বড়সড় সাফল্য মুম্বই পুলিশের, পটনা থেকে গ্রেফতার ডি-কোম্পানির গ্যাংস্টার ইজাজ লাকড়াওয়ালা

দীর্ঘ দুদশক ধরে ফেরার থাকার পর অবশেষে বিহারের পটনা থেকে গ্রেফতার এককালের মুম্বই আণ্ডারওয়ার্ল্ডের কুখ্যাত গ্যাংস্টার ইজাজ লকড়াওয়ালা। প্রথমে ডি-কোম্পানি তারপর দাউদের বিরোধী গ্যাং ছোটা রাজনের সঙ্গে কাজ করা এই ইজাজ দীর্ঘ দুদশক ধরে ছিল ফেরার। তার বিরুদ্ধে ইণ্টারপোলও রেড কর্নার নোটিশও জারি করেছিল বলে খবর । মঙ্গলবার মুম্বই পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার সন্তোষ রস্তোগী সাংবাদিকদের জানান, ইজাজ ডি-কোম্পানির একজন সক্রিয় সদস্য ছিল পূর্বে। ইজাজের মাধ্যমে দাউদের ব্যপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি আরো বলেন।

ইজাজের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, গায়ের জোর খাটিয়ে টাকা আদায় এবং খুনের চেষ্টার ৮০ টিরও বেশি অপরাধের ঘটনার উপর ভিত্তি করে ২৫ টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। গতমাসের ২৮ তারিখ মুম্বইয়ের ছত্রপতী শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইজাজের মেয়ে শিফা শহীদ শেখকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। তার বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ ছিল ।

পুলিশ জানতে পারে সে নেপাল পালিয়ে যাওয়ার জন্য ফ্লাইটের অপেক্ষা করছিল। তার কাছে থেকেই পুলিশ খবর পায় যে ইজাজ উত্তর ভারত বা নেপালের কোথাও লুকিয়ে আছে। সেই সূত্র ধরেই পটনাতে অভিযান চালায় মুম্বই পুসিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। আর তারপরই পুলিশের জালে ফেঁসে যায় এককালের মুম্বই আণ্ডারওয়ার্ল্ড দাপিয়ে বেড়ানো ডি-কোম্পানি ও ছোটা রাজন গ্যাংয়ের কুখ্যাত এই অপরাধী। পুলিশ তাকে এসপ্ল্যানেড কোর্টে তুলেছে বলে খবর জানুয়ারির ২১ তারিখ অবধি তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখা হবে।

লকড়াওয়ালা আশির দশকে ডি-কোম্পানিতে যোগদানের মাধ্যমে তার অপরাধ জগতে যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘদিন কাজ করার পর ১৯৯২ তে মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পর ডি-কোম্পানি ভেঙে গেলে রাইভাল গ্যাং ছোটা রাজনের সঙ্গে চলে যায় সে। ২০০১ সালে ছোটা রাজনের সঙ্গে আর্থিক বচসার কারণে ফের সেই গ্যাং ছেড়ে নিজে স্বাধীনভাবে কাজ করতে শুরু করে ।

২০০২ সালে দাউদের নির্দেশে ছোটা শাকিলের নেতৃত্বে ব্যাঙ্ককে তার উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়। প্রায় ৭ টি বুলেটের ক্ষত তৈরি হয় সেই হামলায়। পরে একবার করাচীতে দাউদের উপরেও সে হামলার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু কোনো অজানা কারণে তা ভেস্তে যায়। ইজাজের গতিবিধি ছিল বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণায়। ব্যাঙ্কক, লণ্ডন, কানাডাসহ একাধিক জায়গায় তার মালিকানায় প্রচুর সম্পত্তি আছে বলে পুলিশের অনুমান। তবে ইজাজের মাধ্যমে দাউদ ইব্রাহিমের কাছে পৌঁছনো যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।

ছবি সৌজন্য: টুইটার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.