বিপ্লবীদের দ্রোণাচার্য হেমচন্দ্র দাসকানুনগো

বিপ্লবীদের দ্রোণাচার্য হেমচন্দ্র দাসকানুনগো আজকের দিনে মহাপ্রয়াণ লাভ করেন। ১৮৯১ সালের ৪ আগস্ট পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০২ সালে ঋষি অরবিন্দের কাছে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষা নেন। ১৯০৬ সালে পৈত্রিক সম্পত্তি বন্ধক দিয়ে সেই অর্থে উন্নতমানের বোমা বানাতে প্যারিস যাত্রা করেন। ১৯০৮ সালে দেশে ফিরে তিনি প্রথম যে ‘বই বোমাটি’ বানিয়েছিলেন সেটি কিংসফোর্ডকে পার্সেল করা হয়েছিল তাকে হত্যা করার জন্য। কিন্তু কিংসফোর্ড পার্সেলটি খোলেননি। তাই সে যাত্রা তিনি বেঁচে যান। দ্বিতীয় বোমাটি সেই কিংসফোর্ডকে মারার জন্যই ক্ষুদিরাম আর প্রফুল্ল চাকিকে দিয়ে মুর্শিদাবাদ পাঠানো হয়েছিল। ধরা পড়ে ক্ষুদিরামের ফাঁসি হয় আর প্রফুল্ল চাকি আত্মহত্যা করেন। সেই কেসে ক্ষুদিরামের স্বীকরোক্তি নিয়ে পুলিশ ঋষি অরবিন্দসহ ৪০ জন বিপ্লবী গ্রেপ্তার হন। দেশবন্ধুর চেষ্টায় ঋষি অরবিন্দ ছাড়া পেলেও হেমচন্দ্রের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর হয় এবং তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তিনিই একমাত্র বিপ্লবী যাঁর কাছ থেকে পুলিশ কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারেনি। ১৯২০ সালে তাঁকে ভারতীয় জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯২১ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ১৯৫১ সালের ৮ এপ্রিল মেদিনীপুর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাষ ত্যাগ করেন। দুঃখের হলেও সত্যি যে এই সর্বস্বত্যাগী মানুষেরা যে স্বাধীনতা এনেছিলেন তার ফসল আজ সবার কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.