চাকরির নামে তোলাবাজির লিখিত অভিযোগ দায়ের হতেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা তৃণমূল ব্লক সভাপতির। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের। ঘটনার পর থেকেই গঙ্গারামপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তপনের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অনাদি লাহিড়ী। শনিবার এই ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো হইচই পড়েছে গোটা জেলাতেই। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ব্যাখ্যা করে প্রকৃত তোলাবাজদের নাম সামনে আনার দাবি জানালো বিজেপি। চক্রান্তের শিকার অনাদি লাহিড়ী বলল তৃণমূল।
সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি করে দেওয়ার নাম করে টাকা তুলে নিচ্ছেন তপনের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অনাদি লাহিড়ী। অভিষেক ব্যানার্জির নব জোয়ার কর্মসূচির ঠিক একদিন আগে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। যদিও এই ঘটনা নিয়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই নিতে দেখা যায়নি দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। যাকে ঘিরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় দলের কর্মীদের একাংশের মধ্যেও।
এরই মাঝে শুক্রবার রাতে ওই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অনাদি লাহিড়ীর বিরুদ্ধে তপন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আনোয়ার সরকার নামে ওই ব্লকের আজমতপুর এলাকার এক বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল ব্লক সভাপতি অনাদি লাহিড়ী তার ছেলে রিয়াজুদ্দিন সরকারকে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি করে দেওয়ার নাম করে নগদ আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছে। যে টাকা ফেরত দিতে প্রথমে গড়িমসি করছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। শুধু তাই নয়, এরপর তাকে হুমকিও দেন ওই তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ। যার পরেই বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়ে ওই তৃণমূল নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আনোয়ার সরকার নামে ওই ব্যক্তি।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনার পরেই নিজের বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা অনাদি লাহিড়ী। যে ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। বর্তমানে গঙ্গারামপুর মহাকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তৃণমূল নেতা অনাদি লাহিড়ী। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে চাননি ওই তৃণমূল নেতা ও তার পরিবারের লোকেরা।
যদিও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, বিজেপির আইটি সেলের পক্ষ থেকে অনাদি লাহিড়ীর ওই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায়
ভাইরাল করা হয়েছে। চক্রান্তের শিকার তিনি। শুক্রবার রাতে ওই ঘটনা নিয়ে একটি অভিযোগ হবার পরেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করবার চেষ্টা করেছেন তিনি। তিনি এখনো দলের পদে রয়েছেন, তার পাশে সব সময় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
জেলা বিজেপি নেতা বাপি সরকার বলেন, তৃণমূল ব্লক সভাপতি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করবার চেষ্টার যে ঘটনা তিনি শুনেছেন তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি নিজে থেকে এ টাকা তোলেননি। দলের যার নির্দেশে তিনি টাকা তুলেছিলেন তা সকলের সামনে আনা উচিত অনাদি বাবুর। এই দুর্নীতির যাবতীয় তথ্য সামনে আনলে তার নিজের ও পরিবারের সম্মান বাঁচবে। আত্মহত্যার মতো পথও আর তার বেছে নিতে হবে না।