বিদেশী কোম্পানি ভারতের সংস্কৃতি, অর্থনীতির ও সাধারণ মানুষের স্বাধীনতার জন্য কতটা বিপদজনক সেটা ইতিহাসের পাতা খুললেই বোঝা যায়। ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া নামক এক কোম্পানি ব্যাবসা কোর্টের এসে ধীরে ধীরে কিভাবে দেশকে গোলাম বানিয়েছিল তা সকলের জানা। বর্তমানেও ভারতে এমন কিছু বিদেশী কোম্পানি এসে ব্যাবসা করছে যারা ভারতকে পুনরায় গোলাম করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তবে ভারতীয় সমাজ ব্যাপক উদারবাদী হওয়ার কারণে বিদেশী কোম্পানীগুলোর ষড়যন্ত্র বুঝে উঠতে পারে না। জানিয়ে দি, আজকে ভারতে কৃষকদের যে দুর্দশা সেটার জন্য বেশিরভাগ দায়ী বিদেশী কোম্পানি।
বিদেশী কোম্পানিগুলো কিভাবে ভারতীয় কৃষকদের মেরে ফেলেছে সেই বিষয়ে আমরা আলাদা করে একটা রিপোর্ট প্রকাশ করবো। তবে গুজরাটে ভারতীয় কৃষক বনাম আমেরিকান কোম্পানি pepsiCo এর যে মামলা সামনে এসেছিল সেখান থেকে একটা সুখবর সামনে আসছে। প্রথমত জানিয়ে দি, pepsiCo একটা আমেরিকান কোম্পানি যা মূলত ভারতীয়দের মূর্খ বানিয়ে ব্যাবসা ভারতে ব্যাবসা চালায় বলে দাবি করা হয়। pepsiCo কোম্পানি ভারতে কোল্ড ড্রিংকস, চিপস সহ নানা প্রোডাক্ট বিক্রি করে।
পেপসি, কোকা-কোলা জাতীয় কোল্ড ড্রিংকস তৈরি করতে খুবই কম পয়সা খরচ হয়। কিন্তু অনেক বেশি মূল্যে বিক্রি করে ভারত থেকে টাকা লুটে আমেরিকা নিয়ে যায় এই সমস্থ কোম্পানি। সবথেকে ভয়ানক ব্যাপার এই যে, এই কোল্ড ড্রিংকসগুলিতে সোডিয়াম মনো গ্লুটামিন ব্যাপক পরিমানে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে সোডিয়াম মনো গ্লুটামিন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এছাড়াও কোল্ড ড্রিংকসের মধ্যে পটাশিয়াম সরবেট, ব্রোমিনেটেড ভেজিটেবল অয়েল, মিথাইল বেঞ্জিন, মেথিল বেঞ্জয়েট, এন্ড সালফান মেশানো হয়। এই প্রত্যেকটি একটা একটা বিষ বলে পরিচিত।ক্যান্সার ও কিডনি খারাপ হওয়ার জন্য এই সমস্ত বিষ যথেষ্ট। কিন্তু ভারতের মতো দেশে আমেরিকার এই কোম্পানিগুলি ব্যাপক হারে মুনাফা কমিয়ে চলছে। কারণ ভারতের অভিনেতা,অভিনেত্রী, খেলোয়াড়রা টাকার লোভে এই বিষাক্ত কোল্ডড্রিংকস এর প্রমোট করে।
যাইহোক pepsiCo কোম্পানি ভারতে নান প্রোডাক্ট বিক্রির সাথে সাথে লেজ নামক এক ধরনের পটেটো চিপস বিক্রি করে। এই চিপস এক বিশেষ ধরনের আলু fc-5 থেকে তৈরী হয়। pepsiCo কোম্পানি এই আলুর বীজ তাদের সাথে চুক্তিরত কৃষকদের দিয়ে চাষ করায়। এখন গুজরাট থেকে একটা মামলা সামনে এসেছিল যেখানে pepsiCo কোম্পানি ৪ কৃষক সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল fc-5 আলু চাষের জন্য। pepsiCo কোম্পানি জানিয়েছিল যে তাদের সাথে চুক্তি থাকা কৃষক ছাড়া আর কেউ এই আলুর চাষ করতে পারবে না। এই অভিযোগে pepsiCo কৃষকদের থেকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছিল।
এখানে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, pepsiCo যতই নিজের চুক্তির দাবি তুলুক না কেন। আসলে ওই বিদেশী কোম্পানি ভারতীয় কৃষকদের স্বাধীনতার উপর হামলা করেছিল। এর মধ্যে কৃষকদের উপর ১ কোটি করে ক্ষতিপূরণের চাপ দেওয়া আরো একটা অন্যায়। যা নিয়ে দেশের রাষ্ট্রবাদী সমাজ প্রতিবাদ দেখায়। দেশজুড়ে এই বিদেশী প্রোডাক্টকে বয়কট করার ঝড় ওঠে। দালাল মিডিয়া ঘটনা নিয়ে নিশ্চুপ থাকলেও দেশের রাষ্ট্রবাদীরা সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে pepsiCo নামক বিদেশী কোম্পানির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে। যারপর ভারত সরকার সক্রিয় হয়ে মামলায় হস্তক্ষেপ করে।
ভারত সরকারের সাথে pepsiCo বৈঠকের পর জানায় যে তারা কৃষকদের উপর দেওয়া মামলা তুলে নেবে। কোনো শর্ত ছাড়াই মামলা তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছে pepsiCo নামক কোম্পানি। রাষ্ট্রবাদীদের ও সরকারের চাপে মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে ওই কোম্পানী। ভারতের অভিনেতা,অভিনেত্রী ও খেলোয়াড়রা টাকার লোভে ব্যাপকহারে টিভিতে বিদেশী কোম্পানিগুলোর প্রোডাক্ট প্রমোট করে। ফলস্বরূপ, ভারতীয় যুবসমাজ মূর্খের মতো বিদেশী বিষাক্ত পদার্থ ক্রয় করে। একইসাথে ভারতের অর্থ বিদেশী পাঠায়।