে সাংগঠনিক বৈঠক করার কথা শাহর।
বাঁকুড়ার বৈঠকে থাকবেন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান, মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলির দলীয় নেতৃত্ব। পাশাপাশি, কলকাতার বৈঠকে থাকবেন নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, ৬ তারিখ সকালে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাবেন অমিত শাহ। একটি উদ্বাস্তু পরিবারের বাড়িতে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করারও কথা রয়েছে অমিত শাহর। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাঁকুড়া এবং কলকাতায় সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মত বিনিময়ের ব্যবস্থা করছে বিজেপি। প্রতিটি বৈঠকে শ’দুয়েক মানুষ আসার কথা।
বাঁকুড়ায় সম্প্রদায় এবং কলকাতায় পেশাভিত্তিক ভাবে ওই বৈঠকে ডাকা হবে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানান, বাঁকুড়ায় মূলত জনজাতিদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের বৈঠকে ডাকা হচ্ছে।
কলকাতার বৈঠকে থাকবেন তাঁতি, রিকশাচালক, অটোচালক থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেহনতী মানুষ। দলীয় সূত্রের খবর, সমাজের প্রান্তিক অংশের সঙ্গে সারা বছর যোগাযোগ রাখার জন্য একটি কমিটিও তৈরি করেছে বিজেপি।
তার দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। এছাড়াও, সমাজের বিশিষ্ট জনদেরও ডাকা হচ্ছে।
সোমবার বিকেলে প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত শাহর সভায় এদিন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ জানান তাঁরা।
সাংগঠনিক প্রস্তুতি দেখতে পুজোর আগেই উত্তরবঙ্গে আসার কথা ছিল অমিত শাহের। তখন ঠিক ছিল, পুজোর পরে রাজ্যে আসবেন জেপি নড্ডা। কিন্তু, অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পুজোর আগে অমিত শাহ আসতে পারেননি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর জায়গায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বাংলায় আসেন।
উল্লেখ্য, অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেও জে পি নড্ডার আগে তিনিই ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সেই সময় থেকেই পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনের উপর তাঁর বিশেষ নজর ছিল।
রাজ্যে দলের সংগঠন সাজানো এবং লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির আশাতীত ফলের পেছনে তাঁর ভূমিকা আছে বলে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় সংগঠন গোছাতে ময়দানে নেমে পড়েছেন অমিত শাহ।